মস্কো: মঙ্গলবার (৬ জুন) ৩৪ বছরের নাটালিয়া ওস্কারকে ‘মিসেস রাশিয়া ২০২৩’ হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। এটা ‘মিস রাশিয়া’ সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা থেকে আলাদা। এই প্রতিযোগিতায় শুধুমাত্র বিবাহিত এবং সন্তান রয়েছে, এমন মহিলারাই অংশগ্রহণ করতে পারেন। এই বিশেষ সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় সেরার শিরোপা জিতেছেন রাশিয়ার সুদূর পূর্বের প্রান্তের প্রদেশ খবরভস্কের নাটালিয়া। কিন্তু, এই সাফল্যের পরও তাঁকে ইন্টারনেটে প্রবল ট্রোলিং-এর মুখে পড়তে হচ্ছে। এমনকি, তাঁর চেহারা নিয়ে কটাক্ষ করে এই প্রশ্নও তোলা হচ্ছে, “এই প্রতিযোগিতায় কি একজনই প্রতিযোগী ছিল?”
কেন হঠাৎ এমন কথা বলছেন নেটিজেনরা? ওই ইভেন্টে তোলা নাটালিয়ার একটি ছবিই এর মূল কারণ। নেটিজেনদের দাবি, নাটালিয়ার ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলের ছবিগুলিতে তাঁকে যতটাই সুন্দর লাগে, ইভেন্টে তোলা তাঁর আসল ছবিটিতে তাঁকে ততটাই খারাপ লাগছে। দুই ছবির মধ্যে আকাশ-পাতাল ফারাক। তিনি বেশ ছোটখাট, মুখে অত্যন্ত বেশি মেকআপ করেন, ঠোঁট খুব মোটা – এই ধরণের অনেক তীর্যক মন্তব্য করা হয়েছে তাঁর সম্পর্কে। কেউ কেউ বলেছেন, বেহিসেবি কসমেটিক সার্জারি করতে গিয়ে নাটালিয়ার এই হাল হয়েছে। এমনও বলা হয়েছে যে, “যদি তিনি বিজয়ী হন, তবে রানার আপদের ছবি দেখার কথা ভাবতেই আমার ভয় করছে।” আবার একজন বলেছেন, “রাশিয়া সবকিছু সম্পর্কে মিথ্যা বলে। এমনকি লুকস নিয়েও তারা মিথ্যা বলতে ছাড়ছে না।”
এই কঠোর ট্রোলিং-এর মুখে নাটালিয়ার পাশে দাঁড়িয়েছে খোদ মিসেস রাশিয়া ইভেন্টের আয়োজকরা। তাঁদের দাবি বাজে অ্যাঙ্গেল থেকে ছবিটা তোলা হয়েছে বলে নাটালিয়াকে ওই রকম লাগছে। আয়োজকদের একজন বলেছেন, “আমাদের অফিসিয়াল ফটোতে তাঁকে খুবই সুন্দর দেখাচ্ছে। ওই ছবিটি নিয়ে জনসাধারণের প্রতিক্রিয়া দেখে আমরা হতবাক হয়ে গিয়েছি। ওটা একটা খারাপ ছবি, খারাপ অ্যাঙ্গেল, লো অ্যাঙ্গেল থেকে তোলা। তিনি আসলে দেখতে একেবারে আলাদা। জুরির সবাই তাঁকে দেখেছেন এবং পছন্দ করেছেন।” এর আগে মিসেস রাশিয়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য বেশ কিছু মাপকাঠি বেঁধে দেওয়া ছিল। প্রতিযোগীদের ১৭৫ সেন্টিমিটারের বেশি লম্বা হতে হত। জামাকাপড়ের আকার স্মল সাইজ হতে হত। কিন্তু এইবার, যাতে সর্বস্তরের মহিলারা এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারেন, তার জন্য প্লাস-সাইজ মডেলদেরও স্বাগত জানানো হয়েছিল। তারপরও, নাটালিয়ার ওই ছবিটি নিয়ে বিতর্কের মুখে পড়ল আয়োজকরা।
তবে, পেশায় ইংরেজি শিক্ষক নাটালিয়া এই সব সমালোচনা, ট্রোলিং-কে একেবারে পাত্তাই দিচ্ছেন না। তিনি জানিয়েছেন, সারা জীবনে তিনি কোনও প্লাস্টিক সার্জারি করাননি। তিনি বলেছেন, “আমি নিজেই জানি যে, এই প্রতিযোগিতার জন্য আমি কতটা কঠোর পরিশ্রম করেছি। সারাদিন হিল জুতো পরে থেকেছি। মাত্র কয়েক ঘণ্টা ঘুমিয়ে কাটিয়েছি। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত রিহার্সালে দিতাম। কাজেই, কে কী বলল তাতে আমার কিছু যায় আসে না।”