মস্কো: সরাসরি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে হত্যার চেষ্টা ইউক্রেনের। মস্কো শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত পুতিনের দুর্গ-সম বাসভবনে ড্রোন হামলার চেষ্টা। বুধবার (৩ মে) বিস্ফোরক দাবি করল রুশ সরকার। ক্রেমলিনের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ইউক্রেনের দুটি ড্রোনকে গুলি করে নামিয়েছে রুশ বাহিনী। ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “ক্রেমলিনকে লক্ষ্য করে দুটি মনুষ্যবিহীন ড্রোন উড়ে আসছিল। রাডার ব্যবস্থা ব্যবহার করে সামরিক এবং বিশেষ পরিষেবা বাহিনী সময় মত পদক্ষেপ করে, ডিভাইসগুলিকে নিষ্ক্রিয় করে।” এই হামলাকে রাশিয়া “পরিকল্পিত সন্ত্রাসবাদী হামলা এবং রুশ প্রেসিডেন্টের প্রাণহানির চেষ্টা” বলেই জানিয়েছে। তারা আরও বলেছে, এই হামলার প্রেক্ষিতে তাদের ‘জবাব দেওয়ার অধিকার আছে’। রুশ সংবাদমাধ্যমগুলির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই হামলায় ভ্লাদিমির পুতিন বা অন্য কেউ আহত হননি। কোনও সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতিও হয়নি। এই হামলার পরও রুশ প্রেসিডেন্ট তাঁর নির্ধারিত কর্মসূচি বদলাননি। তবে, সাময়িকভাবে মস্কোর আকাশে কোনও বিমান বা ড্রোনের ওড়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
The press service of the President of the Russian Federation said that Ukrainian drones attacked the Kremlin this night. Russian authorities have introduced a complete ban on the flights of any drones over the city. pic.twitter.com/Ou5AvEbNIF
— NOËL ?? ?? (@NOELreports) May 3, 2023
সোশ্যাল মিডিয়ায় এই হামলার একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। ভিডিয়োটির সত্যতা অবশ্য যাচাই করা যায়নি। তবে সেই ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, ক্রেমলিনের আকাশে একটি অজানা উড়ন্ত বস্তু। ক্রেমলিনের মূল গম্বুজে সেই বস্তুটি আঘাত করার ঠিক আগে, সেটিতে প্রচণ্ড বিস্ফোরণ ঘটে। ধ্বংসাবশেষ নীচে পড়ে যেতে দেখা যায়। ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে জানা গিয়েছে, হামলার সময় পুতিন ক্রেমলিন প্রাসাদের ভিতরে ছিলেন না। সেই সময় মস্কোর বাইরে নভো-ওগারিওভোতে পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচিতে ব্যস্ত ছিলেন তিনি।
প্রসঙ্গত আগামী মঙ্গলবার, ৯ মে রাশিয়ার বিজয় দিবস। ১৯৪৫ সালে নাজি জার্মানির বিরুদ্ধে সোভিয়েত বাহিনীর জয়কে স্মরণ করতে এই বিশেষ দিনটি উদযাপন করা হয়। ওই দিন মস্কোর রেড স্কোয়ারে বিশেষ কুচকাওয়াজ হওয়ার কথা। তার মাত্র কয়েকদিন আগে এই হামলার অভিযোগ উঠল। রুশ সংবাদমাধ্যমের দাবি, এই হামলার পরও বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজ বন্ধ রাখা হবে না। এর আগে ক্রেমলিন জানিয়েছিল, ইউক্রেনের হামলার হুমকির মধ্যে বিজয় দিবসে রেড স্কোয়ারে যাতে নিরাপদে কুচকাওয়াজ হয়, তা নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখছে রুশ কর্তৃপক্ষ।
গত বছর কিয়েভের পক্ষ থেকে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকে হত্যার চেষ্টার দাবি করা হয়েছিল। তারা বলেছিল, ২০২২-এর ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে বেশ কয়েকবার জেলেনস্কির প্রাণহানির চেষ্টা করা হয়েছে। এমনকি, হঠাৎ জেলেনস্কির মৃত্যু হলে কীভাবে পরবর্তী ঘটনাক্রমের মোকাবিলার করা হবে, তার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছিল তারা। কারণ, ক্রমেই জেলেনস্কির প্রাণহানির আশঙ্কা বাড়ছে।