গাজা: সদ্যোজাতদের চোখও ফোটেনি ভালভাবে। পাশাপাশি শোয়ানো আছে সাত শিশুকে। গায়ে জড়ানো প্যাকেট। কারও নাকে লাগানো নল। যেন পৃথিবীর আলো দেখার আগেই মৃত্যু অপেক্ষায় দিন গোনা চলছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা থেকে সামনে এল এই ছবি। প্রতিদিন কমছে সদ্যোজাতর সংখ্যা। জন্মের পরই তাদের জন্য অপেক্ষা করছে মৃত্যু। চিকিৎসকেরাও স্বীকার করছেন যে যা পরিস্থিতি তাতে যে কোনও সময় শিশুদের হারাতে পারেন তাঁরা। এমনটাই বলছেন আল শিফা হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। জানা গিয়েছে, ওই হাসপাতালে চিকিৎসার সরঞ্জাম নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। সব রাস্তাই কার্যত বন্ধ করে দিয়েছে হামাস।
ছবিতে সাত শিশুকে দেখা যাচ্ছে। জানা গিয়েছে, সম্প্রতি ওই হাসপাতালে ৩৯ জন শিশুর জন্ম হয়েছে যারা অপরিণত বা প্রিম্যাচিওর। একেকজনের ওজন প্রায় দেড় কেজি মতো। তাদের বাঁচাতে ইনকিউবেটরে রেখে শরীর গরম রাখা প্রয়োজন। কিন্তু সে সব ব্যবস্থা নেই, তাই একজায়গায় বান্ডিলের মতো করে রাখা হয়েছে তাদের।
ওই হাসপাতালের চিকিৎসক মহম্মদ তাবাশা জানিয়েছেন, রবিবারও ৩৯ জন শিশু ছিল, সোমবার সেই সংখ্যা কমে হয় ৩৬। পরবর্তীতে জানা গিয়েছে মোট ৯ সদ্যোজাতর মৃত্যু হয়েছে। ওই শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এতটাই কম যে যে কোনও সময় তারা সংগ্রমণের শিকার হতে পারে বলেও দাবি করেছেন ওই চিকিৎসক।
দুধ নেই, তাদের শ্বাসকষ্ট হলে চিকিৎসার কোনও ব্যবস্থা নেই। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে একে একে শিশুদের মৃত্যু হবে বলেই আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকেরা। প্রাপ্তবয়স্ক অনেক রোগীরও মৃত্যু হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
মনে করা হচ্ছে, রোগীদেরকেই ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে হামাস। হাসপাতালের বেসমেন্টে জমা করা হচ্ছে বিস্ফোরক। হু প্রধান টেড্রস আধানম ঘেব্রেসাস জানিয়েছেন, আল শিফা হাসপাতালে সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। সেখানে তিনদিন ধরে কোনও জল নেই, বিদ্যুৎ নেই, ইন্টারনেট কানেকশনও নেই। অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আর্জি জানিয়েছেন তিনি।