উহান: অতিমারি দ্বিতীয় ঢেউ অতিক্রম করে তৃতীয়ের পথে। বিশ্বজোড়া বহাল আতঙ্ক। বছর দেড়েক এ ভাবে কেটে গেলেও কোভিডের উৎস নিয়ে দোলাচল এখনও কাটেনি। চিন বারবার অভিযোগ উড়িয়েছে করোনা ছড়ানোর। আর ততবারই আরও বেশি করে চিনকে দুষেছে আমেরিকা। তবে বাদুড়ই সার্স কোভিডের উৎস, সেখান থেকেই রোগ মানুষের দেহে ছড়িয়েছে, এ ব্যাপারে মোটের উপর সহমত গবেষকদের সিংহভাগ। সেই বিতর্কে ঘি ঢালল চিবের ল্যাবে জীবন্ত বাদুড়ের ভিডিয়ো। প্রথম থেকেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দাবি করে আসছিল, চিনের ল্যাবে পরীক্ষা হয়নি জীবন্ত বাদুড় নিয়ে।
তাদের এই দাবিকে নস্যাৎ করে দিল অস্ট্রেলীয় সংবাদ মাধ্যমের একটি ভিডিয়ো। ২০১৭ সালে এই ভিডিয়ো প্রকাশ করেছিল চিনের অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস। তাতে দেখা যাচ্ছে, গবেষণাগারের খাঁচায় ভরে রাখা হয়েছে একঝাঁক বাদুড়। সেগুলিকে চিমটে দিয়ে পোকা খাওয়াচ্ছেন গবেষকরা। তাঁদের আপাদমস্তক ঢাকা। এক গবেষকের টুপির উপর ঝুলে রয়েছে একটি বাদুড়। নিরাপত্তা বিধি মেনে কীভাবে পরীক্ষানিরীক্ষা করা হয়, সেটা বলাই ছিল ভিডিওর লক্ষ্য।
BREAKING: New footage uncovered of live bats within Wuhan lab, after denials pic.twitter.com/oXWrUqqM4E
— AntifaBook.com (@JackPosobiec) June 13, 2021
তা হলে উহানের ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজিতে তদন্তে যাওয়া হু-র প্রতিনিধিরা কেন বললেন, সেখানে জ্যান্ত বাদুড় নিয়ে পরীক্ষা হয় না? সেই দলে ছিলেন প্রাণিবিদ পিটার ড্যাজাক। তাঁর বক্তব্য ছিল, বাদুড় গবেষণাগারে রাখা হয়নি। ওই প্রাণীর নমুনা সংগ্রহ করে গবেষণাগারে পাঠানো হয়েছিল। তিনি একধাপ এগিয়ে চিনকে ক্লিনচিট দিয়ে বলেন, “উহানে বাদুড় নিয়ে গবেষণার প্রচার ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছু নয়।” যদিও পরে ড্যাজাক পুরো ভিন্ন বয়ান দেন।
হু-র দাবি যাই হোক, ২০১৭-র যে ভিডিও সামনে এসেছে সেটি তো ভুল নয়। কারণ কোনও গোপন ক্যামেরায় নয়, সেই ভিডিয়ো চিনা সরকারি সংস্থার প্রকাশিত ছবি। বাদুড় থেকে ভাইরাস ছড়িয়েছে কি না, তা প্রমাণ করতে এখনও সময় লাগতে পারে। কিন্তু উহানের গবেষণাগারে খাঁচায় পোরা জীবন্ত বাদুড় যে আছে, তা নিশ্চিত হয়ে গেল এই ভিডিয়ো থেকে। বিশেষজ্ঞদেক মতে, সেই বাদুড় গবেষকদের শখের পোষ্য নয়। পরীক্ষানিরীক্ষা করার জন্যই গবেষণাগারে ঠাঁই পেয়েছে। তা হলে কেন আগ বাড়িয়ে চিনকে ক্লিনচিট দিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা? উঠছে প্রশ্ন।
আরও পড়ুন: ‘লং কোভিডে’ ভুগছেন উপসর্গহীন রোগীরা, ১ মাস বাদেও থাকছে মৃত্যুর সম্ভাবনা, দাবি গবেষণায়