নিউ ইয়র্ক : অতিমারির শুরু থেকে বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশ লড়াই করে চলেছে এক অদৃশ্য শত্রুর সঙ্গে। কখনও কম, কখনও বেশি, তবে সংক্রমণ পিছু ছাড়ছে না কখনই। আমেরিকা, ব্রিটেনের মতো উন্নততর দেশও করোনার কোপে কার্যত বিপর্যস্ত। আর নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের জেরে এসে হাজির হয়েছে সংক্রমণে নতুন ঢেউ। শুধু ভারত নয়, বিশ্বের প্রায় সব দেশেই স্বাস্থ্য পরিষেবা বিপর্যস্ত। সোমবার আমেরিকায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ১০ লক্ষ ১৩ হাজার মানুষ। বিশ্বের আর কোনও দেশ একদিনে এত মানুষকে আক্রান্ত হতে দেখেনি। ফ্রান্সের হাসপাতালে আর জায়গা পাচ্ছেন না মানুষ।
এর আগে ১০ লক্ষ ৩ হাজার মানুষের একদিনে আক্রান্ত হওয়ার রেকর্ড ছিল আমেরিকায়। এবার ছাপিয়ে গেল গত ৩ জানুয়ারির সেই রেকর্ড। একদিনে আক্রান্ত হল ১০ লক্ষ ১৩ হাজার মানুষ। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আক্রান্তের সংখ্যাতেও রেকর্ড বৃদ্ধি। বর্তমানে মার্কিন মুলুকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১ লক্ষ ৩৫ হাজার ৫০০ জন। গত বছরের জানুয়ারিতে ১ লক্ষ ৩২ হাজার করোনা আক্রান্ত একসঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এবার সেই সংখ্যাটা আরও বেড়ে গিয়েছে।
স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যা এতটাই কমে গিয়েছে যে, সে দেশে করোনা আক্রান্ত নার্স বা স্বাস্থ্যকর্মীদের কাজে উপসর্গ না থাকলে বা মৃদু উপসর্গ থাকলে কাজে যোগ দিতে বলা হয়েছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আক্রান্তের সংখ্যা সে দেশে একধাক্কায় অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। ৭৬৭ থেকে সেই সংখ্যা লাফ দিয়ে পৌঁছেছে ২২ হাজার ৭৪৯-এ। ফ্রান্সের স্বাস্থ্যমন্ত্রী অলিভিয়ার ভেরান জানিয়েছেন, ওমিক্রন ভ্য়ারিয়েন্টে যদিও মৃদু উপসর্গ দেখা দিচ্ছে, তবে আক্রান্তের সংখ্যা এতটাই বেশি যে, হাসপাতালে ভিড় ক্রমণ বেড়েই চলেছে।
তবে গত বছরের নভেম্বর ও ডিসেম্বরে হাসপাতালে আরও বেশি আক্রান্তকে ভর্তি হতে দেখা গিয়েছিল। ১৬ নভেম্বর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন ৩৩ হাজার ৪৯৭ জন।
সংক্রমণের ধাক্কা সামলাতে একগুচ্ছ নতুন বিধি জারি হয়েছে ইটালিতে। বিশেষত এখনও যাঁরা ভ্যাকসিন নেননি, তাঁদের ক্ষেত্রে এই বিধি প্রযোজ্য হবে। সরকারের তরফে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, দূরপাল্লার ট্রেনে বা বাসে উঠতে গেলে, হোটেলে বা রেস্তোরাঁয় প্রবেশ করতে গেলে, ট্রেড ফেয়ারে প্রবেশ করতে গেলে হয় টিকাকরণের সার্টিফিকেট দেখাতে হবে অথবা সদ্য করোনা মুক্ত হওয়ার প্রমাণ দেখাতে হবে। এ ছাড়া পঞ্চাশোর্ধ্ব প্রত্যেককে ভ্য়াকসিন নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। না নিলে ১০০ ইউরো জরিমানা দিতে হবে।
এ ভাবেই প্রত্যকটি দেশ নিজেদোর মতো করে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। ভারতেও প্রবেশ করেছে ওমিক্রন। যদিও মৃদু উপসর্গ দেখা যাচ্ছে, তবে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন : Covid Bulletine: নমুনা পরীক্ষা বাড়তেই লাফ সংক্রমণে! রাজ্যে ২৪ ঘণ্টায় ২১ হাজারের বেশি করোনা আক্রান্ত