বেইরুট: লাগাতার বিস্ফোরণ, রক্তাক্ত লেবানন। প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ৯ জন। আহত ২৮০০। জানা গিয়েছে, মূলত হিজবুল্লার সদস্যদের কাছে থাকা পেজার থেকেই বিস্ফোরণ হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ একযোগে বিস্ফোরণ হতে থাকে। লেবাননের রাস্তাঘাট, দোকান-বাজারে যার কাছেই পেজার ছিল, তাতেই বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণ হয়েছে সিরিয়াতেও। এই বিস্ফোরণের পিছনে ইজরায়েলের হাত রয়েছে বলেই দাবি লেবাননের। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, কীভাবে পেজারে বিস্ফোরণ ঘটাল ইজরায়েল? সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ইজরায়েলের গুপ্তচর বাহিনী মোসাদই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। পাঁচ মাস আগে থেকেই হামলার প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল।
লেবাননের নিরাপত্তা বাহিনীর সিনিয়র আধিকারিকের দাবি, ইজরায়েলের মোসাদ বাহিনী পেজারের ব্যাটারিতে বিস্ফোরক রেখে এসেছিল। সূত্রের খবর, লেবাননের সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী হিজবুল্লা তাইওয়ানে ৫০০০ পেজার তৈরির অর্ডার দিয়েছিল। মোসাদ সেই পেজারেই অল্প মাত্রায় বিস্ফোরক ভরে এসেছিল।
সংবাদসংস্থা রয়টার্সকে লেবাননের এক অধিকর্তা জানিয়েছেন, ওই পেজারে এমন বিস্ফোরক রাখা ছিল, যা কোডের মাধ্যমে অ্যাক্টিভেট হয়। মঙ্গলবার ওই কোড পাঠাতেই সমস্ত পেজারে একসঙ্গে বিস্ফোরণ হতে থাকে। মনে করা হচ্ছে, মোসাদ পেজারের ভিতরে এমন বোর্ড ঢুকিয়ে দিয়েছিল, যাতে বিস্ফোরক জাতীয় কিছু ছিল। প্রতি পেজারে ৩ গ্রামেরও কম পরিমাণে বিস্ফোরক ভরা ছিল। পরিমাণ কম হওয়ায়, কোনও স্ক্য়ানার বা যন্ত্রে এই বিস্ফোরক ধরা পড়েনি।
মনে করা হচ্ছে, এমন কোনও বিস্ফোরক রাখা ছিল যা ওই যন্ত্রের ব্যাটারির তাপমাত্রা বাড়িয়েছিল, যার জেরে বিস্ফোরণ ঘটে। মোসাদ বেশ কয়েক মাস ধরেই এই ষড়যন্ত্র করেছিল বলে জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ইজরায়েল আগেও এইভাবে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল। ১৯৯৬ সালে হামাস নেতা ইয়াহা আয়াসকে খুন করার জন্য মোবাইল ফোনে ১৫ গ্রাম আরডিএক্স বিস্ফোরক রেখেছিল। হামাস নেতা ফোন করা মাত্রই বিস্ফোরণ হয়।