আইসল্যান্ড: যেকোনও টিকারই কমবেশি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকেই, কিন্তু তা বড় আকার ধারণ করলেই বিপদ। আর এই বিপদের আশঙ্কাতেই একের পর এক দেশে বন্ধ করা হচ্ছে মডার্না(Moderna)-র করোনা টিকার প্রয়োগ। শুক্রবার থেকে আইসল্যান্ড(Iceland)-এও স্থগিত করা হল মর্ডানার টিকা প্রয়োগ(Moderna Vaccine)। জানা গিয়েছে, এই টিকা নেওয়ার পর একাধিক ব্য়ক্তির মধ্যে হৃৎপিণ্ডে প্রদাহ (Heart Inflammation) বা জ্বালা শুরু হওয়াতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নর্ডিক অঞ্চলের এই দেশে আপাতত ফািজ়ারের করোনা টিকা দিয়েই টিকাকরণ চালানো হবে বলে জানানো হয়েছে। আইসল্যান্ডের প্রতিবেশী দেশগুলিতেও একই সমস্যা দেখা দেওয়ায় সেই দেশগুলিতেও মডার্নার করোনা টিকা ব্যবহার সীমিত করা হয়েছে। তবে এক ধাপ এগিয়ে আইসল্যান্ড মর্ডানার টিকা ব্যবহার বন্ধ রাখারই সিদ্ধান্ত নিল।
শুক্রবারই আইসল্যান্ডের স্বাস্থ্য দফতরের ওয়েবসাইটে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়, “দেশের জনগণকে টিকা দেওয়ার জন্য মজুত রাখা ফাইজ়ারের করোনা টিকাই যথেষ্ট। দেশের প্রধান মহামারী বিশেষজ্ঞ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আপাতত আইসল্যান্ডে মডার্নার করোনা টিকা ব্য়বহার করা হবে না।”
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, মডার্নার করোনা টিকা নেওয়ার পরই একাধিক ব্যক্তির মধ্য়ে মায়োকার্ডিটিস ও পেরিকার্ডিটিসের সমস্যা দেখা গিয়েছে। ফাইজ়ার-বায়োএনটেকের টিকা ব্যবহার করেও একই সমস্যা দেখা গিয়েছে, তবে তা তুলনামূলকভাবে অনেকটাই কম। সেই কারণেই আপাতত মডার্নার টিকা ব্যবহার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিগত দুই মাস ধরেই আইসল্যান্ড সরকার অতিরিক্ত বা বুস্টার ডোজ় হিসাবে মডার্নার টিকা ব্য়বহার করছিল। আইসল্যান্ডের অধিকাংশ বাসিন্দাই আমেরিকার জনসন অ্যান্ড জনসন সংস্থার তৈরি একক ডোজ়ের ভ্যাকসিন জ্য়ানসেন পেয়েছেন। তবে করোনার নতুন ও অভিযোজিত রূপ থেকে বাঁচতেই বৃদ্ধ ও কম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের অতিরিক্ত করোনা টিকা দেওয়া হচ্ছিল।
মডার্নার টিকা প্রয়োগ বাতিল করা হলেও এর প্রভাব টিকাকরণ কর্মসূচিতে পড়বে না বলেই জানিয়েছে আইসল্যান্ড সরকার। ৩ লক্ষ ৭০ হাজার বাসিন্দার এই ছোট্ট দেশের ১২ বছরের উর্ধ্বের ৮৮ শতাংশ বাসিন্দাই ইতিমধ্যে করোনা টিকা পেয়েছেন।
বৃহস্পতিবার থেকেই সুইডেন ও ফিলন্যান্ডেও ৩০ বছরের কম বয়সীদের জন্য মডার্নার টিকা প্রয়োগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সেখানেও মায়োকার্ডিয়াম অর্থাৎ হৃৎপিণ্ডের পেশি ও পেরিকাকার্ডিয়াম অর্থাৎ যে পর্দা দিয়ে হৎপিণ্ড ঢাকা থাকে, তাতে প্রদাহের একাধিক ঘটনার খোঁজ মিলতেই টিকা প্রয়োগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ডেনমার্ক ও নরওয়েতেও ১৮ বছরের কমবয়সীদের উপর এই টিকা প্রয়োগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
সুইডেন কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই প্রদাহ দেখা দিলেও তা চিকিৎসা ছাড়াই আপনাআপনি কমে যাচ্ছে। তবে সুরক্ষার জন্য কোনও প্রকার উপসর্গ দেখা দিলেই চিকিৎসকদের পরামর্শ নিতে বলা হয়েছে।