বেজিং : করোনা অতিমারি শুরুর পর থেকে সবচেয়ে ভয়ানক কোভিড ঢেউ আছড়ে পড়েছে চিনের উপর। চিনের ‘জ়িরো কোভিড’ নীতির চাপে পিষে যাচ্ছে সাংহাই। করোনা নির্মূল করতে সাংহাইকে রীতিমতো ভুতুড়ে নগরীতে পরিণত করেছে চিন। সংক্রমণ ঠেকাতে কঠোর লকডাউন জারি রয়েছে এই শহরে। এই আবহে কঠোর লকডাউনের তৃতীয় দিনে নাভিশ্বাস উঠেছে সাংহাইবাসীর। বিভিন্ন রিপোর্ট অনুযায়ী, খাবার ও ওষুধের মতো মৌলিক সামগ্রীর জন্য হাহাকার দেখা দিয়েছে সাংহাইবাসীদের মধ্যে।
শনিবার নতুন করে ২৩ হাজার ৬০০ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে সাংহাইতে। এরই মাঝে বাধ্যতামূলক করোনা পরীক্ষা জারি রেখেছে প্রশাসন। এই পরিস্থিতিতে সাংহাইবাসীদের অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিযোগ করেছে যে শহরে মৌলিক সুযোগ সুবিধা মিলছে না। বিভিন্ন রিপোর্ট অনুযায়ী, সাংহাইয়ের লক্ষ লক্ষ লোক খাবার সংগ্রহের জন্য লড়াই করছে, বয়স্করা ওষুধ পাচ্ছেন না। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন ছোট ছোট দাঙ্গার ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে সাংহাইয়ের অনেক পরিবারই সরকারি খাদ্য সরবরাহের উপর নির্ভর করে আছে। যদিও অভিযোগ উঠেছে, সরকারের তরফে যে খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হচ্ছে তা অপর্যাপ্ত।
এদিকে শহরে সংক্রমণ মোকাবিলার ক্ষেত্রে ঘাটতির কথা স্বীকার করেছেন সাংহাইয়ের ভাইস মেয়র। অপরদিকে শুক্রবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট একটি ভ্রমণ সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করে বলেছে যে, সাংহাইতে অবস্থিত মার্কিন কনসুলেটের ‘নন-ইমারজেন্সি’ কর্মী এবং তাদের পরিবারকে শহর ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে এই হাহাকারের মাঝে সাংহাইয়ের প্রশাসন নাকি আশ্বস্ত করেছে যে শীঘ্রই শহরে জারি থাকা কঠোর নিষেধাজ্ঞা ধাপে ধাপে প্রত্যাহার করা হবে। বলা হয়েছে, যেসব এলাকায় ১৪ দিনের মধ্যে নতুন করে কেউ কোভিড সংক্রমিত না হলে, সেখান থেকে লকডাউন প্রত্যাহার করা হবে। আরও এক রাউন্ড কোভিড পরীক্ষার পর এই সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ মার্চ থেকে সাংহাইতে লকডাউন জারি রয়েছে। প্রথমে এলাকাভিত্তিকভাবে এই লকডাউন জারি করা হয়েছিল। তবে ২.৬ কোটি বাসিন্দার এই শহরে গত তিন ধরে পূর্ণ লকডাউন জারি রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে গত তিনদিন ধরে খাদ্য ও ওষুধের জন্য মানুষের মধ্যে হাহাকার বেড়েছে। শাংহাইতে জারি লকডাউন এতটাই কঠোর যে এক বিল্ডিংয়ের মধ্যে কোনও বাসিন্দাকে অন্য কারোর ঘরে যাওয়ার অনুমতিও নাকি দেওয়া হচ্ছে না। অপরদিকে শাংহাইয়ে ক্রমবর্ধমান করোনা সংক্রমণের মাঝেই গুয়াংঝাউ শহরের সব বাসিন্দাদের কোভিড পরীক্ষার তোড়জোড় শুরু করেছে প্রশাসন। শুক্রবার এই শহরে দুই জন করোনা রোগীর খোঁজ মেলার পরই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।
আরও পড়ুন : Imran Khan : আস্থা ভোট এড়াতে মোক্ষম চাল, ‘সুপার ওভারে’ শেষ চেষ্টা ইমরানের দলের