Bangla NewsWorld Modi in Australia: Prime Minister Narendra Modi at Sydney event
PM Narendra Modi in Australia: ভারত ‘গণতন্ত্রের জননী ‘, রাষ্ট্রকে এক পরিবার হিসাবে দেখা হয়: মোদী
সিডনিতে অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসকারী ভারতীয়দের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানেস। ওই অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে তাঁর ‘বন্ধু’ মোদীকে ‘দ্য বস’ বলে সম্বোধন করেন অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী
Follow Us
সিডনি: জাপান ও পাপুয়া নিউ গিনি সফর সেরে সোমবার রাতেই অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বিমানবন্দরে নামার পরই উষ্ণ অভ্যর্থনায় ভেসেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। সে দেশে বসবাসকারী ভারতীয় এবং অস্ট্রেলিয়া সরকার অভিবাদন জানিয়েছেন মোদীকে। এর পর বিনিয়োগ টানার লক্ষ্যে সে দেশের প্রথম সারির একাধিক শিল্পপতির সঙ্গে বৈঠক করেছেন মোদী। এর পর তিনি যোগ দিয়েছেন সে দেশে ভারতীয়দের একটি অনুষ্ঠানে। মোদী আসার পর থেকেই ওই অনুষ্ঠান হল ছিল কানায় কানায় পূর্ণ।
সিডনিতে অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসকারী ভারতীয়দের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানেস। ওই অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে তাঁর ‘বন্ধু’ মোদীকে ‘দ্য বস’ বলে সম্বোধন করেন অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রী।
নমস্তে অস্ট্রেলিয়া- এই বলেই সিডনির অনুষ্ঠানে বক্তৃতা শুরু করলেন মোদী। সে দেশের বাসিন্দা ও সে দেশে বসবাসকারী ভারতীয়দের ধন্যবাদ জানালেন মোদী।
মোদী বক্তৃতা শুরু পরই উল্লাস ধ্বনি দিতে থাকেন সেখান উপস্থিত দর্শকরা। সিডনির হল মুখরিত হয় ‘মোদী মোদী’ ধ্বনিতে।
সিডনিতে ফের হাজির হতে পেরে খুব আনন্দিত। আমি একা নই। প্রধানমন্ত্রী আলবানেসজি আমার সঙ্গে আছে। ব্যস্ত সময়সূচি থেকে প্রধানমন্ত্রী আমার অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকায় আমি সম্মানিত। এই উপস্থিতি ভারতীয়দের প্রতি অস্ট্রেলীয়য় প্রধানমন্ত্রীর ভাসবাসা ব্যক্ত করছে।
অস্ট্রেলীয় প্রশাসনে প্রবাসী ভারতীয়দের শীর্ষ পদে বসা নিয়ে অভিনন্দন জানালেন মোদী। পার্থ শহরে ভারতীয় সৈনিকের নামে রাস্তার নামকরণের প্রসঙ্গের উল্লেখ মোদীর।
একটা সময় ছিল যখন বলা হত ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার সম্পর্ক থ্রি-সি নির্ধারণ করে। এই থ্রি-সি হল কমনওয়েলথ, ক্রিকেট ও কারি। এখন বলা হয় ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার সম্পর্ক থ্রি-ডির উপর নির্ভর করে। এই থ্রি-ডি হল ডেমোক্রেসি, ডায়াস্পোরা এবং দোস্তি। কিছু লোক এমনও বলেন, ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার সম্পর্ক থ্রি-ই এর উপর দাঁড়িয়ে। এনার্জি, ইকোনমি এবং এডুকেশন। কখনও সি, কখনও ডি, কখনও ই। কিন্তু ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার সম্পর্ক এর থেকে ও উপরে। এই সম্পর্কের সবথেকে বড় ভিত্তি পারস্পরিক বিশ্বাস ও পারস্পরিক সম্মান।
