প্যারিস: বিশ্বজুড়ে যখন প্রথম ছড়িয়ে পড়েছিল করোনা সংক্রমণ (COVID-19), সেই সময় রোগীর চাপে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়ছিল ফ্রান্সে (France)। বছর ঘুরে ফের একবার উদ্বেগ বাড়ছে ফ্রান্সে, দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা পার করেছে ১ লক্ষের গণ্ডি। সে দেশের স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ফ্রান্সে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১ লক্ষ ৪ হাজার ৬১১ জন।
ফ্রান্সের স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, বিগত তিনদিন ধরেই দেশে সংক্রমণ নতুন রেকর্ড গড়ছে। শনিবার তা লাখের গণ্ডি পার করে গিয়েছে। আগামিকাল, সোমবারই দেশের প্রেসিডেন্ট ইম্যানুুয়েল ম্যাক্রঁ (Emmanuel Macron) সরকারের শীর্ষকর্তাদের নিয়ে নিয়ে বাঠকে বসবেন। সেই বৈঠকে নতুন কী কী করোনাবিধি আরোপ করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এরই মাঝে সংক্রমণের এই গতিতে উদ্বেগ বাড়ছে। করোনার পাশাপাশি নতুন চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট।
শুক্রবারই ফ্রান্সের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের তরফে বুস্টার ডোজ় নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, প্রাথমিক দুই ডোজ়ের টিকা নেওয়ার তিন মাস পর বুস্টার ডোজ় নেওয়া যাবে। এতদিন সরকারের তরফে টিকাপ্রাপ্তদের যে হেলথ পাস দেওয়া হত, তা এবার থেকে কেবলমাত্র বুস্টার ডোজ় প্রাপ্তদেরই দেওয়া হবে। সরকার ইতিমধ্যেঅ এই কাজ শুরু করেছে। উল্লেখ্য, এই পাস ব্যবহার করেই দেশের অন্দরে রেস্তরাঁ, ক্যাফেতে বসার অনুমতি মেলে, সেরকমই আন্তর্জাতিক ভ্রমণের ক্ষেত্রেও এই পাস ব্যবহার হয়।
সংক্রমণ রুখতে ইতিমধ্যেই ফ্রান্সের একাধিক অঞ্চলে আলাদাভাবে স্বাস্থ্যবিধি জারি করা হয়েছে। ইটালির পাশেই অবস্থিত স্যাভোও-তে সর্বত্র মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ফ্রান্সের স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, চলতি মাসের শুরু থেকেই সংক্রমণ উর্ধ্বমুখী। এতদিন সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে থাকলেও গত ৪ ডিসেম্বর প্রথম রেকর্ড ভেঙে একদিনে ৫০ হাজার আক্রান্তের খোঁজ মেলে। ফ্রান্সে এখনও অবধি মোট ১ লক্ষ ২২ হাজার ৫৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনা সংক্রমণের কারণে। আগামিদিনেও আক্রান্তের সংখ্যা এভাবেই বাড়তে থাকলে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উপর চাপ সৃষ্টি হবে এবং বিনা চিকিৎসায় মানুষের মৃত্যুও হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে স্বস্তির খবর হল, ফ্রান্সের মোট জনসংখ্যার ৭৬.৫ শতাংশ জনগণই সম্পূর্ণ টিকাপ্রাপ্ত।