ঢাকা: শেখ হাসিনার সরকারে তারা আওয়ামী লীগের জোটসঙ্গী ছিল। তার জন্য বাংলাদেশে এখন বিক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে জাতীয় পার্টিকে। বৃহস্পতিবার তাদের একাধিক অফিসে হামলা চালায় উত্তেজিত জনতা। কোথাও ভাঙচুর করা হয়। দলীয় অফিসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। কোথাও আবার জাতীয় পার্টির জায়গায় লিখে দেওয়া হয়েছে জাতীয় টয়লেট। হামলার তীব্র নিন্দা করেছে জাতীয় পার্টি। ‘দেশ এখন বিভক্ত’ বলে সরব হন জাতীয় পার্টির প্রধান গুলাম মহম্মদ কাদের।
বাংলাদেশের প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি হুসেন মহম্মদ এরশাদ জাতীয় পার্টি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে জোট সরকারের শরিক ছিল জাতীয় পার্টি। আগের তিনটি সাধারণ নির্বাচন একাধিক দল বয়কট করলেও তাতে অংশ নিয়েছিল জাতীয় পার্টি।
সংবাদসংস্থা এএনআই জানিয়েছে, শনিবার ঢাকায় একটি সভার ডাক দিয়েছে জাতীয় পার্টি। তাতেই ক্ষুব্ধ হন বিক্ষোভকারীরা। বৃহস্পতিবার ঢাকার কাকরাইল এলাকায় জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় অফিসের সামনে একটি মিছিল যাচ্ছিল। সেইসময় দু’পক্ষের সংঘর্ষ শুরু হয়। তারপরই জাতীয় পার্টির পার্টি অফিসে ভাঙচুর করা হয়। এরশাদের ছবি কালি লেপা হয়। জাতীয় পার্টির জায়গায় জাতীয় টয়লেট লেখা হয়।
দলীয় অফিসে হামলা নিয়ে জাতীয় পার্টির প্রধান গুলাম মহম্মদ কাদের বলেন, দেশ এখন বিভক্ত। অন্যদিকে, বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, তাদের মিছিল চলাকালীন হামলা চালায় জাতীয় পার্টির সদস্যরা। তার জেরেই গন্ডগোল বাধে। গণ অধিকার পরিষদের নেতা শাকিলুজ্জামান বলেন, “জাতীয় পার্টির অফিসের পাশ দিয়ে মশাল মিছিল করে যাচ্ছিলাম আমরা। জাতীয় পার্টির গুন্ডারা তাদের অফিসের ছাদ থেকে আমাদের লক্ষ্য করে ইট ছোড়ে। তারপর নিজেরাই অফিসে আগুন লাগিয়ে পালিয়েছে।”
#WATCH | Bangladesh’s ousted Prime Minister Sheikh Hasina’s coalition, Jatiya Party’s central office in Dhaka vandalised and set on fire. pic.twitter.com/nUWQtYkclm
— ANI (@ANI) November 1, 2024
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে চলতি বছরের জুলাইয়ের শুরু থেকে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত গত ৫ অগস্ট প্রধানমন্ত্রিত্ব পদে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। তারপর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের উপর হামলা বাড়ে বলে অভিযোগ। শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হয়েছে। সেই সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মহম্মদ ইউনুস। কিন্তু, বাংলাদেশে উত্তেজনা যে এখনও প্রশমিত হয়নি, জাতীয় পার্টির অফিসে ভাঙচুরের ঘটনা তা আবার সামনে আনল বলে অনেকে মনে করছেন।