লন্ডন: দিনের পর দিন কাটছে না খেয়েই। কখনও আধ বেলা খেয়ে, কখনও আবার সারাদিনই কাটছে শুধু জল খেয়ে। না, ভিখারি বা হত দরিদ্র নন কেউই, কিন্তু মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে না খেয়ে থাকার মতো কঠোর সিদ্ধান্তই নিতে হচ্ছে সাধারণ মধ্যবিত্ত মানুষকে। ব্রিটেনের লক্ষাধিক মানুষের রোজনামচা এখন এমনই। ব্রিটেন সরকার ব্যবহারযোগ্য শক্তির দামের উপর নিয়ন্ত্রণ জারি করতেই আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই জ্বালানির চরম অভাব দেখা দিতে চলেছে।
চলতি বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে আর্থিক সঙ্কট সামাল দিতেই হিমশিম খাচ্ছে ব্রিটেন। নতুন প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের প্রতিশ্রুতি দিলেও, তাঁর প্রকাশিত বাজেটে মূল্যবৃদ্ধি কমার বদলে আরও বেড়ে গিয়েছে। গত সেপ্টেম্বরেই ব্রিটেনের মূল্যবৃদ্ধি ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। হু হু করে বাড়ছে খাদ্য দ্রব্য়ের দাম। এই পরিস্থিতিতে বেঁচে থাকার জন্য অধিকাংশ মানুষই না খেয়ে বা আধ-পেটা খেয়ে দিন কাটানোর মতো চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সম্প্রতিই একটি কনজিউমার গ্রুপ ৩হাজারেরও বেশি মানুষের উপরে সমীক্ষা চালিয়ে জানতে পেরেছে, ব্রিটেনের অর্ধেকেরও বেশি পরিবার তাদের খাবার খাওয়ার ধরন ও পদ্ধতিতে আমূল পরিবর্তন এনেছে। কেউ দৈনিক খাবারের পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছেন। কেউ আবার এক বেলা না খেয়েই কাটাচ্ছেন। ৮০ শতাংশ মানুষই দৈনিক চাহিদা পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় খাবার কেনার অর্থটুকু জোগাড় করতে পারছেন না।
ব্রিটেন সরকার শক্তির দামেও সীমা বেধে দেওয়ায়, অধিকাংশ মানুষই বাড়ি গরম রাখার জন্য হিটার ব্য়বহার করতে পারবেন না। সামনেই শীতের মরশুমে কীভাবে তারা হিটার ছাড়া দিন গুজরান করবেন, তা ভেবেই চিন্তিত সাধারণ মানুষ। অনাহার-শীতেই কী মৃত্যুবরণ করতে হবে? এই প্রশ্নই এখন ব্রিটেনবাসীর মনে।