অস্ট্রেলিয়ার দেড় কোটি বেশি নাগরিক ভারতীয়। আমাদের মধ্যে ভৌগলিক দূরত্ব থাকলেও ভারত মহাসাগর আমাদের জুড়ে রেখেছে। আমাদের জীবনযাত্রা আলাদা হলেও যোগা আমাদের জুড়ে। ক্রিকেট তো আমাদের যোগাযোগ নিবিড়।
আমাদের উৎসব পালন আলাদা হতে পারে। কিন্তু আমাদের দিওয়ালির রোশনি আমাদের এক করেছে।
অস্ট্রেলিয়াবাসীর খুব বড় হৃদয়ের। ভারতের এই বিবিধকে খোলা হৃদয়ে গ্রহণ করেছে।
ভারতকে মাদার অব ডেমোক্রেসি বলেও উল্লেখ করেছেন মোদী।
আমাদের ক্রিকেটের সম্পর্ক ৭৫ বছর পেরিয়েছে। ক্রিকেটের মাঠে লড়াই যতই হোক। মাঠের বাইরে আমাদের বন্ধুত্ব আরও গভীর করে। এ প্রসঙ্গ অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারদের ভারতে আইপিএল খেলতে আসার কথাও উল্লেখ করেছেন মোদী।
ভাল বন্ধু শুধু সুখের নয়। সুখ-দুঃখ দুইয়েরই সঙ্গী হয়। শেন ওয়ার্নের প্রসঙ্গও উঠে আসে এই প্রসঙ্গে।
ভারতে উন্নত রাষ্ট্র দেখা স্বপ্ন আপনাদের মনে আছে। আমার মনেও একই স্বপ্ন। ভারতে ১৪০ কোটির স্বপ্ন এটাই। ভারত ট্যালেন্ট ফ্যাক্টরি।
ভারত কোন কোন ক্ষেত্রে বিশ্বের মধ্যে প্রথমসারিতে রয়েছে তার উল্লেখ করেন মোদী। সেই তথ্য তুলে ধরে উপস্থিত দর্শকদের থেকে উত্তর চান মোদী। মোদীর প্রশ্নের পরই উপস্থিত প্রবাসী ভারতীয়রা ‘ইন্ডিয়া’ বলে সমস্বরে উত্তর দেন।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্যাঙ্কিং সিস্টেম বিপদের মুখে দাঁড়িয়ে । ভারতের ব্যাঙ্কিং সিস্টেম বিশ্বে প্রশংসিত হচ্ছে।
আমরা দেশের সব গরিবের জন্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট করেছি। গত ৯ বছরে ৫০ কোটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলেছি। শুধু অ্যাকাউন্ট খোলা হয়নি। সরকারের সাহায্য পৌঁছয় তাতে।
আমরা সময়ের মতো নিজেদের এগিয়ে নিয়ে গিয়েছি। কিন্তু মূলগত জায়গা থেকে সরিনি। আমরা রাষ্ট্রকে একটা পরিবার বলে মানি। গোটা বিশ্বকে একই ভাবে দেখি।
ভারত গোটা বিশ্বকে একটা পরিবার মনে করে বলেই ডি২০ সম্মেলনে বলেছে, ওয়ান আর্থ, ওয়ান ফ্যামিলি, ওয়ান ফিউচার। অর্থাৎ এক পৃথিবী, এক পরিবার, এক ভবিষ্যত।
ভারত এমন দেশ যে ১০০-র বেশি দেশকে বিনামূল্য টিকা দিয়েছে। লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছে।
ভারতীয়রা যেখানেই থাকুক, সেখান মানবিক ভাব তাঁদের মধ্যে থাকে। যখনই কোনও সমস্যা আসে, ভারত সমাধানের জন্য এগিয়ে আসে।
ব্রিসবেনে শীঘ্রই তৈরি হবে ভারতীয় দূতাবাস। জানালেন মোদী।
ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার গভীর বন্ধুত্ব আস্থা দিচ্ছে।
আমি আপনাদের কাছে চাইছি- আপনারা যখনই ভারতে আসবেন, আপনাদের সঙ্গে কোনও না কোনও অস্ট্রেলীয় বন্ধু বা তাঁদর পরিবারকে ভারতে নিয়ে আসুন।
এর পরই মোদী ভারত মাতা কি জয় ধ্বনি তোলেন। তাতে গলা মেলান সেখানে উপস্থিত প্রবাসী ভারতীয়রা। সেই ধ্বনিতে মুখরিত হয় গোটা অনুষ্ঠান হল।