United States presidential election: ট্রাম্প-হ্যারিসদের নির্বাচনে কত ডলার খরচ করছে ফেসবুক-অ্যামাজনরা জানেন!

United States presidential election: আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আর্থিক দিকটি নজরে রাখে ফেডারেল ইলেকশন কমিশন (এফইসি)। তাদের বক্তব্য, খুবই স্বচ্ছতার সঙ্গে অনুদানের বিষয়টি নজর রাখা হয়। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মার্কিন নাগরিক কিংবা গ্রিন কার্ড হোল্ডাররা অনুদান দিতে পারেন।

United States presidential election: ট্রাম্প-হ্যারিসদের নির্বাচনে কত ডলার খরচ করছে ফেসবুক-অ্যামাজনরা জানেন!
অনুদান কীভাবে সংগ্রহ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কমলা হ্যারিস?
Follow Us:
| Updated on: Nov 02, 2024 | 7:59 PM

প্রতীক্ষায় হোয়াইট হাউস। আগামী ৪ বছর কে হবেন তার অধীশ্বর? ডোনাল্ড ট্রাম্প কি ফের ফিরে আসবেন? নাকি, আমেরিকার ইতিহাসে প্রথমবার মহিলা প্রেসিডেন্ট হিসেবে হোয়াইট হাউসের মসনদে বসবেন কমলা হ্যারিস। অপেক্ষার প্রহর ক্রমশ কমছে। ৫ নভেম্বর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। তাকে ঘিরে উত্তেজনার পারদ যত বাড়ছে, তত নানা প্রশ্ন উঠছে। জল্পনা বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে দেখে নেওয়া যাক, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কোন দলকে কারা অনুদান দিল। কত অনুদান পেল ট্রাম্পের রিপাবলিকান পার্টি? কমলা হ্যারিসের ডেমোক্র্যাট পার্টি-ই বা কত অনুদান পেল?

নির্বাচনী বন্ড নিয়ে কয়েকমাস আগে ভারতে হইচই শুরু হয়েছিল। নির্বাচনী বন্ডকে অসাংবিধানিক বলে রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট। এ তো ভারতের কথা। আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী কিংবা দলগুলি কীভাবে টাকা সংগ্রহ করেন? একজন ব্যক্তির কাছ থেকে সর্বোচ্চ কত ডলার অনুদান নেওয়া যায়? প্রার্থীর মুখ্য প্রচার কমিটিই সর্বোচ্চ কত ডলার অনুদান নিতে পারেন?

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কোনও ব্যক্তি, কোনও সংস্থা কিংবা কোনও কোম্পানি অনুদান দিতে পারে। কিন্তু, প্রার্থীকে সরাসরি কত ডলার অনুদান দেওয়া যাবে, তার একটা নিয়ম রয়েছে। আমেরিকার নির্বাচনে সাধারণত ব্যক্তিগত অনুদানের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি হয়। একজন ব্যক্তি প্রতি প্রার্থীকে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৩০০ ডলার পর্যন্ত অনুদান দিতে পারেন। প্রতি ২ বছর অন্তর মুদ্রাস্ফীতিকে মাথায় রেখে এই ব্যক্তিগত অনুদানের পরিমাণ বিবেচনা করা হয়। কোনও প্রার্থীর ফেডারেল এবং স্টেট লেবেল কমিটিও অনুদান সংগ্রহ করে। প্রার্থী চাইলে নিজের অর্থও নির্বাচনী প্রচারের ব্যবহার করতে পারেন।

এই খবরটিও পড়ুন

এবারের নির্বাচনে কোন কোন সংস্থা ট্রাম্প ও হ্যারিসের মুখ্য প্রচার কমিটিকে কত অনুদান দিয়েছে-

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রচারের জন্য অর্থের একটা বড় অংশ জোগান দেন প্রার্থীর মুখ্য প্রচার কমিটি। এবারের নির্বাচনে ট্রাম্প ও হ্যারিসের প্রচারে মুখ্য প্রচার কমিটিকে অনুদান দিয়েছে মাইক্রোসফট, ওয়ালমার্ট, অ্যামাজন, নেটফ্লিক্স এবং ফেসবুকের মতো সংস্থা।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুখ্য প্রচার কমিটিকে সবচেয়ে বেশি অনুদান দিয়েছে আমেরিকান এয়ারলাইন্স। তাদের অনুদানের পরিমাণ ১ লক্ষ ৩৪ হাজার ১৭৪ মার্কিন ডলার। ওয়ালমার্ট অনুদান দিয়েছে ৮৩ হাজার ৯০৮ মার্কিন ডলার। ৮২ হাজার ৭৬১ মার্কিন ডলার অনুদান দিয়েছে বোয়িং। ডোনাল্ডের মুখ্য প্রচার কমিটিকে ৪১ হাজার ৭৬২ মার্কিন ডলার অনুদান দিয়েছে মাইক্রোসফট।

