ইসলামাবাদ: ফের অজ্ঞাতপরিচয় বন্দুকধারীদের হামলা। করাচির ওরাঙ্গি ডাউন এলাকায় খুন জইশ-ই-মহম্মদ জঙ্গি গোষ্ঠীর প্রধান মৌলানা মাসুদ আজহারের ঘনিষ্ঠ সহয়োগী মৌলানা রহিম উল্লাহ তারিক। রবিবার, এক ধর্মীয় সমাবেশে যোগ দিতে যাওয়ার সময়ই অজ্ঞাত পরিচয় আততায়ীরা তাকে গুলি করে হত্যা করে পালায় বলে জানিয়েছে পাক পুলিশ। বুধবার তারা জানিয়েছে, মৌলানা তারিককে হত্যার উদ্দেশ্যেই তাকে গুলি করা হয়েছিল। এই ঘটনাকে সন্ত্রাসবাদ বলেই চিহ্নিত করেছে ইসলামাবাদ। এই নিয়ে গত সাত মাসে পাকিস্তানে সাত শীর্ষ স্থানীয় জঙ্গি নেতা খুন হল। এই সাতজনেরই নাম ছিল ভারতের মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গিদের তালিকায়। কারা এই জঙ্গি নেতাদের এক এক করে হত্যা করছে, সেই নিয়ে ক্রমে ঘনাচ্ছে রহস্য।
প্রায়শই পাকিস্তানের দরিদ্র এলাকাগুলিতে গিয়ে ভারত বিরোধী বিদ্বেষ উসকে দেওয়ার চেষ্টা করত মৌলানা তারিক। ঘৃণামূলক বক্তৃতা দিত। রবিবারও তার ব্যাতিক্রম ছিল না। করাচির বস্তি এলাকা, ওরাঙ্গি টাউনশিপে যাচ্ছিল সে। হঠাৎ করে হাজির হয় দুই অজ্ঞাতপরিচয় আততায়ী। তাকে গুলি করে মুহূর্তের মধ্যে এলাকা থেকে চম্পট দেয়। সূত্রের খবর, এই হত্যার পিছনে জইশ-ই-মহম্মদের অন্তর্দ্বন্দ্ব রয়েছে। পাক সংবাদমাধ্যমগুলির প্রতিবেদন অনুসারে, পাকিস্তান সরকার এবং পাক নিরাপত্তা সংস্থাগুলি তারিকের মৃত্যুর জন্য ভারতকে দোষারোপ করেছে। তবে, তারা এই দাবির সপক্ষে কোনও প্রমাণ দেখাতে পারেনি। দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে সন্ত্রাসবাদীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে পরিচিত ছিল পাকিস্তান। কাশ্মীর উপত্যকার স্থিতি নষ্ট করার কাজে জঙ্গিদের ব্যবহার করত ইসলামাবাদ।
তবে, গত সাত মাসে সাতজন মোস্ট ওয়ান্টেড সন্ত্রাসবাদী নেতার মৃত্যু, নাড়িয়ে দিয়েছে পাক সেনাবাহিনী এবং পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-কে।
– ৬ মে পাকিস্তানের লাহোরে জগিং করতে গিয়ে অজ্ঞাত পরিচয় হামলাকারীদের গুলিতে নিহত হয়েছিল ভারতের অন্যতম মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গি তথা খালিস্তান কমান্ডো ফোর্সের প্রধান, পরমজিৎ সিং পাঞ্জওয়ার।
– এরপর, ১২ সেপ্টেম্বর, করাচির গুলিস্তান-ই-জওহরের এক পার্কে বেড়াতে গিয়ে অজ্ঞাতপরিচয় হামলাকারীদের গুলিতে প্রাণ হারায় লস্কর-ই-তৈবার কমান্ডার মৌলানা জিয়া-উর রহমান।
– ৩০ সেপ্টেম্বর, করাচিতেই এলইটি প্রধান হাফিজ সইদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী মুফতি কায়সার ফারুককে গুলি করে হত্যা করা হয়।
– ১০ অক্টোবর শিয়ালকোটের ডাস্কা শহরের একটি মসজিদে, অজ্ঞাত পরিচয় আততায়ীদের গুলিতে নিহত হয় পাঠানকোট হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী শাহিদ লতিফ।
– ৭ নভেম্বর পাক-অধিকৃত কাশ্মীর থেকে উদ্ধআর করা হয়েছিল খাজা শহিদের প্রাণহীন ও মুণ্ডহীন করা দেহ। মৃত্যুর আগে তাকে নির্যাতন করার প্রমাণও পাওয়া গিয়েছিল।
– ১০ নভেম্বর খাইবার পাখতুনখোয়ায় বাইকআরোহী আততায়ীদের গুলিতে মৃত্যু হয় এলইটি কমান্ডার আকরাম খান গাজীর। এবার খতম হল রহিম উল্লাহ তারিক।