ওয়াশিংটন : করোনা মোকাবিলায় জো বাইডেন (Joe Biden)যে সিদ্ধান্তগুলি নিয়েছেন, তার ভূয়সি প্রশংসায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। আজ বিশ্ব করোনা অতিমারি সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা সাধারণ জনজীবনকে ভীষণভাবে ব্যাহত করেছে। এটি এখনও শেষ হয়নি। বিশ্বের অনেক অংশ এখনও টিকা দিতে বাকি আছে। এ জন্যই প্রেসিডেন্ট বাইডেনের এই উদ্যোগ যথেষ্টই সময়োপযোগী।
মার্কিন প্রশাসনের প্রশংসা করার পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভারতের ভূমিকার কথাও আজকের সম্মেলনে তুলে ধরেন তিনি। বলেন, “আমরা ১৫০ টিরও বেশি দেশকে ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী পাঠিয়েছি। ২ টি দেশীয়ভাবে তৈরি টিকা ভারতে জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন পেয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বিশ্বের প্রথম ডিএনএ ভিত্তিক ভ্যাকসিন। বেশ কয়েকটি ভারতীয় কোম্পানি বিভিন্ন করোনা ভ্যাকসিনের উৎপাদনের লাইসেন্স পেয়েছে।
ভারত সবসময় গোটা মানব সমাজকে একটি পরিবার হিসেবে দেখেছে। ভারতের ওষুধ শিল্প সাশ্রয়ী ডায়াগনস্টিক কিট, ওষুধ, মেডিকেল ডিভাইস এবং পিপিই কিট তৈরি করেছে। এগুলি অনেক উন্নয়নশীল দেশকে সাশ্রয়ী বিকল্পের সন্ধান দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই বছরের শুরুতে, আমরা উৎপাদিত ভ্যাকসিন অন্যান্য ৯৫ টি দেশের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছি। ঠিক একটি পরিবারের মতো। বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলিও ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছিল যখন ভারত দ্বিতীয় তরঙ্গের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল। এর জন্য আপনাদের ধন্যবাদ জানাই।”
তিনি আরও বলেন, “ভারত এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় টিকা অভিযান চালাচ্ছে। সম্প্রতি, আমরা এক দিনে প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ মানুষকে টিকা দিয়েছি। এখনও পর্যন্ত ৮০ বেশি ভ্যাকসিন ডোজ সরবরাহ করেছে। ২০ কোটিরও বেশি ভারতীয় দু’টি ডোজ়ই পেয়ে গিয়েছেন।”
এদিকে অনেক টালবাহানার পর তুমুল বিতর্কের জেরে অবশেষে হার মানল ব্রিট্রেন। ভ্যাকসিন হিসাবে মান্যতা দেওয়া হল কোভিশিল্ড(Covishield)-কে। পরিবর্তন আনা হল ভারতীয়দের ভ্রমণ ও কোয়ারেন্টাইনের নিয়মেও। তবে ব্রিটেন সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, তাদের টিকা নিয়ে সমস্যা না থাকলেও টিকা সার্টিফিকেট (Vaccine Certificate) নিয়ে কিছু সমস্যা থাকায় আপাতত ভারতীয় যাত্রীদের কোয়ারেন্টাইন(Quarantine)-এই থাকতে হবে।
চলতি বছরের শুরু থেকেই ভারতে সেরাম ইন্সটিটিউটের (Serum Institiute of India)-র তৈরি কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের প্রয়োগ শুরু হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফেও এই ভ্যাকসিনকে সুরক্ষিত বলে জানানো হয় এবং প্রয়োেগে অনুমোদন দেওয়া হয়। তবুও ব্রিটেন সহ একাধিক দেশে কোভিশিল্ডকে করোনা ভ্যাকসিন হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছিল না।
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে যৌথ উদ্য়োগেই সেরাম সংস্থা কোভিশিল্ড তৈরি করলেও সেই ভ্যাকসিনকে স্বীকৃতি দিতে নারাজ ছিল ব্রিটেন। ভ্রমণবিধির নির্দেশিকায় জানানো হয়েছিল, কোভিশিল্ড প্রাপকদের টিকা প্রাপ্ত বলে গণ্য করা হবে না। ভারত থেকে আগত সমস্ত যাত্রীদেরই ১০ দিন বাধ্যতামূলকভাবে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।
ভারত থেকে একাধিক পড়ুয়া ব্রিটেনে পড়তে যায়, এছাড়াও কর্মসূত্রে বহু ভারতীয় ব্রিটেনে যান। এই কোয়ারেন্টাইনের নিয়ম জারির পরই বিতর্ক শুরু হয়। গতকালই বিদেশ সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা ব্রিটেন কোভিশিল্ডকে বৈধ করোনা টিকা হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়ার ফলে আমাদের দেশ থেকে ব্রিটেনে যাওয়া যাত্রীরা সমস্যায় পড়ছেন। এই সমস্যার দ্রুত সমাধান করতে হবে। ব্রিটেন দ্রুত সিদ্ধান্ত বদল না করলে ভারতের তরফেও একইরকম ব্যবহার করা হবে।
আরও পড়ুন : Covishield: হুঁশিয়ারিতেই হল কাজ, কোভিশিল্ডকে স্বীকৃতি দিলেও কোয়ারেন্টাইনের জট রেখেই দিল ব্রিটেন