নয়া দিল্লি: সাফল্যের নয়া মাইলফলক ছুঁল মেঘা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ইনফ্রাস্টাকচার লিমিটেড (MEIL)। মঙ্গোলিয়ায় বিশ্বমানে ক্রুড তেল রিফাইনারি প্ল্য়ান্ট তৈরির চুক্তি স্বাক্ষর করল মেঘা ইঞ্জিনিয়ারিং। ৬৪৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে। এটা মঙ্গোলিয়ায় (Mongolia) মেঘা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় প্রকল্প। এই নতুন প্রকল্পের অধীনে মঙ্গোলিয়ায় প্রথম গ্রিনফিল্ড মঙ্গোল ওয়েল রিফাইনারি তৈরি হবে।
হায়দরাবাদের ইঞ্জিনিয়ারিং সংস্থা মেঘা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ইনফ্রাস্টাকচার লিমিটেডের সঙ্গে মঙ্গোলিয়ার চুক্তি হয়েছে। এ দিন মঙ্গোলিয়ার উলানবাতারে মেঘা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রেসিডেন্ট পি রাজেশ রেড্ডি ও মঙ্গোল রিফাইনারি সংস্থা এলএলসির এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর ডঃ আলতান্টসেটসেগ দাসাদাভা এই চুক্তি স্বাক্ষর করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মেঘা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ইনফ্রাস্টাকচার লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর পিভি কৃষ্ণ রেড্ডি সহ দুই দেশের একাধিক শীর্ষকর্তা।
এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে মেঘা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ইনফ্রাস্টাকচার লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর পিভি কৃষ্ণ রেড্ডি বলেন, “গ্লোবাল হাইড্রোকার্বন সেক্টরে মেঘা ইঞ্জিনিয়ারিং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আপস্ট্রিম, মিডস্ট্রিম ও ডাউনস্ট্রিম অপারেশন ও দেশ-বিদেশে নানা প্রকল্প নির্দিষ্ট সময়ে পূরণ করার রেকর্ড রয়েছে। এই নতুন প্রকল্প মঙ্গোলিয়ায় আমাদের কোম্পানির তৃতীয় প্রকল্প।”
মেঘা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের এই প্রকল্পের অধীনে মঙ্গোলিয়ায় প্রথম গ্রিনফিল্ড মঙ্গোল ওয়েল রিফাইনারি তৈরি করা হবে। ইপিসি-২, যার অধীনে অপেন আর্ট ইউনিট, অফসাইট, প্ল্যান্ট তৈরির কাজও তত্ত্বাবধান করছে মেঘা ইঞ্জিনিয়ারিং। এই প্রকল্পের মূল্য ৫৯৮.৯০ মিলিয়ন ডলার। এর পাশাপাশি ইপিসি-৩’র অধীনে বিদ্যুৎ প্ল্যান্টও তৈরি করা হবে, যার মূল্য ১৮৯.৯০ মিলিয়ন ডলার। ইপিসি-৪ প্রকল্পের মূল্য় ৬৪৮ মিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ তিনটি প্রকল্প মিলিয়ে মোট খরচ হবে ১.৪৩৬ বিলিয়ন ডলার।
মেঘা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তরফে জানানো হয়েছে, এই প্রকল্পগুলি তৈরিতে বিশ্বমানের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। মেঘা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ইনফ্রাস্টাকচার লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর পিভি কৃষ্ণ রেড্ডি বলেন, “সমস্ত ক্ষেত্রেই মেঘা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের উপস্থিতি রয়েছে, যা আধুনিক সমাজ গঠনের মেরুদণ্ড হিসাবে কাজ করছে। এই প্রকল্পগুলিতে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন হবে। এই প্রকল্প মঙ্গোলিয়ার আর্থিক উন্নয়ন ও শক্তি সুরক্ষাকে যেমন সমর্থন করছে, তেমনই ভারত ও মঙ্গোলিয়ার অংশীদারী সম্পর্ককেও মজবুত করবে।”
মেঘা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তরফে জানানো হয়েছে, এই নতুন প্রকল্পের সঙ্গে শুধু অর্থনৈতিক মূল্য়বোধই জড়িয়ে নেই, একইসঙ্গে এই প্রকল্প তেল আমদানিতে মঙ্গোলিয়ার রাশিয়ার উপরে নির্ভরশীলতাও কমাবে। এরফলে আন্তর্জাতিক তৈল বাজারের ওঠানামা ও অনিশ্চয়তাও অনেকটাই কমবে। এই প্রকল্পে একদিকে যেমন কর্মসংস্থান তৈরি হবে, তেমনই অন্যান্য ছোট শিল্পও তৈরি করতে সাহায্য করবে। এতে ভবিষ্যতে মঙ্গোলিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে।
৬৪৮ মিলিয়ন ডলারের এই ইঞ্জিনিয়ারিং, অধিগ্রহণ ও নির্মাণ (EPC) চুক্তির অধীনে মেঘা ইঞ্জিনিয়ারিং মঙ্গোলিয়ায় ডিজেল হাইড্রোট্রিটাপ ইউনিট, হাইড্রোক্রাকার ইউনিট, এমএস ব্লক, ভিজব্রেকার ইউনিট, হাইড্রোজেন জেনারেশন ইউনিট, সালফার ব্লক. এলপিজি ট্রিটিং ইউনিট, স্যাটেলাইট রক রুম ও সাব স্টেশন তৈরি করা হবে।
মঙ্গোল রিফাইনারি প্রকল্প হল দুই দেশের সরকারের উদ্যোগে স্বাক্ষরিত চুক্তি। এই প্রকল্প সম্পূর্ণ হয়ে গেলে বার্ষিক ১.৫ মিলিয়ন টন ক্রুড তেল উৎপাদিত হবে, যা মঙ্গোলিয়ার গ্য়াসোলিন, ডিজেল, এভিয়েশন জ্বালানি ও এলপিজির চাহিদা পূরণ করবে।
AA+ ক্রেডিট রেটিং প্রাপ্ত মেঘা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ইনফ্রাস্টাকচার লিমিটেড হল ভারতের প্রথম বেসরকারি সংস্থা, যা বিশ্বজুড়ে আধুনিক ওয়েল ড্রিলিং রিগ তৈরি করে। বেলজিয়াম, ইটালি, চিলি ও আমেরিকার হিউস্টনে ওয়েল রিগ তৈরি করেছে মেঘা ইঞ্জিনিয়ারিং। এবার পূর্ব মঙ্গোলিয়াতেও ওয়েল রিগ তৈরি করতে চলেছে মেঘা ইঞ্জিনিয়ারিং। মঙ্গোলিয়ার প্রতিকূল পরিবেশে এই প্রকল্প অত্য়ন্ত চ্যালেঞ্জিং বলেই জানানো হয়েছে।