কাবুল: বিশ্বের দরবারে নরমে-গরমে বার্তা তালিবানের। এবং সে বার্তা সরাসরি আমেরিকার উদ্দেশে। শনিবার সাংবাদিক সম্মেলনে তালিবান স্পষ্ট জানায়, তাদের সরকারকে আমেরিকা স্বীকৃতি না দিলে আফগানিস্তান তো বটেই গোটা বিশ্ব ক্ষতির মুখে পড়বে। এ দিন শুধু আমেরিকা নয় সব দেশকেই এই বার্তা দিয়ে সাহায্যের আর্জি জানায় তালিবান।
এখনও পর্যন্ত কোনও দেশই সরকারিভাবে স্বীকৃতি দেয়নি তালিবানকে। রাশিয়া, পাকিস্তান, চিন পরোক্ষভাবে তালিবান সরকারকে সমর্থন জানালেও ‘বড় দাদা’ আমেরিকা কী করে, তার নজর বেশি তালিবানের। কারণ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন না পেলে আটকে রয়েছে বিপুল অর্থের অনুদান। অগস্টের পর থেকেই এ সব অনুদান বন্ধ হয়ে যায়। পাকিস্তানের মতো দুই একটি দেশ বাদে কারোর থেকে সেভাবে আর্থিক বা অন্যান্য সাহায্য (হিউম্যানটেরিয়ান) মেলেনি।
এই মুহূর্তে ব্যাপক আর্থিক সঙ্কটের মুখে আফগানিস্তান। মূল্যবৃদ্ধি আকাশছোঁয়া দাঁড়িয়েছে। দুর্ভিক্ষের মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতি হাড়েহাড়ে বুঝতে পেরে স্বীকৃতি পেতে মরিয়া তালিবান। এ দিন তালিবান সরকারের মুখপাত্র জ়াবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, “আমেরিকার কাছে আমাদের বার্তা তাদেরকে স্বীকৃতি দিতে যত দেরি হবে আফগানিস্তান তো বটেই বিশ্বও সমস্যার মুখে পড়বে।” এই মুহূর্তে যে কোনও সমঝোতার পথে হাঁটতে রাজি বলে ইঙ্গিত দিয়েছে তালিবান। তাদের দাবি, প্রয়োজনে রাজনৈতিক সমঝোতার পথেও হাঁটতে পারে।
গত ১৫ অগস্ট কাবুল দখল করে আফগানিস্তানের মসনদে বসে তালিবান। পূর্ব অভিজ্ঞতা ভিত্তিতে বহু মানুষ ভীত হয়েই দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন জায়গা থেকে হিংসার খবর মিলেছে। বিশেষ করে মহিলাদের উপর তালিবানি ফতোয়া আরও উদ্বেগ তৈরি করেছে। যে কারণে বিশ্বের অধিকাংশ দেশের সমর্থন আদায় করতে পারেনি তালিবান। যদিও প্রথম দিন থেকেই তালিবান দাবি করেছে, প্রগতীশীল রাষ্ট্র গড়ার পথে হাঁটবে তাদের সরকার। মহিলাদের নিরাপত্তা এবং মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখা হবে। যদিও বাস্তবে কোনওটাই প্রতিফলিত হয়নি।
সম্প্রতি, ভারত-সহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বৈঠক করেছে তালিবান। গত শনিবার কাবুলে তুরস্কর বিদেশমন্ত্রী রসিত মেরেদোর সঙ্গে বৈঠক হয়। আলোচনা হয় তুর্কমেনিস্তান-আফগানিস্তান-পাকিস্তান-ভারত (TAPI) গ্যাস পাইপলাইন দ্রুত কাজ সম্পন্ন করার বিষয়ে। গত সপ্তাহে কাতারে চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তালিব কর্তারা। তাদের দাবি, চিন সব ধরনের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। পাকিস্তানের মাধ্যমে চিনা পণ্যে আমদানির পথ সুগম করা নিয়েও আলোচনা হয় ওই বৈঠকে।
আরও পড়ুন- PM Modi visits Rome: কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বাইডেনের সঙ্গে ‘বন্ধুত্বে’র নতুন সমীকরণ নমোর