কলম্বো: ধুঁকছে শ্রীলঙ্কা। দেশের অর্থভান্ডারই হোক, বা সাধারণ মানুষের পকেট- দুটিই আপাতত গড়ের মাঠ। সরকারের ভুল সিদ্ধান্তের কারণেই দেশের এই করুণ পরিণতি হয়েছে, এই অভিযোগ নিয়েই প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির বাড়িতে চড়াও হয়েছিল বিক্ষুব্ধ জনতা। রাতারাতি দখল করে নেওয়া হয়েছিল সমুদ্র পাড়ে গোতাবায়া রাজাপক্ষের রাজপ্রাসাদ। সেখানে বিক্ষোভকারীদের খেতে, ঘুমাতে, সুইমিং পুলে স্নান করতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু তলে তলে কি অপকর্মও করেছেন লঙ্কাবাসী? শ্রীলঙ্কা পুলিশের দাবি, বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ ও প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন দখল করার পরই, সেখান থেকে খোয়া গিয়েছে প্রায় এক হাজারেরও বেশি প্রত্নতাত্ত্বিক সামগ্রী। এরমধ্যে বেশ কিছু যেমন পুরনো দামি সামগ্রী রয়েছে, তেমনই পুরাতাত্ত্বিক বস্তুও রয়েছে।
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে আন্দাজ করা হচ্ছে যে এক হাজারেরও বেশি প্রত্নতাত্ত্বিক সামগ্রী উধাও হয়ে গিয়েছে। তবে সঠিক সংখ্যাটা এখনই বলা সম্ভব হচ্ছে না, কারণ শ্রীলঙ্কার প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে রাখা প্রত্নতাত্ত্বিক বস্তু সম্পর্কে হিসাব রাখেনি। ইতিমধ্যেই শ্রীলঙ্কা সরকারের তরফে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে, তারা তদন্ত শুরু করেছে। বিক্ষোভকারী সাধারণ মানুষ ওই দামি সামগ্রীগুলি হাতিয়ে নিয়েছেন নাকি প্রেসিডেন্টই দেশ ছাড়ার আগে সেগুলিকে ‘উধাও’ করে দিয়েছেন, সে সম্পর্কেও জানা যায়নি।
গত ৯ জুলাই থেকে শ্রীলঙ্কার সাধারণ মানুষ বিক্ষোভে পথে নামেন। দখল করা হয় কলম্বোয় অবস্থিত প্রেসিডেন্টের বাসভবন দখল করে নেয়। গত ১৩ জুলাই দেশ ছেড়ে মলদ্বীপে পালিয়ে যান প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। পরে সেখান থেকে সিঙ্গাপুরে পালিয়ে যান তিনি। ইস্তফাপত্র পাঠানোর পরই অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসাবে নিয়োগ করা হয় দেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিঙ্ঘেকে। পরে ২০ জুলাই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হন রনিল বিক্রমসিঙ্ঘে। দুই দিন আগেই তিনি প্রাক্তন মন্ত্রী দীনেশ গুণবর্ধনেকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নিয়োগ করেন তিনি। বিরোধী দলগুলির সঙ্গেও বৈঠকে বসেছেন প্রেসিডেন্ট। মিলিতভাবে দেশ চালানোর জন্য সহযোগিতার অনুরোধও জানিয়েছেন তিনি। যতক্ষণ না বিরোধী দলের তরফে সাড়া মিলছে, ততক্ষণ পুরনো মন্ত্রিসভা নিয়েই দেশ শাসন করবেন, এমনটাই জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিঙ্ঘে।