Bristol University Study on COVID 19: খোলা বাতাসে ২০ মিনিট থাকলেই ৯০ শতাংশ সংক্রমণ ক্ষমতা হারায় করোনা

TV9 Bangla Digital | Edited By: Soumya Saha

Jan 12, 2022 | 1:21 AM

Spread of Coronavirus: করোনা খোলা বাতাসে ২০ মিনিট থাকার পরেই শক্তি প্রায় হারিয়ে ফেলে। ২০ মিনিট বাতাসে থাকলে করোনা ভাইরাস মানবদেহে সংক্রমণের ক্ষমতা প্রায় ৯০ শতাংশ হারিয়ে ফেলে।

Bristol University Study on COVID 19: খোলা বাতাসে ২০ মিনিট থাকলেই ৯০ শতাংশ সংক্রমণ ক্ষমতা হারায় করোনা
করোনাকে ভয় নয়, সতর্ক থাকুন (প্রতীকী ছবি)

Follow Us

ব্রিস্টল: করোনার সংক্রমণ (Spread of COVID 19) হু হু করে বাড়ছে ভারত সহ বিশ্বের একাধিক দেশে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বার বার বলছেন, করোনাকে ভয় না পাওয়ার জন্য। বরং, করোনা থেকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। মাস্ক পরা আর শারীরিক দূরত্ববিধি বজায় রাখার উপর জোর দিচ্ছেন। আর এরই মধ্যে প্রকাশ্যে এসেছে ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের (Bristol University Study) এক গবেষণা। যেখানে বলা হচ্ছে, করোনা খোলা বাতাসে ২০ মিনিট থাকার পরেই শক্তি প্রায় হারিয়ে ফেলে। দেখা যাচ্ছে, ২০ মিনিট বাতাসে থাকলে করোনা ভাইরাস মানবদেহে সংক্রমণের ক্ষমতা প্রায় ৯০ শতাংশ হারিয়ে ফেলে। আর তার বেশিরভাগটাই হারায় প্রথম পাঁচ মিনিটের মধ্যে।

স্বল্প পরিসরের মধ্যে সংক্রমণের সম্ভাবনা বেশি

অর্থাৎ, এই গবেষণা থেকে ইঙ্গিত মিলছে, তুলনামূলকভাবে স্বল্প পরিসরের মধ্যেই করোনার সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভাবনা বেশি। আর এই গবেষণা আবারও সেই একই দিকে অঙ্গুলিনির্দেশ করছে – করোনার বিরুদ্ধে লড়াই অস্ত্র – মাস্ক এবং শারীরিক দূরত্ববিধি। ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই গবেষণা থেকে বোঝা যাচ্ছে, কেন শারীরিক দূরত্ব এবং মাস্ক পরা সংক্রমণ প্রতিরোধের দিক থেকে সবথেকে কার্যকর উপায় হতে পারে। বায়ু চলাচলের জায়গা রাখাটা এখনও কার্যকর, তবে সংক্রমণ মোকাবিলায় অনেকটাই কম প্রভাব ফেলতে পারে। অন্তত এই গবেষণার প্রাথমিক তথ্য থেকে তেমনটাই ইঙ্গিত মিলছে।

ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যারোসল রিসার্চ সেন্টারের ডিরেক্টর এবং এই গবেষক দলের প্রধান লেখক অধ্যাপক জোনাথন রিডের মতে, “আমরা দেখেছি অনেক ক্ষেত্রেই সাধারণ মানুষ করোনা মোকাবিলায় বদ্ধ, বা খুব সামান্য বায়ু চলাচলের জায়গার দিকে ঝুঁকছে। তাঁরা মনে করছেন কয়েক মিটার দূর থেকে বা এক ঘর থেকে অন্য ঘরে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। আমি বলছি না যে এমন একেবারেই ঘটবে না… তবে আমি মনে করি আপনি যখন আক্রান্ত ব্যক্তির কাছাকাছি থাকেন তখনও ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি।”

জোনাথন রিড আরও বলেন, “আপনি যখন আরও দূরে সরে যাচ্ছেন, তখন শুধু অ্যারোসলই কম হয় না, সঙ্গে ভাইরাসটিও কম সংক্রামক হয়ে পড়ে। কারণ ভাইরাসটি তার সংক্রমণ ক্ষমতা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে ফেলেছে।”

