লন্ডন: বিকশিত ভারতের লক্ষ্যে এগোনোর পথে, দ্বিতীয় মোদী সরকারের অন্যতম পদক্ষেপ ছিল, ভারতবাসীর মন থেকে দাসত্বের মনোভাবকে দূর রার প্রয়াস। আর এই প্রয়াসের অন্যতম অংশ হিসেবে ব্রিটিশদের লুঠ করে নিয়ে যাওয়া ধনসম্পদ ভারতে ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। গত কয়েক বছরে এই ধরনের বহু সম্পদই ফিরে এসেছে আমাদের দেশে। রবিবার (৯ জুন), যখন তৃতীয়বারের জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন নরেন্দ্র মোদী, সেই একই দিনে এল এক দারুণ সুখবর। ভারত থেকে লুঠ করে নিয়ে যাওয়া এক অতি মূল্যবান সম্পদ ফিরিয়ে দিতে রাজি হল ব্রিটেনের প্রখ্যাত অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি। ব্রিটেনের ভারতীয় হাইকমিশন থেকে এর জন্য দাবি জানানোহয়েছিল।
ব্রিটিশ শাসন চলাকালীন কোনও এক সময়, এক হিন্দু সাধুর একটি ৫০০ বছরের পুরানো ব্রোঞ্জের ভাস্কর্য ভারত থেকে লুঠ করে নিয়ে গিয়েছিল ইংরেজরা। প্রায় ৬০ সেন্টিমিটার উচ্চতার ব্রোঞ্জের মূর্তিটি এতদিন পড়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাশমোলিয়ান মিউজিয়ামের প্রদর্শনীতে। ভারতীয় হাইকমিশনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, ষোড়শ শতকের মূর্তিটি দক্ষিণ ভারতের তামিল কবি ও সাধু, তিরুমানকাই আলওয়ারের। ভারতীয় হাই কমিশন জানায়, ১৮৯৭ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক বাহিনী ভারতে বাণিজ্য প্রতিরোধের মুখে পড়ে, সামরিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল। আর তার জন্য যে খরচ হয়েছিল, তা তারা তুলে নিয়েছিল ভারত থেকেই। ২০০-রও বেশি প্রত্নবস্তু লুঠ করে নিয়েছিল তারা। লন্ডনে সেগুলি বিক্রি করে সামরিক অভিযানের খরচ মেটানো হয়েছিল। সেই সময়ই এক ভারতীয় মন্দির থেকে ব্রিটিশরা মূর্তিটি লুঠ করে নিয়ে এসেছিল। তাই মূর্তিটি ভারতকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছিল কমিশন।
অ্যাশমোলিয়ান মিউজিয়াম, এক বিবৃতিতে বলেছে, “২০২৪ সালের ১১ মার্চ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্সিল, অ্যাশমোলিয়ান মিউজিয়াম থেকে ষোড়শ শতকের সাধু, তিরুমানকাই আলওয়ারের একটি ব্রোঞ্জের ভাস্কর্য ফেরত দেওয়ার বিষয়ে ভারতীয় হাই কমিশনের দাবি মেনে নিয়েছে। এই সিদ্ধান্ত এখন অনুমোদনের জন্য চ্যারিটি কমিশনে জমা দেওয়া হবে।”
তিরুমানকাই আলওয়ার হলেন দক্ষিণ ভারতের ১২ জন আলওয়ার সাধুর শেষতম। আলওয়াররা হলেন বৈষ্ণব সাধক। দুর্দান্ত শ্লোক রচনার দক্ষর জন্য তাঁকে সবথেকে জ্ঞানী আলওয়ার সাধু বলে মনে করা হয়। প্রথম জীবনে তিনি ছিলেন একজন সামরিক সেনাপতি। পরে ডাকাতিও করতেন। সবশেষে বৈষ্ণবধর্মে ধর্মান্তরিত হয়ে সাধকে ও কবিতে পরিণত হন।