Sheikh Hasina: ‘দেশবাসীর কাছে এর বিচার চাই…’, বাবার অপমানে গর্জে উঠলেন হাসিনা

Aug 13, 2024 | 10:31 PM

Sheikh Hasina: দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর এক সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। এর মধ্যে শুধু একবার মুখ খুলেছিলেন বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরানোর পিছনে মার্কিনি ষড়যন্ত্রের গুরুতর অভিযোগ করেছিলেন। এবার তিনি বিচার চাইলেন দেশবাসীর কাছে।

Sheikh Hasina: দেশবাসীর কাছে এর বিচার চাই..., বাবার অপমানে গর্জে উঠলেন হাসিনা
পুড়ে গিয়েছে তাঁর বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন
Image Credit source: TV9 Bangla

Follow Us

নয়া দিল্লি: দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর এক সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। এর মধ্যে শুধু একবার মুখ খুলেছিলেন বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরানোর পিছনে মার্কিনি ষড়যন্ত্রের গুরুতর অভিযোগ করেছিলেন। এবার তিনি বিচার চাইলেন দেশবাসীর কাছে। মঙ্গলবার (১৩ অগস্ট), এক লিখিত বিবৃতি জারি করেছেন তিনি। বিবৃতিতে, ‘যথাযথ মর্যাদার সাথে ভাব গম্ভীর পরিবেশে’ ১৫ অগস্ট জাতীয় শোকদিবস পালন করার আহ্বান জানয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি অভিযোগ করেছেন, গত জুলাই মাস থেকে আন্দোলনের নামে দেশ জুড়ে নাশকতা চলছে। তাঁর বাবা, তথা বাংলাদেশের জাতির জনক, ‘বঙ্গবন্ধু’ শেখ মুজিবুর রহমান এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য প্রাণ দেওয়া লক্ষ লক্ষ শহিদের প্রতি চরম অবমাননা করেছে আন্দোলনকারীরা।

এদিন, এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট করেন শেখ হাসিনার ছেলে, সজীব ওয়াজিদ জয়। তিনিই মায়ের লিখিত বক্তব্যটি জারি করেছেন। সেই বিবৃতিতে হাসিনা, ১৯৭৫ সালের ১৫ অগস্ট, তাঁর বাবা, মা, তিন ভাই, দুই ভাইয়ের বউ, তাঁর কাকা-সহ বঙ্গবন্ধু ঘনিষ্ঠ আরও অনেককে কীভাবে হত্যা করা করা হয়েছিল, তা মনে করিয়ে দিয়েছেন। ওইদিন শহিদ হওয়া সকলের আত্মার শান্তি কামনা করেছেন। একইসঙ্গে, গত জুলাই থেকে চলা হিংসাত্মক আন্দোলনের শিকার হওয়া ছাত্র, শিক্ষক, পুলিশ, সাংবাদিক, সংস্কৃতি কর্মী, শ্রমজীবী মানুষ, আওয়ামি লিগ ও তার শাখা সংগঠনগুলির নেতা-কর্মী, পথচারী – সকলের প্রতি শোক জ্ঞাপন করেছেন এবং তাঁদের আত্মার শান্তি কামনা করেছেন। তিনি বলেছেন, “স্বজনহারা বেদনা নিয়ে আমার মত যারা বেঁচে আছেন তাদের প্রতি সহমর্মিতা জানাই। আমি এই হত্যাকাণ্ড ও নাশকতার সাথে জড়িতদের যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থার দাবি জানাচ্ছি।”

একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, যে বাড়িটিতে বঙ্গবন্ধু ও অন্যান্যদের হত্যা করা হয়েছিল, ৩২ ধানমন্ডির সেই বাড়িটি তিনি ও তাঁর বোন রেহানা বাংলাদেশের মানুষের জন্য উৎসর্গ করেছিলেন। এই স্মৃতিটুকুই তাঁর ও রেহানার বেঁচে থাকার অবলম্বন ছিল বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। সেই স্মৃতি বুকে চেপেই তাঁরা বাংলাদেশের মানুষের মুকে হাসি ফোটাবার চেষ্টা করেছেন। তাতে, বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। কিন্তু, সেই বাড়িটিও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, ৩২ ধানমন্ডির বাড়িটিকে বঙ্গবন্ধু ভবন নাম দিয়ে, সেখানে বঙ্গবন্ধু জাদুঘর তৈরি করেছিল হাসিনা সরকার। তবে, ২০২৪-এর ৫ অগস্ট, হাসিনার বাংলাদেশ ত্যাগের দিনই সেই বাড়িটি পুড়িয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। এই প্রসঙ্গে হাসিনা লিখেছেন, ” যে স্মৃতিটুকু আমাদের বেঁচে থাকার অবলম্বন ছিল তা পুড়িয়ে ছাই করে দেয়া হয়েছে। চরম অবমাননা করা হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি, যার নেতৃত্বে আমরা স্বাধীন জাতি হিসেবে আত্মমর্যাদা পেয়েছি আত্মপরিচয় পেয়েছি স্বাধীন দেশ পেয়েছি। লাখো শহীদের রক্তের প্রতি অবমাননা করেছে । আমি দেশবাসীর কাছে এর বিচার চাই।”


শেখ হাসিনা নয়া দিল্লি থেকে দেশবাসীকে ১৫ অগস্ট জাতীয় শোক দিবস পালন করতে বললেও, এদিনই বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ওই দিনের সাধারণ ছুটি বাতিল করেছে। সোমবার এই বিষয়ে আওয়ামি লিগ ছাড়া সেই দেশের সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস। সিংহভাগই জাতীয় শোক দিবস পালন না করার পক্ষে মত দেয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে বৈঠকে, বাংলাদেশের ৩৪টি ছাত্র সংগঠনও ১৫ই আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন না করার সিদ্ধান্ত জানায়। এরপরই এদিন, ১৬ জনের উপদেষ্টা পরিষদের এক বৈঠকে জাতীয় শোকদিবস উপলক্ষে ১৫ অগস্টের সাধারণ ছুটি বাতিলের সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়। তবে, আওয়ামি লিগের নেতা-কর্মীরা ওই দিন ৩২ নম্বর ধানমন্ডির বাড়িতে গিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পরিকল্পনা করেছে।

Next Article