লন্ডন: শীত পড়েছে, অনেকেরই নাক সুড়সুড় করছে। হাঁচি পেলে, বিশেষ করে প্রকশ্যে হাঁচি পেলে অনেকেই মুখ বন্ধ করে এবং আঙুল দিয়ে নাক চেপে হাঁচি চাপার চেষ্টা করেন। এটা খুবই সাধারণ ঘটনা। প্রায়শই আমরা করে থাকি। গাড়ি চালানোর সময় হাঁচি আসায়, একই পদক্ষেপ করেছিলে্ন এক স্কটিশ যুবক। ত্রিশের কোঠায় বয়স। কিন্তু, এটা করতে গিয়েই তাঁর গলায় প্রায় ০.১ ইঞ্চি ব্যাসের ছিদ্র হয়ে গিয়েছিল! ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালের সাম্প্রতিকতম সংস্করণে এই অদ্ভুত ঘটনার কথা লিখেছেন ডান্ডি ইউনিভার্সিটির গবেষকরা।
নিবন্ধ অনুযায়ী, ওই যুহকের হাঁচির চাপ এতটাই বেশি ছিল, যে সেই চাপেই তাঁর শ্বাসনালী ফেটে ওই ছিদ্র তৈরি হয়েছিল। তিনি কথা বলতে, খাবার গিলতে এবং শ্বাস নিতে পারছিলেন ঠিকই। কিন্তু, ব্যথায় ছটফট করছিলেন। শ্বাস নেওয়ার সময় গলা থেকে একটা কর্কশ শব্দ শোনা যাচ্ছিল। তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়েছিল।
কেস রিপোর্ট অনুযায়ী, হাসপাতালের জরুরী বিভাগে তিনি যখন পৌঁছেছিলেন, সেই সময় তাঁর ঘাড়ের দুপাশে ফুলে গিয়েছিল। তিনি ব্যথায় ঘাড় ঘোরাতে পারছিলেন না। চিকিৎসকরা এক্স-রে করে দেখেছিলেন, তাঁর সার্জিক্যাল এমফিসেমা হয়েছে, অর্থাৎ, ত্বকের নীচে গভীরতম টিস্যুতে বাতাস আটকে আছে। আর সিটি স্ক্যানে করে দেখা গিয়েছিল, তাঁর ঘাড়ের তৃতীয় এবং চতুর্থ হাড়ের মধ্যে শ্বাসনালীতে ওই ফুটো তৈরি হয়েছে। সেখান দিয়ে বাতাস দিয়ে তাঁর ফুসফুসের এবং বুকের মধ্যবর্তী ফাঁকা জায়গায় জমা হচ্ছে।
চিকিত্সকরা বুঝেছিলেন, তাঁর অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন নেই। তবে অক্সিজেনের মাত্রা ওঠানামা করতে পারে। তার জন্য তাঁকে হাসপাতালে দুই দিন পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল। তারপর, পেইনকিলার এবং জ্বরের ওষুধ দিয়ে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। তবে, ওই ফুটো এবং তাকে এবং পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে ফুটোটি বুজে গিয়েছিল। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এই ক্ষেত্রে যান্ত্রিকভাবে শ্বাস চলাচলের প্রয়োজন ছিল না। তবে, এই ধরনের রোগীদের ক্ষেত্রে ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টা পর্যবেক্ষণে রাখতেই হয়।
ডান্ডি ইউনিভার্সিটির ডা. রাসাদস নিসিরোভস বলেছেন, “এই ঘটনাকে একটা সতর্কতা হিসেবে দেখা উটিত। হাঁচি আসলে তা কখনও চাপার চেষ্টা করবেন না। প্রত্যেককে বলছি, মুখ বন্ধ রেখে নাকে আঙুল দিয়ে হাঁচি চাপা উচিত না। এর থেকে শ্বাসনালীতে ছিদ্র হয়ে যেতে পারে। কারণ, হাঁচির ফলে এমনিতেই শ্বাসনালীতে চাপ বৃদ্ধি পায়। কিন্তু হাঁচি চাপলে, প্রায় ২০ গুণ বেশি চাপ পড়ে।”