মস্কো: ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার যুদ্ধ নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ সঙ্গী এবং রাশিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেব। চড়া গলায় নিউক্লিয়ার যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিলেন ন্যাটো শিবিরকে। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, “পরমাণু শক্তিধরের পরাজয় বিশ্বকে নিউক্লিয়ার যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে।” ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ছিলেন মেদভেদেব। বর্তমানে তিনি পুতিনের শক্তিশালী সিকিউরিটি কাউন্সিলের ডেপুটি চেয়ারম্যান। ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে রাশিয়া হারলে তার পরিণতি নিউক্লিয়ার যুদ্ধ হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি তাঁর। গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনে হামলা চালায় রাশিয়া। রুশ সেনার তীব্র আক্রমণে শুরুতে দিশেহারা হয়ে পড়ে ইউক্রেন। ন্যাটোয় অন্তর্ভুক্তি নিয়ে এই দ্বন্দ্বের সূত্রপাত পূর্ব ইউরোপের দুই দেশের। কিন্তু সরাসরি যুদ্ধে ইউক্রেনের পক্ষ না নিলেও ন্যাটো বাহিনী বিশেষত আমেরিকা প্রচুর যুদ্ধাস্ত্র সরবরাহ করেছে ইউক্রেনকে। এই সব যুদ্ধাস্ত্রে ভর করেই রাশিয়ার সেনাকে বেগ দিতে সমর্থ হয়েছে ইউক্রেন। সে রকম পরিস্থিতিতে পুতিন ঘনিষ্ঠের হুমকি চিন্তা বাড়াতে পারে পশ্চিমী দুনিয়ার।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবারই ইউক্রেন প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ট উপদেষ্টা একটি টুইট করেন। সেখানে তিনি পশ্চিমী দুনিয়ার কাছে আবেদন করেন, “পুতিনকে ভয় পাওয়ার সময় শেষ হয়েছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসেছে।” পুতিনের হুমকি অগ্রাহ্য করে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে অত্যাধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম পাঠানোর জন্য পশ্চিমী দুনিয়ার কাছে আবেদন করেছে ইউক্রেন। ব্রিটেন বৃহস্পতিবারই জানিয়েছে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইউক্রেনকে ৬০০ ব্রিমস্টোন মিসাইল দিয়ে সাহায্য করবে তারা। অন্য দিকে ডেনমার্ক জানিয়েছে, ফ্রান্সে তৈরি ১৯টি সিজার হাউথজার আর্টিলারি সিস্টেম তারা দেবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়া ইউক্রেনকে। এমনকি ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধান চার্লস মাইকেল সম্প্রতি ঘুরে এসেছেন ইউক্রেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত ওই দেশ দেখে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধানের মনে হয়েছে, ইউক্রেনে যুদ্ধের ট্যাঙ্ক পাঠানো উচিত।
এই পরিস্থিতিতেই পুতিন ঘনিষ্ঠ রুশ পদাধিকারীর থেকে এল পরমাণু যুদ্ধের হুঁশিয়ারি। পশ্চিমী দুনিয়া সমরাস্ত্রের সাহায্য ইউক্রেনকে দিলে রাশিয়ার পক্ষে লড়াই চালানো যে খুব একটা সহজ হবে না, তা গত কয়েক মাসে টের পেয়েছে রাশিয়া। সে জন্যই কী আগেভাগে পরমাণু যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিয়ে ন্যাটো অন্তর্ভুক্ত দেশগুলিকে ইউক্রেন-রাশিয়া বিবাদ থেকে সরিয়ে রাখার চেষ্টা চালাচ্ছে রাশিয়া? মেদভেদেবের হুঁশিয়ারি ঘিরে সেই জল্পনা জোরদার হয়েছে।