কী বলছে ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা

কোনও ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বায়ুবাহিত ড্রপলেটে করোনা ভাইরাস কতক্ষণ বাঁচতে পারে, সেই সম্পর্কিত তথ্যের জন্য এর আগে গোল্ডবার্গ ড্রাম নামক সিল করা ভেসেলে ভাইরাস স্প্রে করে দেখেছিলেন। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে, মার্কিন গবেষকরা দেখেছেন যে তিন ঘন্টা পরেও সংক্রামক ভাইরাস শনাক্ত করা যেতে পারে। তবে এই জাতীয় পরীক্ষাগুলি সঠিকভাবে দেখাতে পারে না আমরা কাশি বা শ্বাস নিই তখন কী ঘটে।

সেই কারণে, ব্রিস্টল ইউনিভার্সিটির গবেষকরা এমন যন্ত্র তৈরি করেছেন যা তাদের যে কোনও ক্ষুদ্র, ভাইরাসযুক্ত কণাকে নিয়ন্ত্রিত তাপমাত্রা, আর্দ্রতা এবং অতিবেগুনি রশ্মি সহ অন্যান্য প্রাকৃতিক পরিবেশে পাঁচ সেকেন্ড থেকে ২০ মিনিটের পর্যন্ত দুটি বৈদ্যুতিক রিংয়ের মধ্যে ভাসিয়ে রাখতে পারে। গবেষক দলের প্রধান রিডের কথায় “এই প্রথম যে কেউ নিঃশ্বাস ত্যাগের সময় অ্যারোসলের সঙ্গে কী ঘটে তা অনুকরণ করা সম্ভব হয়েছে।”

কেন সংক্রমণ ক্ষমতা হারায় করোনা

এই গবেষণাটি অবশ্য এখনও পিয়র রিভিউ করা বাকি রয়েছে। তবে গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে ভাইরাল কণাগুলি ফুসফুসের তুলনামূলকভাবে আর্দ্র এবং কার্বন ডাই অক্সাইড-সমৃদ্ধ জায়গা ছেড়ে বেরোতেই, তারা দ্রুত জলীয় ভাব হারিয়ে এবং শুকিয়ে যায়। সেই সঙ্গে পিএইচ দ্রুত বাড়তে থাকে এবং কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রাও অনেকটা কমে যায়। মূলত, এই দুটি কারণেই ভাইরাস মানবদেহের কোষকে সংক্রমিত করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। তবে ভাইরাল কণাগুলি কত দ্রুত শুকাবে, তা আশেপাশের বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা অনুসারে পরিবর্তিত হয়।

যখন বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ৫০ শতাংশের কম ছিল – অনেকটা বিভিন্ন অফিসগুলিতে তুলনামূলক শুষ্ক বাতাসের মতো – সে ক্ষেত্রে ভাইরাসটি ১০ ​​সেকেন্ডের মধ্যে তার অর্ধেক সংক্রমণ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছিল। তারপরে বাকি ৫০ শতাংশ সংক্রমণ ক্ষমতা হারানোর প্রক্রিয়াটা বেশ ধীর ছিল। আবার আপেক্ষিক আর্দ্রতা ৯০ শতাংশ যখন ছিল – অনেকটা বাষ্প বা স্নানঘরের বাতাসের মতো – সে ক্ষেত্রে সংক্রমণ ক্ষমতা হারানোর প্রক্রিয়া আরও ধীরে ধীরে হয়েছিল। পাঁচ মিনিট পরেও ৫২ শতাংশ সংক্রমণ ক্ষমতা ছিল ভাইরাল কণাটির। ২০ মিনিট পরে গিয়ে তা আরও ১০ শতাংশ কমেছিল।

তবে এ ক্ষেত্রে বাতাসের তাপমাত্রা ভাইরাসের সংক্রমণ ক্ষমতার উপর কোনও প্রভাব ফেলেনি। উল্লেখ্য, মানুষের মধ্যে একটি বহুল প্রচলিত বিশ্বাস রয়েছে যে তুলনামূলক উষ্ণ আবহাওয়ায় ভাইরাসের সংক্রমণ ক্ষমতা কমে যায়। কিন্তু ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় বাতাসের তাপমাত্রা পরিবর্তনে ভাইরাসের এমন কোনও চারিত্রিক বদল দেখা যায়নি।

আরও পড়ুন : Omicron in China: ওমিক্রনের উপস্থিতির খবর পেয়েই একের পর এক শহরে লকডাউন চিনে

Next Article