কলম্বো: চরমে উঠেছে শ্রীলঙ্কার আর্থিক সঙ্কট (Sri Lanka Crisis)। প্রশাসনের বিরুদ্ধেই বিক্ষোভ শুরু করেছেন দেশের মানুষ। এই অস্থির পরিস্থিতিতে দেশে শান্তি বজায় রাখতেই ইস্তফা দিলেন মন্ত্রিসভার ২৬ জন সদস্য। রবিবারই গভীর রাত অবধি মন্ত্রিসভার বৈঠক চলে। তারপরই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সে দেশের শিক্ষামন্ত্রী। যদিও প্রধানমন্ত্রী পদে থাকছেন মাহিন্দা রাজাপক্ষই (Mahinda Rajapaksa)। রবিবার বিকেলেই জল্পনা শোনা গিয়েছিল যে, প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের কাছে ইস্তফা জমা দিয়েছেন ছোট ভাই মাহিন্দা রাজাপক্ষ। কিন্তু রাতেই জানা যায়, ঠিক উল্টো ঘটনা ঘটেছে। গোটা মন্ত্রিসভা ইস্তফা দিলেও, প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন রয়েছেন মাহিন্দা রাজাপক্ষ।
আজ, সোমবার ভোর ৬টা অবধি জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছিল শ্রীলঙ্কায়। দেশের আর্থিক সঙ্কটের কারণে যে ভয়াবহ সঙ্কট পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তার জেরেই অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে রাজধানী কলম্বো, গল সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত। প্রশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করেছে সাধারণ মানুষ। প্রেসিডেন্টের বাড়ির বাইরে থেকে শুরু করে রাস্তার ধার, সর্বত্রই প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর ইস্তফার দাবিতে পোস্টার দেখা যায়।
এই অস্থির পরিস্থিতিতেই দেশের শান্তি বজায় রাখতে ইস্তফা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষ, এমনটাই জল্পনা শোনা গিয়েছিল। কিন্তু রাতেই প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রে জানিয়ে দেওয়া হয় যে, মাহিন্দ্রা রাজাপক্ষের ইস্তফা দেওয়ার খবর ভুয়ো। এইধরনের কোনও পরিকল্পনা নেই সরকারের।
তবে রাতেই যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী তথা প্রধানমন্ত্রীর বড় ছেলে নামাল রাজাপক্ষ টুইট করে ইস্তফার কথা জানান। তিনি টুইটে লেখেন, “আমি প্রেসিডেন্টের সচিবকে জানিয়েছি যে এই মুহূর্ত থেকেই আমি মন্ত্রিসভার সমস্ত পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছি। আশা করছি এই সিদ্ধান্ত ওনাকে (প্রেসিডেন্ট) ও প্রধানমন্ত্রীকে দেশবাসী ও শ্রীলঙ্কার সরকারের জন্য স্থিতাবস্থা তৈরি করতে সাহায্য করবে। আমি ভোটারদের প্রতি, আমার দলের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকব।”
রবিবার কার্ফুর মাঝেই পেরাডেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়ারা। তাদের থামাতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও জল কামান ব্যবহার করা হয়। অন্যদিকে, বিরোধী নেতারাও কলম্বোয় আয়োজিত একটি পদযাত্রায় যোগ দেন। কিন্তু তাদেরও বিরোধী দলনেতা সাজিথ প্রেমাদাসার বাড়ির সামনেই আটকে দেয় পুলিশ ও সেনাবাহিনী। এখনও অবধি কার্ফু ভাঙার অপরাধের ৬৬৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে শনিবার থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ার উপরে যে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল, তা তুলে নেওয়া হয় খোদ প্রধানমন্ত্রীর ছেলের বিরোধিতার পর।
আরও পড়ুন: Imran Khan: ইমরানের প্রস্তাবকেই মান্যতা, ৯০ দিনের মধ্যেই হবে নির্বাচন, ঘোষণা সরকারের
আরও পড়ুন: Sri Lanka Crisis: মহিন্দা রাজাপাক্ষের ইস্তফা ঘিরে জোর জল্পনা! দাবি খারিজ প্রধানমন্ত্রীর দফতরের