সিওল: নিগলেরিয়া ফাওলেরি সংমক্রণে দক্ষিণ কোরিয়ায় মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। ওই ব্যক্তির বয়স ৫০ বছর। তাইল্যান্ড থেকে সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ায় ফিরেছিলেন তিনি। নিগলেরিয়া ফাওলেরিকে ‘ব্রেন ইটিং অ্যামিবা’ও বলা হয়ে থাকে। এই রোগে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটল দক্ষিণ কোরিয়ায। দ্য কোরিয়ান টাইমসের প্রতিবেদনে এই বিষয়টি উল্লেখিত হয়েছে। কোরিয়া ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন এজেন্সি জানিয়েছে, ওই ব্যক্তি চার মাস তাইল্যান্ডে ছিলেন। সেখান থেকে সপ্তাহ দুয়েক আগে ফিরে এসেছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ায়।
কোরিয়ায় ফেরার পর ওই ব্যক্তির মেনিনজাইটিসের লক্ষণ দেখা দিয়েছিল। তাঁর মাথা যন্ত্রণা, জ্বর, বমি, ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি কথা বলার জড়তাও দেখা দিয়েছিল। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরের দিনই তাঁকে জরুরিবিভাগে ভর্তি করা হয়। সেখানে কয়েক দিন থাকার পরই মৃত্যু হয় তাঁর।
এর পর ওই ব্যক্তির মৃত্যুর কারণ ধরা পড়ে জিন পরীক্ষায়। নিগলেরিয়া ফাওলেরি সংক্রমণের জেরেই মৃত্যু হয়েছে ওই ব্যক্তির। কোরিয়ার স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, ওই ব্যক্তির শরীরে একটি জিন আছে। যা ৯৯.৬ শতাংশ মেনিনজাইটিস রোগীর সঙ্গে মিলে যায়।
ব্রেন ইটিং অ্যামিবার সংক্রমণ এই প্রথম বার দেখা গেল দক্ষিণ কোরিয়ায়। যদিও কী ভাবে এই সংক্রমণ ওই ব্যক্তির শরীরে ছড়িয়ে পড়েছিল সে ব্যাপারে কোরিয়া ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন এজেন্সি (কেডিসিএ)-র তরফে এখনও কিছু জানানো হয়নি। তবে দুভাবে এই অ্যামিবা সংক্রমণ হতে পারে বলে জানা যাচ্ছে। ওই অ্যাবিমা রয়েছে এ রকম জলে সাঁতার কাটলে বা সংক্রমিত জলে মুখ ধুলে তা থেকে মানুষের শরীরে ওই অ্যামিবা ঢুকে পড়ার সম্ভাবনা থাকে।
আমেরিকার জাতীয় হেলথ এজেন্সি সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)-র তরফে জানা গিয়েছে, নিগলেরিয়া ফাওলেরি এক ধরনের অ্যামিবা। অ্যামিবা হল এক ধরনের এককোষী প্রাণী। এই ধরনের অ্যামিবা থাকে মাটিতে বা উষ্ণ মিষ্টি জল। যেমন, হ্রদ, নদী বা উষ্ণ প্রস্ববনের জলে এই ধরনের অ্যামিবা থাকে। এই অ্যামিবাকে ব্রেন ইটিং অ্যামিবা বলা হয়ে থাকে। কারণ এই ধরনের অ্যামিবা মস্তিষ্কে সংক্রমণ ঘটায়। সংক্রমিত জল থেকে নাকের মাধ্যমে মস্তিষ্কে পৌঁছে যায় এই অ্যামিবা। জানা যাচ্ছে, আমেরিকায় প্রতি বছর তিন জনের মধ্যে এই সংক্রমণ ঘটে। তবে এই সংক্রমণের পরিণতি হয় মারাত্মক। দক্ষিণ কোরিয়ায় এই প্রথম বার এই সমক্রমণে মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। ১৯৬৫ সালে প্রথম বার এই অ্যামিবা সংক্রমণের বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছিল।