Netherlands: নিতম্বে হঠাৎ দেখেছিলেন একটা কালো পিণ্ড, তারপর মহিলার যা হল…

TV9 Bangla Digital | Edited By: অমর্ত্য লাহিড়ী

Dec 12, 2023 | 3:09 AM

Netherlands: ফ্লু অত্যন্ত সাধারণ বিষয়। তাই সেই সব উপসর্গকে পাত্তা দেননি তিনি। কিন্তু, দ্রুত তাঁর অসুস্থতা বাড়ছিল। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা দেখেছিলেন, তাঁর বাম নিতম্বে একটি বড় কালো পিণ্ড।

Netherlands: নিতম্বে হঠাৎ দেখেছিলেন একটা কালো পিণ্ড, তারপর মহিলার যা হল...
এখনও একটানা বেশিক্ষণ বসে থাকতে পারেন না ট্রেসি
Image Credit source: Instagram

Follow Us

আমস্টারডাম: আদতে স্কটল্যান্ডের বাসিন্দা হলেও, দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে নেদারল্যান্ডসেই থাকেন ট্রেসি ডি জং এগলিন। ৫৯ বছর বয়সী মহিলা দুই সন্তানের মা। চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি তিনি প্রথম তাঁর শরীরে ফ্লু-এর মতো উপসর্গ অনুভব করেছিলেন। ফ্লু অত্যন্ত সাধারণ বিষয়। তাই সেই সব উপসর্গকে পাত্তা দেননি তিনি। কিন্তু, দ্রুত তাঁর অসুস্থতা বাড়ছিল। ট্রেসির স্বামী অ্যালড্রিক জানিয়েছেন, হঠাৎ করেই তাঁর স্ত্রী অত্যাধিক ঘামতে শুরু করেছিলেন। তাঁর হাঁটাচলা করতে সমস্যা দেখা দিয়েছিল। এরপর, একদিন সেপটিক শক শুরু হয় এবং সংজ্ঞা হারান ট্রেসি। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা দেখেছিলেন, তাঁর বাম নিতম্বে একটি বড় কালো পিণ্ড! আর তা দেখেই তাঁরা ট্রেসির আত্মীয়দের জানিয়ে দিয়েছিলেন, তাঁর বাঁচার সম্ভাবনা অত্যন্ত কম।

কী হয়েছিল ট্রেসির? নেদারল্যান্ডসের গেল্ডারল্যান্ড ভ্যালি হাসপাতালে তাঁকে নিয়ে গিয়েছিলেন অ্যালড্রিক। ওই কালো পিণ্ড দেখে চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, তাঁর ‘নেক্রোটাইজিং ফ্যাসাইটিস’ হয়েছে। এটি একটি বিরল অথচ মারাত্মক ব্যাকটেরিয়া-জনিত সংক্রমণ। মাংস খেয়ে ফেলে ব্যাকটেরিয়ারা। এই রোগ অত্যন্ত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং শরীরের নরম কলাগুলিকে নষ্ট করে দেয়। ট্রেসির পরিবারকে তাঁরা জানিয়েছিলেন, সংক্রামিত কলা এবং পেশী অপসারণের জন্য তিন-তিনটি অস্ত্রোপচার করতে হবে। তা সহ্য করে তাঁর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা মাত্র ১০ শতাংশ।

তাঁর পরিবার, ট্রেসির মৃত্যুর জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছিল। ট্রেসি যে তিনটি অস্ত্রোপচারের ধকল নিতে পারবে, তা তাঁর পরিবারের কেউ তারা ভাবতেই পারেনি। অস্ত্রোপচারের পর, ট্রেসির বাম নিতম্বে একটি ২০ সেন্টিমিটার গভীর ক্ষত তৈরি হয়। শেষ অস্ত্রোপচারের পর নয় দিন তিনি কোমায় ছিলেন। জ্ঞান আসার পর শুরু হয়েছিল হ্যালুসিনেশন। তিনি নিজেকে ১৯ বছরের যুবতী বলে মনে করতেন। ভাবতেন, তিনি কোনও পাঁচতারা হোটেলে আছেন। ভুলে গিয়েছিলেন ডাচ ভাষা।

হাসপাতালে ছয় সপ্তাহ কাটানোর পর, ট্রেসিকে পাঠানো হয়েছিল একটি পুনর্বাসন কেন্দ্রে। সেখানে বহু সপ্তাহ ধরে তাঁকে স্পিচ থেরাপি, ফিজিওথেরাপি এবং সাইকোথেরাপি দেওয়া হয়। ট্রেসি জানিয়েছেন, এই রোগ তাঁর জীবন চিরতরে বদলে দিয়েছে। অস্ত্রোপচারের পর তিনি সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছিলেন। তাঁকে সব কিছু নতুন করে শুরু করতে হয়েছিল। খুব দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন, কণ্ঠস্বর বদলে গিয়েছিল। নতুন করে হাঁটা শিখতে হয়েছিল। তবে, শারীরিক বেদনার থেকেও বেশি কষ্টকর ছিল মানসিক সংগ্রাম। এখনও, তিনি একটানা বেশিক্ষণ বসে থাকতে পারেন না। যেখানেই যান, সঙ্গে করে তাঁকে একটি বিশেষ বালিশ নিয়ে যেতে হয়।

কীভাবে ট্রেসির এই রোগ হল? কারণ এখনও অজানা। চিকিত্সকরা বলেছেন, চুল বা কোনও খুসকুড়ির মতো সাধারণ কিছু থেকে এই সংক্রমণ হয়ে থাকতে পারে। এই অবস্থায় ট্রেসি বলছেন, ফ্লু-এর উপসর্গ দেখা দিলেও তাকে হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। চিকিত্সকদের পরামর্শ নেওয়া উচিত। তবে, এই সবের মধ্যে একটাই ভাল বিষয় ঘটেছে। ট্রেসির মতে, এই রোগ পরিবারের বাকিদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক আরও ভাল করে তুলেছে। স্বামীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা এতটাই বেড়েছে, যে যেন তাঁরা ফের প্রেমে পড়েছেন।

Next Article