Nepal: ভারতের ঘাড়ে চিনের ‘খড়্গ’? নেপালের মসনদে ফের ওলি
Nepal: রবিবার (১৪ জুলাই), আরও একবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপাল-ইউনাইটেড মার্ক্সিস্ট লেনিনিস্ট দলের চেয়ারম্যান কেপি শর্মা ওলিকে নেপালের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করলেন নেপালের রাষ্ট্রপতি। ওলি প্রধানমন্ত্রী হলে, ভারতের চাপ বাড়তে পারে। এর আগে, তাঁকে দেখা গিয়েছে ভারতকে দূরে ঠেলে চিনের সঙ্গে মিত্রতা বাড়াতে।
কাঠমান্ডু: ফের ক্ষমতার রদবদল হতে চলেছে হিমালয়ের কোলে অবস্থিত ভারতের প্রতিবেশি দেশ নেপালে। রবিবার (১৪ জুলাই), আরও একবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপাল-ইউনাইটেড মার্ক্সিস্ট লেনিনিস্ট দলের চেয়ারম্যান খড়্গ প্রসাদ শর্মা ওলি ওরফে কেপি শর্মা ওলিকে নেপালের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করলেন নেপালের রাষ্ট্রপতি। সোমবার সকাল ১১টাতেই শীর্ষ পদের জন্য শপথ গ্রহণ করবেন তিনি। আস্থাভোটে পুষ্প কমল দাহল ‘প্রচণ্ড’ হেরে যাওয়ার পর, চতুর্থবারের জন্য দেশের প্রধানমন্ত্রী হলেন ওলি। এই নিয়ে চতুর্থবার দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে চলেছেন তিনি। তবে, এবার তাঁকে জোট সরকার চালাতে হবে।
২০২২ সালে কেপি শর্মা ওলির সরকারকে হারিয়েই জয়ী হয়েছিল ডেমোক্রেটিক লেফট অ্যালায়েন্স। শের বাহাদুর দেউবার নেপালি কংগ্রেস, প্রচন্ডর কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপাল (মাওইস্ট সেন্টার)-সহ পাঁচটি দলের সেই জোট সরকারও গঠন করেছিল। তবে, গত শুক্রবার আস্থা পরাজিত হয়েছেন সেই সরকারের প্রধানমন্ত্রী, পুষ্প কমল দহল প্রচন্ড। সরকার উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন নেপালি কংগ্রেসের সভাপতি, শের বাহাদুর দেউবা। বর্তমানে ওলির পক্ষে আছেন প্রতিনিধি কক্ষের ১৬৫ জন সদস্য। এর মধ্যে ওলির নিজের দলের ৭৭ জন এবং নেপালি কংগ্রেসের ৮৮ জন আছেন। এই ১৬৫ জনের স্বাক্ষর জমা দেওয়ার পরই, ওলিকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে।
জোট গঠনের জন্য গত সপ্তাহে এক বৈঠকে বসেছিলেন নেপালি কংগ্রেস এবং সিপিএন-ইউএমএল-এর নেতারা। মোট সাত দফা চুক্তি হয়েছে সেই বৈঠকে। তার মধ্যে অন্যতম হল, সংসদের অবশিষ্ট মেয়াদে দুই দল পালাক্রমে প্রধানমন্ত্রীর পদ ভাগ করে নেবে। চুক্তি অনুযায়ী প্রথম দফায় ১৮ মাসের জন্য প্রধানমন্ত্রী থাকবেন ওলি। তারপর পরের ১৮ মাস নেপালি কংগ্রেসের কোনও নেতা এই দায়িত্ব নেবেন। সোমবার ওলির শপথ গ্রহণের পর, একটি ছোট আকারের মন্ত্রিসভা গঠন করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
নেপালের প্রধানমন্ত্রী পদে ওলি প্রথমবার বসেছিলেন ২০১৫ সালে। সেবার এক বছরও থাকতেপারেননি সেই পদে। এরপর, ২০১৮ সালে ফের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। ২০২১-এর ১৩ জুলাই, পর্যন্ত। ওই বছর মে মাসে সরকার পড়ে গেলেও, তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভান্ডারী তাঁকেই সংখ্যালঘু সরকার চালানোর অনুমতি দিয়েছিলেন। পরে সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল, তাঁর সেই নিয়োগ অসাংবিধানিক।
ওলি প্রধানমন্ত্রী হলে, ভারতের চাপ বাড়তে পারে। এর আগে, তাঁকে দেখা গিয়েছে ভারতকে দূরে ঠেলে চিনের সঙ্গে মিত্রতা বাড়াতে। নেপাল সীমান্ত নিয়েও বিরোধ রয়েছে। ২০১৫ সালে এই বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছিলেন ওলি। চিনের কায়দাতেই, নেপালের একটি মানচিত্র প্রকাশ করেছিল ওলির সরকার। যেখানে উত্তরাখণ্ডের লিপুলেখ, কালাপানি এবং লিম্পিয়াধুরাকে নেপালের অংশ বলে দাবি করা হয়েছিল। ভারত এই দাবিকে “একতরফা” বলে প্রত্যাখ্যান করেছিল। একই সঙ্গে বেজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করেছিল তাঁর সরকার। মাঝে একটা সময়, কাঠমান্ডুতে নিযুক্ত চিনা রাষ্ট্রদূতকে দিয়ে প্রায় নেপালের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করা শুরু করেছিল বেজিং। এবার, জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সরকারে এসে তিনি কী নয়া দিল্লি সম্পর্কে নীতি নেন, সেটাই দেখার।