বার্লিন: প্রায় রোজই মশার কামড় (Mosquito Bite) খাই আমরা। অনেক সময় মশার কামড় থেকে ডেঙ্গি, চিকুনগুনিয়া বা ম্যালেরিয়ার মতো সংক্রমণেও আক্রান্ত হন অনেকে। কিন্তু মশার কামড়ে কেউ কোমায় (Coma) চলে গিয়েছে, এমন কথা শুনেছেন কখনও? অবিশ্বাস্য লাগলেও, এটাই সত্যি। মশার একটা কামড় খেয়েই এক মাসের জন্য কোমায় চলে গিয়েছিলেন ২৭ বছরের এক যুবক। ৩০টি অস্ত্রোপচারের পর অবশেষে তাঁর জ্ঞান ফেরে। তবে এখনও অবধি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠেননি ওই যুবক।
জার্মানির রোডারমার্কের বাসিন্দা সেবাস্টিয়ান রটসকে। ২০২১ সালে তাঁকে মশা কামড়ায়। প্রথমে কিছু টের না পেলেও, কিছুদিনের মধ্যেই সেই কামড়ের ফল একে একে পেতে থাকেন। প্রথমেই সাধারণ ফ্লুয়ের উপসর্গ দেখা দেয়। এরপর লিভার, কিডনি, হার্টের নানা সমস্যা দেখা যায় একে একে। তাঁর শারীরিক অবস্থা এতটাই জটিল হয়ে যায় যে, হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। পরপর লিভার, কিডনি, হার্ট ও ফুসফুসে ফেলিওর হয়। কোমায় চলে যান তিনি। ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটেই চার সপ্তাহ কাটে।
জানা গিয়েছে, যে মশাটি সেবাস্টিয়ানকে কামড়েছিল, তা এশিয়ান টাইগার মশা। সাধারণত এই মশা জার্মানিতে পাওয়া না গেলেও, বর্তমানে দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে এই মশার সংখ্যা। এই মশা থেকেই এনসেফালাইটিস, জিকা সংক্রমণ, চিকুনগুনিয়া, ডেঙ্গির মতো সংক্রমণ হতে পারে। ওই মশার কামড়েই সেবাস্টিয়ানের রক্তে বিষক্রিয়া হয় এবং কোমায় চলে যান। শরীরের একাধিক জায়গায় পচন ধরে, স্কিন ট্রান্সপ্ল্যান্টও করতে হয় তাঁকে।
সেবাস্টিয়ান বলেন, “আমি বিদেশে যাইনি। ফলে এশিয়ান টাইগার মশাটি আমাকে জার্মানিতেই কামড়েছিল। এরপরই দ্রুত অবস্থার অবনতি হতে থাকে। সম্পূর্ণ শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন তিনি, হেঁটে বাথরুম অবধি যাওয়াও কার্যত অসম্ভব হয়ে ওঠে। জ্বরের কারণে খাওয়া-দাওয়াও বন্ধ হয়ে যায়। ভেবেছিলাম আমার জীবন হয়তো শেষ হয়ে যাবে।”
তিনি আরও বলেন, “একদিন হঠাৎ দেখি, আমার প্যান্ট সম্পূর্ণ ভিজে গিয়েছে। বাম দিকের উরুতে বড় ঘা দেখা দেয়।”
৩০টি অস্ত্রোপচারের পর তাঁর পায়ের দুটি আঙুল বাদ দিতে হয়। ঘায়ের জায়গায় স্কিন ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হয়। এতকিছুর পরও চিকিৎসকদের কাছে কৃতজ্ঞ সেবাস্টিয়ান, কারণ তারা যদি দ্রুত বুঝতে না পারতেন এশিয়ান টাইগার মশার কামড়ের বিষয়টি, তবে হয়তো এতদিন জীবিতও থাকতেন না তিনি।