ব্রাসেলস: পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একাংশ এবং তালিবানদের একাংশ মাদকপাচারের সঙ্গে যুক্ত। ন্যাটোর রিপোর্টে উঠে এসেছে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য। ন্য়াটোর ডিফেন্স এডুকেশন এনহ্যান্সমেন্ট প্রোগ্রামএর রিপোর্টে বিষয়টির উল্লেখ করা হয়েছে। ২০২২ সালের সেই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, “পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানে মাদক ব্যাবসা চালানো সম্ভব হচ্ছে সেনাবাহিনীর সহায়তায়। পাকিস্তানের সেনা গোয়েন্দা আইএসআই বিভিন্ন জিহাদি সংস্থার সঙ্গে যৌথ অভিযানে লিপ্ত থাকে। এবং মাদক পাচার ও তৎসংক্রান্ত কার্যকলাপে সাহায্যও করে থাকে।” সেই রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠীর রোজগারের অন্যতম উৎস মাদক কারবার। এর জেরে সারা বিশ্বে মাদক সন্ত্রাস ছড়িয়ে পড়ছে।
ওই রিপোর্টে জানানো হয়েছে, মাদক পাচারে পাকিস্তানের ভূমিকা প্রমাণ মেলে বিভিন্ন দেশে কত পাকিস্তানি নাগরিক গ্রেফতার হয়েছে তার হিসাবে। গত কয়েক বছর ধরে ভারতেও মাদক পাচার চক্র তৈরিতে পাকিস্তানের ভূমিকার উল্লেখ করা হয়েছে সেই রিপোর্টে। বিশেষত কাশ্মীর উপত্যকাকে এ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে জানা গিয়েছে। মাদক ও অবৈধ অস্ত্র পাচার চক্রে পাক যোগের উল্লেখ রয়েছে ওই রিপোর্টে।
এই রিপোর্টের অন্যতম লক্ষ্য ছিল, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানে মাদক পাচার এবং সন্ত্রাসবাদের শিকড় প্রোথিত রয়েছে, সে বিষয়ে তথ্য। ইউনাইটেড নেশনস অফিস অব ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইমের নভেম্বর ২০২১ সালের রিপোর্ট অনুসারে, সারা বিশ্বের ওপিয়াম উৎপাদনের ৮৫ শতাংশই হয় আফগানিস্তানে। ওপিয়াম, মরফিন এবং হেরোইন থেকে আফগানিস্তানের জিডিপির ৯ থেকে ১১ শতাংশ আসে বলে উল্লেখ করা হয়েছে ওই রিপোর্টে। সম্প্রতি মেথামফেটামিন এবং ক্যানাবিসের উৎপাদনও বেড়েছে আফগানিস্তানে।
এই আফগানিস্তানের সঙ্গে প্রায় ২ হাজার ৪০০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে পাকিস্তানের। এই সীমান্তই মাদক কারবারের করিডর হিসাবে ব্যবহৃত হয় বলে অভিযোগ। আফগানিস্তানে তৈরি মাদকের ৪০ শতাংই পাকিস্তান হয়ে বিশ্বের বাজারে ছড়িয়ে বলে জানানো হয়েছে ওই রিপোর্টে। আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা এবং সন্ত্রাসের অর্থযোগানের ক্ষেত্রে এই মাদকপাচার ভয়াবহ সমস্যা বলে জানানো হয়েছে ন্যাটোর রিপোর্টে।