কঙ্গো: সিরিয়া, ইরাকের মতো দেশের বাইরে আইএস নতুন করে বিস্তার বাড়াতে শুরু করেছে। এবার তাদের লক্ষ্য আফ্রিকা। সাহারা-মরুভূমি সংলগ্ন আফ্রিকায় শুরু হয়েছে তাদের নতুন সাম্রাজভ। বোকো হারাম অনুগামীদের দলে টেনে আইএসের মন্ত্র দেওয়া হচ্ছে। বাড়ানো হচ্ছে সদস্য সংখ্যা বহু দূর পর্যন্ত এলাকা দখল করছে তারা। সম্প্রতি এমই রিপোর্ট সামনে এসেছে। নাইজেরিয়ায় আধিপত্য বিস্তার শুরু হয়েছে আগেই। সেখানে রীতিমতো ঘাঁটি গেড়েছে আইএসের ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্স। এরপরই আফ্রিকা হয়ে উঠেছে তাদের টার্গেট। স্থানীয় লোকজনকে নিজেদের অনুগত করে তুলছে আইএস নেতারা। বিশেষজ্ঞরা দেখেছেন, এক ‘জিহাদি সরকার’ গঠনের প্রচেষ্টাও চালাচ্ছে তারা।
ইসলামিক চরমপন্থা সংক্রান্ত একজন বিশেষজ্ঞ ভিনসেন্ট ফাউচার জানিয়েছেন, আইএসের মতো সংগঠনের জন্য মরু সংলগ্ন আফ্রিকা অত্যন্ত সুবিধাজনক। এই অঞ্চলে খুব জোর না খাটিয়েও প্রভাব বিস্তার করা সম্ভব। বিশ্বের মধ্যে এরকম জায়গা খুব কমই আছে যেখানে কয়েক হাজার বর্গ মিটার এলাকায় দাপট দেখাতে পারে আইএস। রীতিমতো রাজত্ব করে তারা। শুধু মরু অঞ্চল নয়, সাম্বাসিয়া নামে এক বিখ্যাত জঙ্গলেও ঢুকে পড়েছে আইএস। গত মাসে বোকো হারাম নেতা আবুবকর শেকাউ-কে মেরে তার অনুগামীদেরও দলে অন্তর্ভুক্ত করেছে আইএস। তাদের অস্ত্রশস্ত্রও নিয়ে নেওয়া হয়েছে।
ওই অঞ্চলেই আইএসের শীর্ষ নেতা আল-বারনাউই-র একটি অডিয়ো ক্লিপ প্রকাশিত হয়েছে সম্প্রতি। সেখানে তাঁকে বলতে শোনা যাচ্ছে যাতে বোকো হারাম সদস্যরা অন্যান্য দেশের মুসলিমদের শত্রু বলে মনে না করে, যেটা শেকাউ করত। শুধু তাই নয়, আল-বারনাউই-র বক্তব্য শুনলে বোঝা যাবে যে সে অন্যান্যদের থেকে অনেকটা আলাদা। বক্তব্যে চরমপন্থার বদলে আধুনিকতা ও শিক্ষাকে প্রাধান্য দেওয়ার কৌশল নিয়েছে আল-বারনাউই। এলাকার শিশুদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে সে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
আরও পড়ুন: Fake Vaccination: ছেনি-হাতুড়ি এনে ভাঙা হল তালতলার সেই ফলক, পুরসভার অনুমতি ছিল না, দাবি অতীনের
কয়েক বছর ধরে চেষ্টা করে ইরাক ও সিরিয়া থেকে আইএসের ঘাঁটি উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়েছে। ইরাক ও সিরিয়ার কোনও শহরই আর আইএসের নিয়ন্ত্রণে নেই। সংগঠনের যোদ্ধারা হয় নিহত হয়েছে, নয়ত ধরা পড়েছে কিংবা নিজেরা ধরা দিয়েছে। এ ছাড়া একটি বড় অংশ সেখান থেকে পালিয়ে গিয়েছে। সাধারণতর এরা পৃথিবীর সব অবৈধ সশস্ত্র সংগঠনের সঙ্গে যোগসাজশের চেষ্টা করে। সাধারণত যে সব এলাকায় দারিদ্র্য থাকে, দুর্নীতি থাকে, ধর্মীয় কিংবা জাতিগত সংঘাত থাকে এবং যেখানে নিরাপত্তা বাহিনী জনগণকে নিরাপত্তা দিতে পারে না, মূলত সেসব জায়গাকেই এসব গ্রুপ তাদের অভিযান চালানো ও ঘাঁটি গাড়ার জায়গা হিসেবে বেছে নেয়।