‘রেডিয়ো-টিভিতে শোনা যাবে না মহিলা কণ্ঠস্বর’, তালিবানি রাজে আদৌই থাকবে মহিলাদের অস্তিত্ব?

TV9 Bangla Digital | Edited By: ঈপ্সা চ্যাটার্জী

Aug 29, 2021 | 6:03 PM

অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রস্তুতির মাঝেও তালিবানদের তরফে জানানো হয়েছে, মহিলাদের কাজ করার অনুমতি দেওয়া হবে আইন মেনে, কিন্তু তাদের কাজের অধিকার স্বাস্থ্য় ও শিক্ষাক্ষেত্রের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে।

রেডিয়ো-টিভিতে শোনা যাবে না মহিলা কণ্ঠস্বর, তালিবানি রাজে আদৌই থাকবে মহিলাদের অস্তিত্ব?
চিরতরে পর্দার আড়ালেই চলে যাবেন আফগান মহিলারা? ছবি:PTI

Follow Us

কান্দাহার: টিভি বা রেডিয়োতে আর শোনা যাবে না মহিলা কন্ঠস্বর (Female Voice)। নিষেধাজ্ঞা জারি করা হল গানের (Music) উপরও। তালিবান(Taliban)-র তরফে কান্দাহারে (Kandahar) নতুন ফতেয়াতেই গণমাধ্যম থেকেও মহিলাদের অস্তিত্ব মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হল।

গত ১৫ অগস্ট কাবুল দখল করে তালিবান। তার আগেই কান্দাহার, হেরাতের মতো গুরুত্বপূর্ণ শহর দখল করেছিল তালিবান। আফগান সরকারের পতনের পরই কান্দাহার, হেরাতে দেখা গিয়েছিল সমস্ত দোকান থেকে মহিলাদের ছবি সাদা বা কালো রঙে ঢেকে ফেলা হচ্ছে। জায়গায় জায়গায় তৈরি করা হয়েছে চেক পোস্ট। সেখানেও মহিলাদের যাতায়াতে বাধা দেওয়া হচ্ছে।

১৯৯৬ সালের পর দ্বিতীয়বার আফগানিস্তান দখল করার পরই তালিবানের তরফে জানানো হয়েছিল, আগের তালিবানিদের সঙ্গে তাদের বিস্তর ফারাক রয়েছে। মহিলাদের শিক্ষা ও কাজ করার স্বাধীনতা দেওয়া হবে, তবে শরিয়া আইন মেনে। সবসময় বুরখাও পড়তে হবে না, হিজাব পড়লেই চলবে। যদিও অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে তালিবানের এই প্রতিশ্রুতি বিশ্বাস করতে চাননি।

মঙ্গলবারই সাংবাদিক বৈঠক করে তালিবান মুখপাত্র জাবিদুল্লাহ মুজাহিদ বলেন, “মহিলা সরকারি কর্মচারীরা যাতে কাজে ফিরতে পারেন, তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মহিলাদের সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া অবধি তারা যেন বাড়িতেই থাকেন।” পরে জানা যায়, তিনি দেশের সমস্ত মহিলাকেই বাড়িতে থাকতে বলা হয়েছে।

কারণ হিসাবে তিনি জানান, তাদের বাহিনীর সদস্যরা মহিলাদের সঙ্গে কীভাবে ব্যবহার করতে হয়, তা জানে না। এই বিষয়ে তাদের এখনও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি। যতদিন মহিলাদের জন্য সুষ্ঠ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গঠন না করা হচ্ছে, তরা যেন বাড়িতেই থাকেন। যদিও মহিলাদের আশ্বস্ত করে জাবিদুল্লাহ জানিয়েছেন, “এটা সাময়িক নির্দেশিকা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই ফের বাড়ি থেকে বের হতে পারবেন মহিলারা।”

এ দিকে, বৃহস্পতিবার কাবুল বিমানবন্দরে হামলার পরই শুক্রবার তালিবানি মুখপাত্র সুহেল শাহিন জাবিদুল্লাহ মুজাহিদের কথা উল্লেখ করে টুইটে লেখেন, “জনস্বাস্থ্য মন্ত্রকের অধীনে রাজধানী ও সমস্ত প্রদেশের সমস্ত চিকিৎসক ও মহিলা কর্মীদের কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। ইসলামিক এমিরেটসদের মহিলাদের কাজ শুরু করা নিয়ে কোনও সমস্যা নেই।”

স্বাস্থ্যক্ষেত্রে মহিলারা কাজে যোগ দিতে পারলেও ইতিমধ্যেই আফগানিস্তানের একাধিক চ্যানেল থেকে সংবাদ পাঠিকাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। একাধিক অফিস থেকেও মহিলাদের জানানো হয়েছে, আপাতত তাদের কাজ থেকে বরখাস্ত করা হচ্ছে। পরে অনুমতি মিললে তাদের কাজে ফিরিয়ে নেওয়া হবে। কিন্তু সেই স্বপ্ন যে অধরা থাকার সম্ভাবনাই বেশি, তা কান্দাহারে তালিবানদের নতুন ফতেয়াতেই বোঝা যাচ্ছে।

এ দিকে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রস্তুতির মাঝেও তালিবানদের তরফে জানানো হয়েছে, মহিলাদের কাজ করার অনুমতি দেওয়া হবে আইন মেনে, কিন্তু তাদের কাজের অধিকার স্বাস্থ্য় ও শিক্ষাক্ষেত্রের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। আরও পড়ুন: দেশে ফিরছেন প্রেসিডেন্ট আসরাফ ঘানি! নয়া মন্ত্রিসভায় জায়গাও কি পাবেন তিনি? 

Next Article