লন্ডন: বিশ্ব-রাজনীতির ইতিহাসে সম্ভবত এত বড় ‘কামব্যাক’ আর দেখা যায়নি। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার ৭ বছর পর ফের ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের কার্যালয়ে ফিরলেন প্রাক্তন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। সোমবার (১৩ নভেম্বর), তাঁকে পরবর্তী ব্রিটিশ বিদেশমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করলেন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক। এদিন মন্ত্রিসভায় বেশ কিছু রদবদল করেন সুনক। সেই সময়ই পরবর্তী বিদেশমন্ত্রী হিসেবে ডেভিড ক্যানেরনের নাম ঘোষণা করেন তিনি।
তবে, ডেভিড ক্যামেরন বর্তমানে ব্রিটিশ সংসদের নির্বাচিত সদস্য নন। তাই মন্ত্রী হিসেবে তাঁকে নিয়োগ করার জন্য তাঁকে হাউস অব লর্ডসের আসন দেওয়া হয়েছে। এদিন ঋষি সুনকের কার্যালয় থেকে জানানো হয়, ডেভিড ক্যামেরনকে ব্রিটেনের উচ্চকক্ষ, হাউস অব লর্ডসে একটি আসন দেওয়ার অনুমোদন দিয়েছেন রাজা চার্লস। এর ফলে তাঁর মন্ত্রী হিসাবে সরকারে যোগ দেওয়ার বিষয়ে কোনও বাধা নেই।
এদিন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েলা ব্র্যাভারম্যানকে বরখাস্ত করেন ঋষি সুনক। সম্প্রতি লন্ডনে প্যালেস্তাইনপন্থীদের মিছিলে পুলিশি অত্যাচারের সমালোচনা করেছিলেন এই ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ মন্ত্রী। সেই কারণেই তাঁকে সরিয়ে দিলেন সুনক, এটা না বললেও স্পষ্ট। সুনকের কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে ‘ভাল পারফর্ম না করা’র জন্যই তাঁকে অপসারণ করা হয়েছে।
তবে, ব্র্যাভারম্যানকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য বিরোধী সাংসদদের তো বটেই, তাঁর নিজের দল, কনজারভেটিভ পার্টির সদস্যদেরও সমালোচনার মুখে পড়েছেন ঋষি সুনক। সুয়েলা ব্র্যাভারম্যানকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে তাঁর জায়গায় বিদেশমন্ত্রী জেমস ক্লিভারলিকে নিয়ে এসেছেন সুনত। ফলে, বিদেশমন্ত্রীর পদটি ফাঁকা হয়েছিল। সেই জায়গাতেই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে আনলেন সুনক।
সুনাকের মন্ত্রিসভায় ক্যামেরনের প্রবেশের ফলে, জল্পনা শুরু করেছে, ক্যামেরন কি ফের প্রধানমন্ত্রীর পদেও ফিরবেন? ব্রিটেনে কোনও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর, বিদেশমন্ত্রী হিসেবে ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে ফেরাটা একেবারেই অস্বাভাবিক এবং অপ্রত্যাশিত। ব্রেক্সিট গণভোটে হেরে ২০১৬ সালে পদত্যাগ করেছিলেন ডেভিড ক্যামেরন। ২০১০ থেকে তিনি ওই পদে ছিলেন। সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে এসে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর সাত বছরের স্মৃতিকথা লিখেছেন। বিভিন্ন ব্যবসায় নিজেকে যুক্ত করেছেন। তবে, ২০২০ সাল থেকেই কনজারভেটিভ পার্টির শীর্ষস্থানীয় মন্ত্রীরা তাঁর সঙ্গে বারবার যোগাযোগ রেখে চলছিলেন।