টোকিয়ো: জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হলেন জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিনজ়ো আবে। শুক্রবার সকালেই জাপানের নারা শহরে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর উপরে গুলি চলে। জানা গিয়েছে, রবিবার জাপানের সংসদের উচ্চ কক্ষে নির্বাচন রয়েছে। সেই নির্বাচনী প্রচারের জন্যই এ দিন সকালে তিনি নারা শহরে একটি জনসভায় বক্তব্য রাখতে যান। সেখানেই আচমকা তাঁর উপরে হামলা হয়। গুলিবিদ্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি হৃদরোগেও আক্রান্ত হন। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। জাপান সরকারের তরফে মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। যদিও জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা জানিয়েছেন আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন শিনজ়ো। ইতিমধ্যেই আততায়ীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।
জাপানের প্রধানমন্ত্রীর গদিতে সবথেকে বেশি সময় তিনিই ছিলেন। ২০২০ সালের অগস্ট মাসেই শিনজ়ো আবে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন। এনএইচকে ও কয়োদো নিউজের তরফে জানানো হয়েছে, এ দিন সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ (ভারতীয় সময় অনুযায়ী সাড়ে ৮টা) তিনি বক্তব্য় রাখতে মঞ্চে ওঠেন। সেই সময়ই পিছন থেকে গুলি চালায় এক আততায়ী। পরপর দুটি গুলি চলে তাঁর উপরে। প্রথম গুলি থেকে তিনি কোনওমতে বেঁচে গেলেও, পরের গুলিটি সোজা শিনজ়োর বুকে লাগে। সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি।
犯人取り押さえの瞬間 #安倍晋三 pic.twitter.com/HkEtC5kyKb
— マルケス (@3270freedam) July 8, 2022
ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক মহিলা বলেন, “প্রথম গুলিটির শব্দ ঠিকমতো বোঝা যায়নি। খেলনা বন্দুক থেকে যেমন শব্দ বের হয়, সেইরকমই শব্দ হয়েছিল। পরের গুলিটির শব্দ জোরে শোনা যায়। আলোর ঝলকানি ও ধোঁয়া বেরতেও দেখা যায়। গুলি লাগার সঙ্গে সঙ্গে শিনজ়ো আবে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাঁর আশেপাশে যারা ছিলেন, তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে শিনজ়োকে ঘিরে ফেলেন এবং বুকে হাত চেপে ধরেন।”
৬৭ বছর বয়সী প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর বুক ও গলা থেকে রক্ত বেরতে দেখা যায়। ঘটনাস্থলেই তাঁর শরীর নিস্তেজ হয়ে যায় বলে জানা গিয়েছে। সেই সময়ই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হৃদরোগে আক্রান্ত হন বলে জানা গিয়েছে। এয়ার অ্য়াম্বুলেন্সে করে যখন তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, সেই সময় তাঁর ‘কার্ডিও-রেসপিরাটরি অ্যারেস্ট’ হয়, শরীরে প্রাণের কোনও চিহ্ন ছিল না। জাপানে মৃত্যুর আগের অবস্থাকেই বোঝায় এই শব্দ।
একাধিক সংবাদমাধ্যমের তরফে জানানো হয়েছে, শিনজ়োকে পিছন থেকে গুলি করা হয়েছে। তাঁকে গুলি করার জন্য শটগান ব্যাবহার করা হয়েছিল। ইতিমধ্যেই আততায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, গোটা ঘটনার তদন্তের জন্য একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছে।