ঢাকা: ছাত্র বিক্ষোভের চাপে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছাড়তে হয়েছে শেখ হাসিনাকে। এবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আওতায়, তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হল খুনের মামলা। ছাত্র বিক্ষোভ চলাকালীন, রাজধানী ঢাকার মহম্মদপুরে, আবু সায়েদ নামে এক মুদি-দোকানিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। সেই হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষিতেই আওয়ামি লিগ সভাপতি তথা সেই দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আরও ছয়জনের বিরুদ্ধে হত্যার মামলা দায়ের করা হল। শেখ হাসিনা ও বাকিদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ দায়ের করতে চেয়ে আবেদন করেছেন আমির হামজা নামে ওই দোকানির এক আত্মীয়। এদিন, ঢাকার এক আদালত সেই আবেদন গ্রহণ করে শেখ হাসিনা ও ওই ছয়জনের বিরুদ্ধে হত্যার মামলা দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছে।
মঙ্গলবার (১৩ অগস্ট) এই আদেশ দিয়েছেন, ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক, রাজেশ চৌধুরী। এদিনই মহম্মদপুর থানায় মামলাটি নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হাসিনা ছাড়াও এই মামলায় আরও অভিযুক্ত করা হয়েছে আওয়ামি লিগের দ্বিতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তি, তথা আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশের প্রাক্তন সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়েদুল কাদের, প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল এবং আরও চার প্রভাবশালী পুলিশ কর্তা। এই চার পুলিশ কর্তা হলেন, বাংলাদেশ পুলিশের প্রাক্তন মহাপরিদর্শক চৌধুরি আবদুল্লাহ আল-মামুন, ঢাকা মহানগর পুলিশের প্রাক্তন কমিশনার হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ ও যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার।
মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন, আন্দোলনকারীদের উপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছিল পুলিশ। ১৯ জুলাই মহম্মদপুরের বসিলা এলাকায়, এরকমই এক ঘটনায় ছাত্রদের এক শান্তিপূর্ণ মিছিলে নির্বিচারে গুলি চালিয়েছিল পুলিশ। সেই সময় রাস্তা পার হচ্ছিলেন মুদি দোকানদার আবু সায়েদ। মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। শেখ হাসিনা কোটা সংস্কার আন্দোলন কঠোর হাতে দমন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। আর ওই দুই মন্ত্রী এবং পুলিশ কর্তাদের নির্দেশেই গুলি চালানো হয়েছিল। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও তার পরবর্তী নৈরাজ্যর জের এখনও পর্যন্ত ৫৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে।
অন্যদিকে, এই আন্দোলনের সময় ভাইরাল হয়েছিল পুলিশের গুলির সামনে বুক পেতে দাঁড়ান শিক্ষার্থী আবু সাঈদের ছবি। গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছিল রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই শিক্ষার্থীর। ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মহম্মদ মনিরুজ্জামান এবং রংপুর রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক মহম্মদ আবদুল বাতেনকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। ১৬ জুলাই দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন আবু সাঈদ। ২২ বছর বয়সী আবু বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র ছিলেন। কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন তিনি।
আরও খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Tv9 বাংলা অ্যাপ (Android/ iOs)