ইসলামাবাদ: বর্তমানে, দেশের ইতিহাসের সবথেকে ভয়ঙ্কর বন্যা পরিস্থিতির মোকাবিলা করছে পাকিস্তান। জলবায়ু বিশেষজ্ঞদের দাবি, জলবায়ু পরবর্তনের কারণেই এই ভয়াবহ বন্যার মুখে পড়েছে পাকিস্তান। তবে, শুধুমাত্র জলবায়ু পরিবর্তনের জন্যই এই রকম পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা মানছে না আম পাকিস্তানিরা। প্রশ্নের মুখে পড়েছে দেশের বাঁধগুলির শোচনীয় অবস্থা। বিশেষ করে সিন্ধু নদের উপর নির্মাণরত দিয়ামের-ভাষা বাঁধকে কেন্দ্র করে নজিরবিহীন কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছে। পাকিস্তানের সংসদীয় বিষয়ক কমিটির সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী বাঁধটির নির্মাণ সম্পূর্ণ করার জন্য জনসাধারণের কাছ থেকে ৪ কোটি মার্কিন ডলার সংগ্রহ করা হয়েছিল। কিন্তু, সেই তহবিল সংগ্রহের বিজ্ঞাপন দেওয়ার পিছনেই পাক সরকার খরচ করেছে ৬ কোটি ৩০ লক্ষ মার্কিন ডলার।
কীভাবে ঘটল এই ঘটনা? জানা গিয়েছে এই বাঁধটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল গত শতাব্দীর আশির দশকে। তৈরি হয়ে গেলে, বাঁধটি বন্যা, জলবিদ্যুৎ উৎপাদন-সহ পাকিস্তানের অনেক সমস্যার সমাধান করবে বলে দাবি করে পাক সরকার। কিন্তু, পরিবেশগত কারণ এবং ক্রমশ বাড়তে থাকা খরচের কারণে, বাঁধটি তৈরির কাজ এখনও শেষ হয়নি। ২০১৮ সালে বাঁধটির নির্মাণকাজ দ্রুত শেষ করার লক্ষ্যে, তৎকালীন পাক প্রধান বিচারপতি সাকিব নিসার একটি গণ তহবিন স্থাপন করেছিলেন। ততদিনে বাঁধটি নির্মাণের খরচ বেড়ে ১৪০ কোটি মার্কিন ডলারে পৌঁছে গিয়েছিল।
Few clicks from site of Diamer Bhasha Dam. Seems like we’ll have it completed on time, insha Allah. pic.twitter.com/zabt3wp9zz
— Fahad Malik (@Fahad4014) January 1, 2021
সাকিব নিসার দাবি করেছিলেন ওই গণ তহবিল প্রয়োজনীয় বিপুল অর্থের জোগান দেবে। দেশের ক্রিকেটার, সঙ্গীত শিল্পী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষরাও সেই তহবিলে দান করেছিলেন। দেশের সরকারি কর্মচারী ও সেনা সদস্যরা তাঁদের বেতনের একটা অংশ দান করেছিলেন। তারপরও ৬৩০ কোটি মার্কিন ডলার কম পড়েছিল।
এরপরই বিচারপতি নিসার জানিয়েছিলেন, ওই গণ তহবিল বাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ করার জন্য স্থাপন করা হয়নি। তহবিলটি না কি স্থাপন করা হয়েছিল মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে। এরপরই বাঁধ নির্মাণের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ উঠতে শুরু করেছিল। আহসান ইবাল নামে এক পাক সাংসদ প্রথম দাবি করেন, বাঁধ তৈরির তহবিলে যত না অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছে, তার থেকে বেশি অর্থ খরচ করা হয়েছে সেই তহবিল স্থাপনের বিজ্ঞাপনে। এই অবস্থায় কবে ওই বাঁধটির নির্মাণকাজ শেষ হবে, তার কোনও দিশা পাচ্ছেন না পাকিস্তানিরা।