কয়েক বছরেই শক্তি খুইয়ে ফ্লুতে রূপান্তরিত হবে করোনা! আক্রান্ত হবে শিশুরাই, দাবি গবেষণায়

TV9 Bangla Digital | Edited By: ঈপ্সা চ্যাটার্জী

Aug 13, 2021 | 12:59 PM

গবেষণায় বিভিন্ন সময়ে বিশ্ব জুড়ে যে সংক্রমণগুলি মহামারির আকার ধারণ করেছিল, তার তুলনামূলক আলোচনা করে দেখা গিয়েছে যে প্রতিটি সংক্রমণই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শক্তি হারিয়ে শিশুদের শরীরে বাসা বাঁধা সংক্রমণে পরিণত হয়েছে।

কয়েক বছরেই শক্তি খুইয়ে ফ্লুতে রূপান্তরিত হবে করোনা! আক্রান্ত হবে শিশুরাই, দাবি গবেষণায়
ফাইল চিত্র

Follow Us

নয়া দিল্লি: এখনও দাপট দেখা গেলেও আগামী কয়েক বছরেই রূপ বদলে ফেলে সাধারণ সর্দি কাশির মতোই সংক্রমণে পরিণত হবে করোনা, এমনটাই দাবি গবেষকদের। সম্প্রতি একটি গবেষণায় জানা গিয়েছে, যে সমস্ত শিশুরা কখনও ভাইরাসের সংস্পর্শে আসেনি বা যাদের দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়নি, তারাই মূলত করোনা আক্রান্ত হবে।

পেনসিলভেনিয়া স্টেট বিশ্ববিদ্য়ালয়ের বায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক অটার ব্রনস্ট্রাড জানান, করোনা সংক্রমণের ধারা দেখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে, বয়সের উপর ভিত্তি করেই সংক্রমণ বৃদ্ধি ও মৃত্যুর হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। যদিও গবেষণার ফলাফলে দেখা যাচ্ছে সংক্রমণের ঝুঁকি ধীরে ধীরে শিশুদের উপরই বাড়বে, কারণ প্রাপ্তবয়স্কদের টিকাকরণের মাধ্যমে তাদের দেহে করোনার বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যাবে। এর আগে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের ক্ষেত্রেও প্রথমে দেখা গিয়েছিল তা ভয়াবহ আকার ধারণ করছিল, কিন্তু পরে তা অতি সাধারণ সংক্রমণে পরিণত হয়েছে।

গবেষণায় বিভিন্ন সময়ে বিশ্ব জুড়ে যে সংক্রমণগুলি মহামারির আকার ধারণ করেছিল, তার তুলনামূলক আলোচনা করে দেখা গিয়েছে যে প্রতিটি সংক্রমণই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শক্তি হারিয়ে শিশুদের শরীরে বাসা বাঁধা সংক্রমণে পরিণত হয়েছে। ১৮৮৯ থেকে ১৮৯০ সালে এশিয়াটিক বা রাশিয়ান ফ্লুতে প্রায় ১০ লক্ষেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। সংক্রমিত হয়েছিলেন মূলত ৭০ উর্ধ্ব ব্যক্তিরাই। কিন্তু সময় পরিবর্তনের সঙ্গে তা মৃদু উপসর্গযুক্ত ভাইরাসে পরিণত হয়েছে, যা ৭ থেকে ১২ মাস বয়সী শিশুদেরই বর্তমানে সংক্রমিত করে।

এই একই ধরনের অভিযোজন ইনফ্লুয়েঞ্জা ও অন্যান্য করোনাভাইরাসের রূপেও দেখা গিয়েছে, এমনটাই জানানো হয়েছে সায়েন্স অ্যাডভান্স নামক একটি জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায়। গবেষকরা একটি “রিয়েলিস্টিক এজ স্ট্রাকচার্ড ম্যাথেমেটিক্যাল মডেল” তৈরি করেছেন এই গবেষণার জন্য, তার ফলাফলের উপর ভিত্তি করেই জানানো হয়েছে আগামিদিনে শিশুদের মধ্যেই সংক্রমণের সম্ভাবনা অনেক বেশি হবে।

গবেষকরা ১, ১০ ও ২০ বছরের বয়সসীমার উপরে স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘ সময় ধরে গবেষণা করেছেন। পাশাপাশি জাপান, চিন, স্পেন, কোরিয়া, ইংল্যন্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, ইটালি, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা সহ ১১টি সম্পূর্ণ ভৌগলিক বৈচিত্রের দেশের সংক্রমণের হারের উপরও এই গবেষণা চালিয়েছেন। গবেষণার ফলাফলে দেখা গিয়েছে, প্রতিটি দেশেই জনঘনত্ব ভিন্ন হওয়ায় মডেলের গাণিতিক ফলাফলও ভিন্ন এসেছে।

ওসলো বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকোলজি ও ইভোলিউশনের অধ্যাপক এন স্টেনসেথ বলেন, “বয়সের সঙ্গে সঙ্গে সংক্রমণ ও মৃত্যু হার বৃদ্ধি পাওয়ায় যে দেশগুলিতে প্রবীণ ব্যক্তিদের সংখ্যা বেশি, সেখানেই মৃত্যু হার বেশি হবে। দক্ষিণ আফ্রিকায় যেমন কমবয়সীদের সংখ্যা বেশি, সেই কারণে সেখানে মৃত্যু হারও কম। অন্যদিকে, ইতালিতে বয়স্কদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় তাদের মৃত্যু হারও বেশি। তবে ভৌগলিক বৈচিত্র যাই-ই হোক না কেন, ধীরে ধীরে করোনার বিপদ কম বয়সীদের জন্যই বাড়বে, তা হলফ করে বলা যায়।”  আরও পড়ুন: তিনবারের বেশি দরজা খুললেই গৃহবন্দি হবেন বাসিন্দারা! করোনাভীতিতে ‘অমানবিক’ চিন

Next Article