Myanmar: নাচ-গান করছিল শিশুরা, আকাশপথে নেমে এল মৃত্যু! ১০০ নিরস্ত্রের হত্যায় অভিযুক্ত মায়ানমার সেনা

TV9 Bangla Digital | Edited By: অমর্ত্য লাহিড়ী

Apr 12, 2023 | 5:38 PM

Myanmar military airstrikes: মায়ানমার সেনার আকাশপথে হামলায় মৃত্যু হল শিশু-সহ শতাধিক ব্যক্তির।

Myanmar: নাচ-গান করছিল শিশুরা, আকাশপথে নেমে এল মৃত্যু! ১০০ নিরস্ত্রের হত্যায় অভিযুক্ত মায়ানমার সেনা
গ্রামীন হল লক্ষ্য করেই আকাশপথে হামলা চালাল সেনা

Follow Us

নেইপিয়াদো: এক অনুষ্ঠান উপলক্ষে গ্রামের হলে সমবেত হয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। নাচ-গান পরিবেশন করছিল স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা। সেই গ্রামীন হল লক্ষ্য করেই আকাশপথে হামলা চালাল সেনা। এমনকি, প্রাণ ভয়ে ওই হল থেকে যখন বেরিয়ে আসছেন নিরস্ত্র সাধারণ মানুষ, তখনও তাদের উপর হামলা চালিয়ে গিয়েছে সেনা। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সব মিলিয়ে এই ঘটনায় বেশ কিছু শিশুসহ অন্তত ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। নক্কারজনক ঘটনাটি ঘটেছে সেনা শাসনের থাকা মায়ানমারের সাগাইং অঞ্চলে, চলতি সপ্তাহের কোনও একদিন। বুধবার (১২ এপ্রিল) এই ভয়ঙ্কর হামলার খবর প্রকাশ্যে এসেছে। মায়ানমার সেনার পক্ষ থেকেও এই হামলার কথা স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে। সেই দেশের গণতন্ত্রকামীরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার সংস্থার প্রধান, ভলকার তুর্ক জানিয়েছেন, এই হামলার খবরে তিনি ‘আতঙ্কিত’।

বছর দুই আগে, মায়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান ঘটেছিল। সেনার ক্ষমতা দখলের পর থেকেই গোয়া দেশে চূড়ান্ত অরাজকতা চলছে। সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু করেছেন গণতন্ত্রকামীদের একাংশ। তাদের মোকাবিলায় আকাশপথে একের পর এক হামলা চালাচ্ছে মায়নমার বাহিনী। সেই সময় থেকে এখনও পর্যন্ত সেনার হাতে অন্তত ৩,০০০ অসামরিক নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেন সেনা শাসনের বিরোধীরা। তবে, সাম্প্রতিক এই হামলা এর আগের সকল বর্বরতাকে ছাপিয়ে গিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। স্থানীয় সংবাদপত্র এবং গণতন্ত্রকামীদের দাবি, সাগাইং অঞ্চলের কানবালু টাউনশিপের পাজিগি গ্রামের কমিউনিটি হলে, সেনা শাসনের বিরোধীরা একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করেছিল। বহু সংখ্যায় সাধারণ মানুষ সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিল স্কুল শিক্ষার্থীরাও। ওই কমিউনিটি হলটিকে লক্ষ্য করেই আকাশপথে হামলা চালায় মায়ানমার সেনা।

সাগাইং অঞ্চল, মায়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সুচির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। সেনা শাসনে অবশ্য দলটিকে নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু, সাগাইং অঞ্চলে এখনও সক্রিয় দলের পুরোনো নেতারা। তাদের নেতৃত্বে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে এই অঞ্চলে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে উঠেছে। গত কয়েক মাস ধরেই এই অঞ্চলে বিদ্রোহীদের সঙ্গে সামরিক বাহিনীর তীব্র লড়াই চলছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনেরও বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু, এত নির্মম হামলা সম্ভবত এর আগে হয়নি। সাগাইং অঞ্চল থেকে বেশ কিছু ছবি ও ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। সেই ছবি-ভিডিয়োগুলিতে দেখা যাচ্ছে একের পর এক বাড়ির ধ্বংসাবশেষের মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে বহু মানুষের মৃতদেহ। তবে, এই ছবি ও ভিডিয়োগুলির সত্যতা যাচাই করা যায়নি। কাজেই, সেগুলি সাম্প্রতিক হামলার কিনা, তা নিশ্চিত করে বলা যাবে না।

হামলার পর ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে দেহ

তবে, মায়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বিগ্ন রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কমিশন। কমিশনের প্রধান ভলকার তুর্ক বলেছেন, “স্কুলশিশুরা নৃত্য পরিবেশন করছিল, সেইসঙ্গে ছিলেন অন্যান্য অসামরিক ব্যক্তিরা। কানবালু টাউনশিপের পাজিগি গ্রামের হলে এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন তাঁরা। যেভাবে একটি হেলিকপ্টার গানশিপ থেকে এরপর হল থেকে পালিয়ে আসা ব্যক্তিদের উপর গুলি চালানো হয়েছে, তাতে আমি আতঙ্কিত। আমি সব পক্ষকে তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা অসামরিক জনগোষ্ঠীকে হামলার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য সমস্ত সম্ভাব্য সকল সতর্কতা অবলম্বন করার আহ্বান জানাচ্ছি। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার মধ্যে বা এর কাছাকাছি সামরিক হামলা করা থেকে বিরত থাকতে হবে। সামরিক বাহিনী এবং সহযোগী মিলিশিয়া বাহিনী ২০২১ সলের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে একের পর এক মানবাধিকার লঙ্ঘন করে চলেছে। এর কিছু কিছু মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধ বলে গণ্য করা যেতে পারে। এখন আন্তর্জাতিক বিচার প্রক্রিয়া চলছে, একদিন এই ধরনের অপরাধের মায়ানমারের সামরিক নেতৃত্বকে দায়বদ্ধ করা হবে বলে আমি নিশ্চিত।”

Next Article