মস্কো : বুধবার ফের তালিবানের মুখোমুখি হবে ভারত। গত আগস্ট মাসে তালিবান আফগানিস্থানে (Afghanistan) নতুন করে দখল নেওয়ার পর দোহায় প্রথমবার তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিল ভারত (India)। এবার ফের এক টেবিলে হবে বৈঠক। বুধবার রাশিয়ার রাজধানী মস্কোয় (Moscow) হবে সেই বৈঠক। এ দিন একদিকে যেমন তালিবানের (Taliban) প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন, অন্যদিকে ১০ টি দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন বৈঠকে। মূলত আফগানিস্তারনে সামরিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গিয়েছে।
ভারত ছাড়া অন্যান্য যে সব দেশের প্রতিনিধিরা এই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন, তার মধ্যে রয়েছে আমেরিকা, চিন, পাকিস্তান, ইরান। মূলত তালিবান শাসিত আফগানিস্থানে মানবাধিকারের সঙ্কট যাতে তৈরি না হয়, সেই বিষয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গিয়েছে। বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছে রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রক।
এর আগে ২০১৮ সালে মস্কোতে তালিবানের সঙ্গে ‘বেসরকারি পর্যায়ে’ এক বৈঠকে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত। অবসরপ্রাপ্ত বিদেশ মন্ত্রকের আধিকারিক টি সি এ রাঘাবণ এবং অমর সিনহা ওই বৈঠকে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন। পাঁচ সদস্যের তালিবান প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন শের মহম্মদ আব্বাস স্টানেকজ়াই, যিনি বর্তমানে আফগানিস্তানের উপ বিদেশ মন্ত্রী। চলতি বছরেই ৩১ অগাস্ট কাতারের রাজধানী দোহাতে ভারতীয় দূতাবাসে কূটনীতিক দীপক মিত্তলের সঙ্গে মহম্মদ আব্বাস স্টানেকজ়াইয়ের সরকারিভাবে একটি বৈঠক হয়।
২০১৭ সালে আফগানিস্তান, ভারত, চিন. রাশিয়া. ইরান ও পাকিস্তানকে নিয়ে মস্কোল পদ্ধতির বৈঠক শুরু হয়। আফগানিস্তান ইস্যু নিয়ে রাশিয়া, আমেরিকা, পাকিস্তান ও চিনকে সহযোগী করে আলোচনা শুরু করেছে। তালিবান কাবুলের ক্ষমতা দখলের পর এই প্রথমবারের জন্য মস্কোতে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। আফগানিস্তানে এই অস্থির পরিস্থিতিতে জঙ্গি কার্যকলাপ বৃদ্ধির সম্ভাবনা নিয়ে রাশিয় ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলি চিন্তিত। আফগান মাটিতে আইসিস জঙ্গিদের বাড়বাড়ন্তই রাশিয়ার উদ্বেগের প্রধান কারণ।
এ দিকে, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা স্তরের বৈঠকে চিন, পাকিস্তান ও রাশিয়াকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে ভারত। দিল্লিতে সেই বৈঠকের আয়োজন করা হবে বলে জানা গিয়েছে। মূলত আফগানিস্তান নিয়ে আলোচনা করতেই বসবে সেই বৈঠক। নভেম্বরে সেই বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছে ভারত। ১০ নভেম্বর ও ১১ নভেম্বর, দুটি দিনের মধ্যে যে কোনও একদিন বৈঠকের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই নয়াদিল্লির তরফে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মঈদ ইউসুফকে। একদিকে যখন সীমান্তে অস্থিরতা তুঙ্গে, বারবার জঙ্গি অনুপ্রবেশের খবর সামনে আসছে, তখন ভারতের এই উদ্যোগ তাৎপর্যপূর্ণ। যদিও দিল্লি মনে করছে, শান্তি স্থাপনে এই বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মানবাধিকার ও নিরাপত্তা, উভয় ক্ষেত্রেই জোর দেওয়া হবে এই বৈঠকে।
আরও পড়ুন : Taliban: ওরাই তো আসল ‘হিরো’, আত্মঘাতী বোমারুদের পরিবারকে জমি উপহার দেবে তালিবান