তিনবারের বেশি দরজা খুললেই গৃহবন্দি হবেন বাসিন্দারা! করোনাভীতিতে ‘অমানবিক’ চিন

ভিডিয়োয় আধিকারিকদের বলতে শোনা যায়, কেউ যেন ঘর থেকে বের না হন। ধরা পড়লেই  তাঁকে বাড়ি ফিরিয়ে আনা হবে এবং দরজা সিল করে দেওয়া হবে।

তিনবারের বেশি দরজা খুললেই গৃহবন্দি হবেন বাসিন্দারা! করোনাভীতিতে 'অমানবিক' চিন
দরজা আটকে দিচ্ছেন আধিকারিকরা।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 13, 2021 | 11:23 AM

তাইপেই: সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে ভাইরাল হাড়হিম করা একাধিক ভিডিয়ো। সরকারি আধিকারিকরা এসে বাড়িতে তালা লাগিয়ে চলে যাচ্ছেন, এদিকে ভিতরে তখনও রয়েছেন বাসিন্দারা। এমনই অমানবিক ঘটনার সাক্ষী হতে হচ্ছে চিনের বাসিন্দাদের। কারণ সেখানে ডেল্টা ভ্য়ারিয়েন্টের দাপটে ফের শুরু হয়েছে করোনা সংক্রমণ। আর সেই সংক্রমণ রুখতেই চরম পদক্ষেপ নিয়েছে চিনা প্রশাসন।

২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে যখন উহান থেকে করোনা সংক্রমণ শুরু হয়েছিল, তখনও একইরকম পদক্ষেপ নিয়েছিল চিনা সরকার। সংক্রমণ রুখতে করোনা আক্রান্তদের বাড়িতে তালা বা দেওয়াল গেঁথে দিয়েছিল প্রশাসন। যদিও সরকারের তরফে এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছিল। তবে নতুন করে সংক্রমণ শুরু হতেই ফের একই পন্থা অবলম্বন করছে চিনা সরকার।

ওয়েইবো, টুইটার ও ইউটিউবে ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, হ্যাজম্যাট স্যুট বা পিপিই কিট পরা সরকারি আধিকারিকরা এসে বাসিন্দাদের দরজার সামনে লোহার বার বসিয়ে দিচ্ছেন। ভাল করে স্ক্রু দিয়ে আটকেও দেওয়া হচ্ছে, যাতে বাসিন্দারা কোনওমতে ঘর থেকে বের হতে না পারেন। ইউটিউবে আপলোড করা একটি ভিডিয়োয় এক চিনা নাগরিককে বলতে শোনা যায় যে, কোনও বাসিন্দা যদি দিনে তিনবারের বেশি দরজা খোলেন, তাহলেই তাদের দরজা এসে সিল করে দেওয়া হচ্ছে। লোহার রড দিয়ে প্রধান প্রবেশ দ্বারই আটকে দেওয়া হচ্ছে।

আরেকটি ভিডিয়োয় আধিকারিকদের বলতে শোনা যায়, কেউ যেন ঘর থেকে বের না হন। ধরা পড়লেই  তাঁকে বাড়ি ফিরিয়ে আনা হবে এবং দরজা সিল করে দেওয়া হবে। রেয়াত করা হবে না কাউকেই। যদি পরিবারের কেউ একজন করোনা আক্রান্ত হন, তবে শুধু গোটা পরিবারই নয়, কমপক্ষে দুই-তিন সপ্তাহের জন্য গোটা বিল্ডিংই সিল করে দেবে প্রশাসন।

গত ৯ অগস্ট চিনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের তরফে জানানো হয়, গত ২০ জানুয়ারি থেকে দেশের ১৭টি প্রদেশে ১৪৩ জন করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। এর মধ্যে ৩৫ জন বিদেশ থেকে এসেছেন এবং ১০৮ জন স্থানীয় বাসিন্দা। জিয়াঙ্গসু প্রদেশ ৫০ জন, হেনান প্রদেশে ৩৭ জন, হুবেইতে ১৫ জন ও হুনান প্রদেশে ৬ জন করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। জিয়াঙ্গসু কমিশন অব হেলথের তরফে জানানো হয়েছে নানজিং শহরে ২ জন ও ইয়াঙ্গজ়োউ শহরে ৪৮ জন করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে।

উহানের প্রশাসনিক আধিকারিক লি তাও সম্প্রতি জানিয়েছিলেন, ওই শহরে ১ কোটি ১০ লক্ষ বাসিন্দার প্রত্যেকের করোনা পরীক্ষা করা হবে। দীর্ঘদিন এই শহরে কোনও ডোমেস্টিক ট্রান্সমিশন অর্থাৎ শহরেরই একজনের থেকে আর একজনের শরীরে করোনা ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু সম্প্রতি, দেখা গিয়েছে ওই শহরেরই বেশ কয়েকজন শ্রমিক আক্রান্ত হয়েছেন করোনায়।

চিনের স্বাস্থ্য দফতর সূত্রেও জানানো হয়েছে, নতুন করে ৭৫ জন আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে, এদের মধ্যে ৫৩ জনই গোষ্ঠী সংক্রমণের শিকার। গত ২০ জুলাই নানজিং শহরের বিমানবন্দরে নয়জন সাফাইকর্মী করোনা আক্রান্ত হন। তাদের মাধ্যমেই এখনও অবধি গোষ্ঠী সংক্রমণ ছড়িয়েছে  ২০টি শহর ও ১২টি অঞ্চলের ২০০-রও বেশি বাসিন্দার মধ্যে। আরও পড়ুন: আছড়ে পড়েছে সংক্রমণের নতুন ঢেউ, অতিরিক্ত সুরক্ষায় বুস্টার ভ্যাকসিনে অনুমোদন দিল এফডিএ