অন্যদিকে, হ্যারিসের মুখ্য প্রচার কমিটিকে সবচেয়ে বেশি অনুদান দিয়েছে গুগল। তাদের অনুদানের পরিমাণ ১৪ লক্ষ ৬৪ হাজার ২৯২ মার্কিন ডলার। মাইক্রোসফট হ্যারিসের মুখ্য প্রচার কমিটিকে ৭ লক্ষ৪৩ হাজার ৪৫ মার্কিন ডলার অনুদান দিয়েছে। অ্যাপলের অনুদানের পরিমাণ ২ লক্ষ ২৫ হাজার ৩৯০ মার্কিন ডলার। নেটফ্লিক্স দিয়েছে ১ লক্ষ ২৫ হাজার ৯৬১ মার্কিন ডলার। হ্যারিসের মুখ্য প্রচার কমিটিকে অ্যামাজন ও ফেসবুক যথাক্রমে ৯৮ হাজার ১৭৭ মার্কিন ডলার ও ৯৭ হাজার ৯৮ মার্কিন ডলার অনুদান দিয়েছে। প্রতিদিন এই অনুদানের পরিমাণ অবশ্য বৃদ্ধি পাচ্ছে।

অনুদান নিয়ে কী বলছে ফেডারেল ইলেকশন কমিশন?

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আর্থিক দিকটি নজরে রাখে ফেডারেল ইলেকশন কমিশন (এফইসি)। তাদের বক্তব্য, খুবই স্বচ্ছতার সঙ্গে অনুদানের বিষয়টি নজর রাখা হয়। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মার্কিন নাগরিক কিংবা গ্রিন কার্ড হোল্ডাররা অনুদান দিতে পারেন। কোনও বিদেশি নাগরিকের কাছ থেকে অনুদান নেওয়া যায় না।

এফইসি-র এক আধিকারিক জানান, “ব্যক্তিগতভাবে কেউ ২০০ ডলারের বেশি অনুদান দিলে তাঁর নাম, পেশা, কোথায় কাজ করেন, সবকিছু জানাতে হয় প্রার্থীকে। ওই প্রার্থীর পার্টি কমিটি তা জানায় এফইসি-কে। তারপর সেই তথ্য আমরা ওয়েবসাইটে দিই।”

কারা অনুদান দিতে পারবে না?

ফেডারেল ইলেকশন কমিটি জানিয়েছে, জাতীয় ব্যাঙ্ক, ফেডারেলি চার্টার্ড কর্পোরেশন এবং শ্রমিক সংগঠন এই নির্বাচনে সরাসরি অনুদান দিতে পারে না। তবে এর কর্মীরা প্রার্থীদের অনুদান দিতে পারেন।

নির্বাচনে কীভাবে খরচ করেন প্রার্থীরা?

সংবাদমাধ্যমে প্রচার থেকে শুরু করে সমীক্ষা, বিভিন্ন ক্ষেত্রে খরচ করেন প্রার্থীরা। আমেরিকায় অলাভজনক সংস্থা ওপেন সিক্রেট জানিয়েছে, ২০২০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি খরচ হয়েছিল সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপনে। মোট অনুদানের প্রায় ৫৬.১ শতাংশ খরচ করা হয়েছিল সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপনে। কৌশল নির্মাণ ও রিসার্চের জন্যও খরচ করেন প্রার্থীরা।

এবারের নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে ট্রাম্প-হ্যারিস-

আমেরিকার ইতিহাসে এখনও কোনও মহিলা প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হননি। ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস জিতলে ইতিহাস গড়বেন। আমেরিকার ইতিহাসে প্রথম মহিলা ভাইস প্রেসিডেন্টও ভারতীয় বংশোদ্ভূত কমলা। একটা ইতিহাস গড়েছেন। আর এক ইতিহাসের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি। কয়েকদিন আগে রয়টার্স-ইপসোসের এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে, হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে চলেছে ট্রাম্প ও হ্যারিসের মধ্যে। তবে এক শতাংশের ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন হ্যারিস।

কমলা হ্যারিসের জন্য প্রার্থনা করছে দক্ষিণ ভারতের ছোট্ট এক গ্রাম-

তামিলনাড়ুর থুলাসেন্দ্রপুরম। এই গ্রামের সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে কমলা হ্যারিসের। তাঁর মাতামহ এই গ্রামে জন্মেছিলেন। ছোটবেলায় এখানে এসেছিলেন কমলা। তাঁর জয়ের জন্য প্রার্থনা করছেন গ্রামের বাসিন্দারা। গ্রামের মন্দিরে পুজো দিয়েছেন তাঁরা। হ্যারিসের জয়ের প্রার্থনা করে পোস্টার, ব্যানার টাঙিয়েছেন। কমলা জিতলে গ্রামের সবাইকে মিষ্টিমুখ করাতে চান বাসিন্দারা।

৫ নভেম্বর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। ২০২০ সালের নির্বাচনে পরাজিত ট্রাম্প কি বাজিমাত করবেন? নাকি প্রথম মহিলা প্রেসিডেন্ট হিসেবে ইতিহাস গড়বেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত হ্যারিস? কে হোয়াইট হাউসের মসনদে বসবেন, কয়েকদিনের মধ্যেই জানা যাবে।  কিন্তু, হোয়াইট হাউসে পৌঁছনোর এই যাত্রাপথে কোটি কোটি ডলার খরচ হচ্ছে।