চলতি মাসের প্রথমে চিনা প্রেসিডেন্টকে একটা চিঠি দিয়েছেন আফ্রিকান ইউনিয়নের সেক্রেটারি জেনারেল। চিঠির বক্তব্য, বহুবার অনুরোধ সত্ত্বেও চিন গাধার মাংস ও হাড়ের চোরাচালান রুখতে কোনও ব্যবস্থাই নিচ্ছে না। চিনে রফতানির জন্যই আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে লাগাতার গাধা হত্যা হচ্ছে। তাই বেজিং সক্রিয় না হলে আফ্রিকা থেকেই হয়তো গাধারা মুছে যাবে। আফ্রিকান ইউনিয়নের দাবি, ২০২২-২৩ সালে আফ্রিকায় ৬৫ হাজার গাধাকে মারা হয়েছে শুধুমাত্র মাংস ও হাড়ের লোভে। তারপর সেসব ঘুরপথে চিনে পাঠানো হয়েছে। ঠিক কী কারণে এতটা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ল আফ্রিকার ছোট-বড় দেশগুলি?
সকলেই বলছেন শুধু চিনের কারণেই আফ্রিকায় গাধার সংখ্যা উদ্বেগজনক ভাবে কমেছে। সূত্রের খবর, গত এক দশকে কিছু না হলেও ৬ লক্ষ গাধা হত্যা হয়েছে। আফ্রিকার অনেক দেশেই, বিশেষত গ্রামের দিকে গাধাই মানুষের প্রধান ভরসা। ওসব দেশে গরু কেনার কথা সাধারণ মানুষ ভাবতেও পারেন না। গাধার দুধ ওখানকার শিশুদের পুষ্টি দেয়। মালপত্র পরিবহণের জন্যও গাধাই ভরসা। চাষের কাজে, এমনকি অসুস্থ মানুষকে হাসপাতালে পৌঁছে দিতেও অনেক এলাকায় গাধা ছাড়া গতি নেই। এমন একটা প্রাণীর সংখ্যা কমতে থাকায় প্রভাব পড়ছে আফ্রিকার অর্থনীতিতে। তবে চিনে গাধার হাড়-মাংস রফতানি করলে অনেক লাভ। তাই চলছে নির্বিচারে গাধা হত্যা।
শোনা যায় চিনাদের বিশ্বাস গাধার মাংস ও হাড় গুঁড়িয়ে তৈরি ইজিরাও ব্যবহার করলে দীর্ঘজীবন সম্ভব। মানুষ সহজে বুড়ো হয় না। কিন্তু, চিনে গাধা হত্যা করলে কড়া শাস্তি। তাই আফ্রিকার বিভিন্ন গরিব দেশ থেকে চোরাকারবারিদের মাধ্যমে চিনা প্রসাধন সংস্থাগুলি গাধার হাড়-মাংস আনিয়ে নেয়। তাতে নিজেদের দেশে সঙ্কট তৈরি হওয়ায় এখন নড়েচড়ে বসেছে আফ্রিকার দেশগুলি। তবে এর পিছনে অন্য একটা সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। আফ্রিকার দেশগুলি চিনের থেকে প্রচুর টাকা ধার নিয়ে বসে আছে। সেই ধার শোধের সময় এগিয়ে আসছে। অথচ বেশিরভাগ দেশের ভাঁড়ারে টাকা নেই। তাই চিনকে কিছুটা পাল্টা চাপে রাখতেই যে গাধাদের যে খাড়া করা হয়নি তা কিন্তু হলফ করে বলা যাচ্ছে না।