ইসলামাবাদ: টালমাটাল পরিস্থিতি পাকিস্তানে (Pakistan)। প্রধানমন্ত্রীর ইস্তফার দাবিতে অনাস্থা প্রস্তাব (No Trust Motion) এনেছিলেন বিরোধী নেতারা। রবিবারই পাকিস্তানের জাতীয় সংসদে আস্থা ভোট ছিল, কিন্তু ডেপুটি স্পিকার অনাস্থা প্রস্তাবকেই সংবিধান বিরোধী বলে প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছিলেন। এরপরই প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান (Imran Khan) পাকিস্তান পার্লামেন্ট ভেঙে নতুন করে নির্বাচনের দাবি জানান। প্রেসিডেন্ট সেই প্রস্তাব গ্রহণ করে সাংসদ ভেঙেও দেন। আগামী ৯০ দিনের মধ্যেই নির্বাচন হওয়ার কথা পাকিস্তানে। তবে এত সহজে হার মানতে নারাজ বিরোধীরাও। গতকালই তারা সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) দ্বারস্থ হন। দেশের শীর্ষ আদালতের তরফে সমস্ত আবেদনকারীদের নোটিস পাঠানো হয়েছে। সংসদ ভেঙে দেওয়া ও অনাস্থা প্রস্তাব বাতিল করে দেওয়ার বিরোধিতায় যে পিটিশনগুলি দাখল করা হয়েছে, আজ, সোমবার অবধি তার শুনানি স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে।
ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব বাতিল ও পাক পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার বিরোধিতা করে গতকালই পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি বলেন, “সরকার সংবিধান লঙ্ঘন করেছে। আমাদের অনাস্থা প্রস্তাবে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। বিরোধী জোট এত সহজে সংসদ ছেড়ে যাবে না। আমাদের আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছেন। যেকোনও প্রকারেই আমরা পাকিস্তানের সংবিধানকে রক্ষা করব। আজই সুপ্রিম কোর্টে শুনানির আর্জি জানাচ্ছি আমরা।”
এরপরই সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন, বার কাউন্সিল, প্রতিরক্ষা সচিব, অন্তর্বর্তী সচিব, পঞ্জাবের অ্যাডকেট জেনারেল ও সমস্ত রাজনৈতিক দলই সুপ্রিম কোর্টে পিচিশন দাখিল করে। অ্যাটর্নি জেনারেল খালিদ জাভেদ খানকেও নোটিস দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আর্জি পাওয়ার পরই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির অধীনে পাঁচ সদস্যের বেঞ্চের তরফে প্রতিরক্ষা সচিব ও অন্তবর্তী সচিবকে দেশের আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখার নির্দেশ দেন। দেশের সাধারণ মানুষকেও শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার কথা বলা হয়েছে।
একইসঙ্গে শীর্ষ আদালতের তরফে সরকারের সিদ্ধান্তে অন্তবর্তী স্থগিতাদেশের আর্জি খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। গতকাল পাকিস্তানের জাতীয় সংসদ ভেঙে দেওয়ার যাবতীয় রেকর্ডও চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সূত্রের খবর, সুপ্রিম কোর্টও দ্রুত নির্বাচনই চায়। শাসক-বিরোধী দলগুলিকে একসঙ্গে ডেকে আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতায় আসার কথা বলা হতে পারে।
যেহেতু সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে এবং আগামী ৯০ দিনের মধ্যে নতুন করে নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে, তাই মাঝের এই তিন মাস দেশে জরুরি অবস্থার ঘোষণা করা হতে পারে বা সেনাবাহিনীকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসা অবধি দেশের শাসনভার সামলানোর কথা বলা হতে পারে। সুপ্রিম কোর্টের কাছে আপাতত এই দুটি বিকল্পই রয়েছে।
এদিকে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, প্রথম শুনানিতেই কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌছতে পারবে না সুপ্রিম কোর্ট। যদি সেনাবাহিনীর হাতে দেশের শাসনভার তুলে দেওয়া হয়, তবে ইমরান খানের স্বপক্ষেই জনতার সমর্থন বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।