লন্ডন: ড্রাইভিং লাইসেন্স বানানোর ঝক্কি কিছু কম নয়। লাইসেন্সের জন্য আবেদন করার পর পরীক্ষায় পাশ না করতে পারার কারণে অনেকেরই আবেদন বাতিল হয়। শুধু গাড়ি চালাতে জানলেই লাইসেন্স পাওয়া যায় না। পাশাপাশি আরও কিছু কৌশল রপ্ত করতে হয়। অনেকেই তা করতে না পেরে অসৎ উপায় অবলম্বন করেন। অনেকেই থাকেন অর্থের বিনিময়ে জালিয়াতি করে ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে সাহায্য করেন। সম্প্রতি এমনই কাণ্ড ব্রিটেনে ঘটিয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক মহিলা। প্রায় ১৫০ জনের হয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্সের পরীক্ষায় বসার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত ওই মহিলার নাম ইন্দরজিৎ কৌর। প্রতারণার দায়ে বর্তমানে জেলের রয়েছেন তিনি। ২০১৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রায় ১৫০ জনের হয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্সের পরীক্ষায় বসার অভিযোগ ছিল তাঁর বিরুদ্ধে। বারমিংহাম, কারমারথেন-সহ লন্ডনের বিভিন্ন প্রদেশের পরীক্ষার্থীর হয়ে প্রক্সি দিয়েছেন এই মহিলা। প্রতি ক্ষেত্রে এর জন্য প্রায় ৮০০ পাউন্ড করে রোজগার করেছেন তিনি। ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৭৬ হাজার টাকা।
বিদেশে থাকলেও অনেকেরই ইংরাজি বলার ক্ষেত্রে সমস্যা থাকে। ইংল্যান্ডে ড্রাইভিং লাইসেন্সের পরীক্ষায় পাশ করতে হলে ঝরঝরে ইংরাজি বলা বাধ্যতামূলক। চাইলেও কোনও দোভাষির সাহায্য নিতে পারেন না পরীক্ষার্থীরা। সে জন্যই তাঁরা ইন্দরজিতের শরণাপন্ন হয়েছিলেন। টাকা লাগলেও পরীক্ষায় পাশ করার ব্যাপারে তাঁর উপর ভরসা করতেন ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন করা ব্যক্তিরা।
এই ঘটনা সামনে আসায় পরীক্ষাকেন্দ্রে থাকা বিভিন্ন স্টাফদের সাসপেন্ড করেছে তদন্তকারী সংস্থা। সংস্থার দাবি, বিভিন্ন পরীক্ষার্থী তাঁদের নিজেদের শহর থেকে বেশ দূরে পরীক্ষা দেওয়ার আবেদন করেছে দেখেই তাঁদের সন্দেহ হয়। এর পরই উঠে আসে ইন্দরজিতের নাম। তদন্তে দেখা যায় দীর্ঘদিন ধরেই এই যুবতী বিভিন্ন ভুয়ো পরিচয়পত্র ব্যবহার করেছেন। এছাড়াও পরীক্ষার সময় তাঁর আচরণও ছিল যথেষ্ট সন্দেহজনক। ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরই বহুজন এই ঘটনার নিন্দায় সরব হয়েছেন। তাঁদের মতে, এই ধরনের প্রতারণা চক্র যে পথ-নিরাপত্তার বিস্তর ক্ষতি করছে। ইন্দরজিত তাঁর কাজের জন্য শাস্তি ভোগ করছেন। কিন্তু তাঁর দৌলতে যাঁরা ড্রাইভিং লাইসেন্স পেয়েছেন, তাঁদের শেষ পর্যন্ত হল, তা অবশ্য এখনও জানা যায়নি।