কিয়েভ ও মস্কো: গত মাসে ইউক্রেনের চারটি অঞ্চলকে রাশিয়ার অন্তর্ভূক্ত বলে ঘোষণা করেছিল মস্কো। বুধবার (১৯ অক্টোবর) রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ওই চারটি অঞ্চলে সামরিক আইন জারি করেছেন। আর তার কয়েক ঘণ্টা পরই ইউক্রেনের ভারতীয় দূতাবাসের পক্ষ থেকে, “নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি” উল্লেখ করে, সমস্ত ভারতীয় নাগরিককে ইউক্রেনে ছাড়ার পরামর্শ দেওয়া হল। দূতাবাসের পক্ষ থেকে টুইট করে বলা হয়েছে, “বর্তমানে ইউক্রেনে থাকা ছাত্র-ছাত্রী-সহ ভারতীয় নাগরিকদের যে কোনও উপায়ে অবিলম্বে ইউক্রেন ছেড়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।”
এর আগে, একটি টেলিভিশন ভাষণে, রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন ওই অঞ্চলগুলিতে সামরিক আইন জারি করার কথা ঘোষণা করেন। ইউক্রেনে মস্কোর যুদ্ধ প্রচেষ্টাকে আরও জোরদার করতে রুশ অধিকৃত অঞ্চলগুলির সঙ্গে সমন্বয় সাধনের জন্য রুশ প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিশুস্টিনের অধীনে এক বিশেষ সমন্বয়কারী পরিষদ গঠন করার নির্দেশও দেন তিনি। যেসব অঞ্চলে সামরিক আইন জারি করা হল তার মধ্যে রয়েছে খেরসন, জাপোরিঝিয়া, ডোনেস্ক এবং লুহানস্ক।
প্রসঙ্গত রাশিয়া এই চারটি অঞ্চল তাদের বলে দাবি করলেও, সেই বাদিকে স্বাভাবিকভাবেই স্বীকৃতি দেয়নি কিয়েভ। পুতিনের এই সাম্প্রতিক পদক্ষেপকেও তারা উপহাস করেছে। ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট জ়েলেনস্কির উপদেষ্টা মিখাইলো পোদোলিয়াক টুইট করে বলেছেন, “রুশ অধিকৃত অঞ্চলগুলিতে ‘সামরিক আইন’ প্রয়োগ, শুধুমাত্র ইউক্রেনীয়দের সম্পত্তি লুট করাকে ছদ্ম-আইনি বৈধতা দেওয়ার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা উচিত। এতে ইউক্রেনের কিছুমাত্র পরিবর্তন হবে না। আমরা আমাদের নিজেদের এলাকাগুলির মুক্তি এবং পুনর্দখল অব্যাহত রাখব।”
তবে শুধু রুশ অধিকৃত অঞ্চলগুলিতে রুশ সামরিক আইন জারির প্রেক্ষিতেই, ভারতীয় দূতাবাস থেকে এই ধরনের পরামর্শ জারি করা হল, তেমনটা নয়। গত আট মাস ধরে যুদ্ধের পর, বর্তমানে ইউক্রেনের পূর্ব ও দক্ষিণ প্রান্তে বড় ধরনের পাল্টা-আক্রমণের মুখে পড়েছে রুশ বাহিনী। গত দুই সপ্তাহে বিভিন্ন ইউক্রেনীয় শহরে আকাশপথে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। কিয়েভ-সহ প্রধান প্রধান ইউক্রেনীয় শহরগুলিতে লোকালয়ে নিক্ষেপ করা হয়েছে রকেট, ক্ষেপণাস্ত্র, আত্মঘাতী ড্রোন। ইউক্রেন সরকারের অভিযোগ, দেশের এক তৃতীয়াংশ বিদ্যুৎ কেন্দ্র রুশ হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই, ইউক্রেনের বহু অংশেই অন্ধকার নেমে এসেছে। সামনেই শীত আসছে। তার আগে যতটা সম্ভব এলাকা দখলের চেষ্টায় রাশিয়া মরণ কামড় দেবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।