বেলগ্রেড: সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রেডের এক স্কুলে এক গুলিচালনার ঘটনায় অন্তত আট ছাত্র ও এক নিরাপত্তারক্ষীর মৃত্যু হয়েছে। বুধবারের (৩ মে) এই মর্মান্তিক ঘটনায় এক শিক্ষক এবং আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে সেই দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার সকালে, বেলগ্রেডের সেন্ট্রাল ভ্রাকার জেলার ভ্লাদিস্লাভ রিবনিকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। বন্দুকধারী ছিল এক ১৪ বছরের কিশোর, ওই স্কুলেরই সপ্তম শ্রেণির ছাত্র সে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মতে, ওই কিশোর প্রথমে তার এক শিক্ষককে গুলি করেছিল। তারপর, অন্য ছাত্রছাত্রী এবং নিরাপত্তারক্ষীদের উপরও নির্বিচারে গুলি চালায় সে। তাতেই ওই নয়জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পর সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্রকে গ্রেফতার করেছে স্থানীয় পুলিশ। আপাতত ওই স্কুল এবং সংলগ্ন এলাকা ঘিরে রেখেছে নিরাপত্তা বাহিনী।
সেন্ট্রাল ভ্রাকার জেলার মেয়র মিলান নেদেলজকোভিচ জানিয়েছেন, গুলিবিদ্ধ ওই শিক্ষককে গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় এক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকরা তাঁর প্রাণ বাঁচাতে সবরকম চেষ্টা করছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিবৃতি অনুযায়ী, আরও ছয় শিশু আপাতত হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে। সপ্তম শ্রেণির ছাত্রটিকে গ্রেফতার করা হলেও, ঠিক কী কারণে সে গুলি চালিয়েছে, তা এখনও জানা যায়নি। বেলগ্রেড পুলিশ জানিয়েছে, গুলি চালানোর পিছনে তার কী উদ্দেশ্য ছিল, সেই বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
#BreakingNews : Serbian police say a teenager has opened fire in a school in central Belgrade, causing casualties; suspect arrested.#Serbianpolice #Belgrade #FIRING #SCHOOLFIRING #GUNCULTURE @Sanjubolbam pic.twitter.com/YdplWHhXQx
— Shekhar Pujari (@ShekharPujari2) May 3, 2023
আক্রান্ত স্কুলেই পড়ে মিলান মিলোসেভিচের মেয়ে। যে শ্রেণিকক্ষে গুলি চলেছে, সেখানেই ছিল তাঁর মেয়ে। মেয়ের স্কুলে গুলি চলেছে শুনেই ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছিলেন তিনি। সংবাদমাধ্যমকে মিলোসেভিচ জানিয়েছেন, সৌভাগ্যবশতঃ নিরাপদে পালাতে পেরেছে তাঁর মেয়ে। মিলোসেভিচ আরও জানিয়েছেন, কিশোর ছেলেটি প্রথমে ওই শিক্ষককে গুলি করেছিল। তারপরে সে এলোমেলোভাবে গুলি ছোড়া শুরু করেছিল। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, “দেখলাম নিহত নিরাপত্তারক্ষী একটি টেবিলের নিচে পড়ে আছেন। দেখলাম দুটি মেয়ের শার্ট রক্তে মাখামাখি হয়ে আছে। সকলে বলছে, যে ছাত্রটি গুলি চালিয়েছে, সে এমনিতে খুব শান্ত স্বভাবের এবং ভাল ছাত্র ছিল। অতি সম্প্রতি সে এই স্কুলে ভর্তি হয়েছিল।”
Today I am particularly moody and sad. In my Belgrade, a tragedy happened in an elementary school in which 8 children and one adult were killed. The perpetrator is a 14-year-old student of that school. pic.twitter.com/uRdhvDAVdn
— Djole ?? (@onlydjole) May 3, 2023
ভ্লাদিস্লাভ রিবনিকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশেই রয়েছে একটি হাইস্কুল। সেই স্কুলের এক ছাত্রী বলেছেন, গুলির আওয়াজ পাওয়ার পরই দেখেছিলাম, বাচ্চারা চিৎকার করতে করতে স্কুল থেকে ছুটে বেরিয়ে আসছে। কিছু পরে আতঙ্কিত অভিভাবকরা উপস্থিত হন। আমি সব মিলিয়ে তিনটি গুলির শব্দ শুনেছি।”
আমেরিকায় প্রায়শই স্কুলে এবং অন্যান্য জন সমাগমের এলাকায় গুলি চালানোর ঘটনা ঘটলেও, সার্বিয়ায় এই ধরনের ঘটনা অত্যন্ত বিরল। আসলে, পূর্ব ইউরোপের এই দেশে বন্দুক আইন অত্যন্ত কঠোর। তবে, গত শতাব্দীর নয়ের দশকে যুদ্ধ ও অস্থিরতার পর, এই দেশে হাজার হাজার অবৈধ অস্ত্র ঢুকে পড়েছিল। সেই অস্ত্র উদ্ধার করার জন্য সার্বিয়ান কর্তৃপক্ষ বেশ কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে। তবে তাতে যে বিশেষ কাজ হয়নি, এদিনের ঘটনাই তার প্রমাণ।