কলোম্বো: ১৯৪৮ সালের পর এই প্রথম চরম আর্থিক সঙ্কটের মুখোমুখি দেশ। বাধ্য হয়ে সরকার একের পর এক এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, যা দেখে গোটা বিশ্বই তাজ্জব বনে যাচ্ছে। কয়েকদিন আগেই কাগজের অভাবে গোটা দেশের পরীক্ষা বাতিল করার কথা ঘোষণা করেছিল স্কুলগুলি। এমনকী শ্রীলঙ্কার (Sri Lanka) প্রধান সংবাদপত্রগুলির মুদ্রিত সংস্করণও কাগজের অভাবে প্রকাশিত না হওয়ার কথাও কদিন আগেই জানা গিয়েছিল। এবার এমন এক সিদ্ধান্ত সামনে এল যাতে দেশের চরম আর্থিক অবস্থা ছবিটা স্পষ্টভাবেই প্রকাশিত হয়েছে। শ্রীলঙ্কার পাবলিক ইউটিলিটি কমিশন (Public Utility Commission) ঘোষণা করেছে এখন থেকে ভারতের প্রতিবেশি দেশে নিয়মিত ১০ ঘণ্টা লোডশেডিং (Power Cut) থাকবে। শ্রীলঙ্কায় চরম অর্থনৈতিক ও বিদ্যুত সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বৈদেশিক লেনদেন বন্ধ হওয়ার কারণে সেদেশের আর্থিক পরিস্থিতির এতটা অধঃপতন হয়েছে।
শ্রীলঙ্কার আর্থিক পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে, সেদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের অভাব দেখা দিয়েছেন। জ্বালানির জোগানে অভাবের কারণে প্রত্যেকদিন প্রায় ১০ হাজার মানুষ পেট্রোল পাম্পের বাইরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। এমনকী শ্রীলঙ্কাতে প্রতিদিন দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। সিলন ইলেকট্রিসিটি বোর্ড একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, “জ্বালানির ঘাটতি ও জেনারেটরের অপ্রতুলতার কারণে দেশে চাহিদার তুলনায় অপর্যাপ্ত বিদ্যুত উৎপাদিত হচ্ছে। ফল চাহিদা পূরণ করা যাচ্ছে। সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” জানা গিয়েছে জ্বালানির ঘাটতি ও জেনারেটরের অভাবের কারণে দেশে বিদ্যুত ঘাটতির পরিমাণ ৭৫০ মেগাওয়াট।
সিলন পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন মঙ্গলবারই জানিয়েছিল বুধবার ও বৃহস্পতিবার দেশের ডিজেলের সঙ্কট থাকবে। সংস্থায় চেয়ারম্যান সুমিত উইজেসিংহে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, “মঙ্গলবার আমাদের ৩৭ হাজার ৫০০ টন ডিজেল আনলোড করার পরিকল্পনা ছিল, কিন্তু সেই কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়নি। তাই জনগণের কাছে আমরা অনুরোধ করেছি ৩০ ও ৩১ তারিখ পেট্রোল পাম্পের বাইরে ভিড় না করার।” উইজেসিংহে জানিয়েছেন, যে পরিমাণ ডিজেল মজুত রয়েছে, তা অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবাতে ব্যবহার করা হবে। শ্রীলঙ্কার এই চরম আর্থিক সঙ্কটের পরিস্থিতিতে পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে ভারত। আগামী দিনে পরিস্থিতি কোন দিকে যায় সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।
আরও পড়ুন TV9 Explained: পাকিস্তানে জটিল রাজনৈতিক অঙ্ক! কেন এই পরিস্থিতি হল ইমরান খানের?