কাবুল: আবারও আফগানিস্তানের বুকে চলল গুলি। বিক্ষোভ মিছিল লক্ষ্য করে সেই গুলি চালানো হয়েছে। রাজধানী কাবুলে পাকিস্তান বিরোধী স্লোগান উঠেছিল ওই বিক্ষোভে। আর সেই মিছিলে আতঙ্ক ছড়াতেই গুলি চালায় তালিবান। তালিবান কাবুল দখল করার পর রাজধানী শহরে প্রথমবার দেখা গেল এই ধরনের বিক্ষোভ।
জানা গিয়েছে, বেশ কয়েকজন মহিলা সহ অন্তত ৭০ জন দূতাবাসের সামনে এই ভাবে বিক্ষোভ দেখান মঙ্গলবার। তাদের হাতে ছিল ব্যানার। ইসলামাবাদ তথা আইএসআই-এর বিরুদ্ধে স্লোগান তুলছিল তারা। শূন্যে গুলি চালায় বিক্ষুব্ধদের সরানোর চেষ্টা করে তালিবান। কয়েকদিন আগেই আফগানিস্তানে এসেছিলেন পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর প্রধান। আর তিনি এসে যে হোটেলে ছিলেন, সেই সেরেনা হোটেলের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছিল মিছিল।
ঘটনাস্থলের বেশ কিছু ভিডিয়ো ফুটেজ প্রকাশ্যে এসেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে শতাধিক আফগান পাকিস্তান বিরোধী স্লোগান দিতে দিতে এগিয়ে যাচ্ছে। ‘আজাদি, আজাদি, ‘পাকিস্তানের মৃত্যু’, ‘আইএসআই-এর মৃত্যু’ এই ধরনের স্লোগান শোনা যাচ্ছিল এ দিন কাবুলের রাস্তায়। হিজাব ও নিকাব পরে বহু মহিলাই এ দিন রাস্তায় নামেন। টুইটারে প্রকাশ্যে আসা ভিডিয়োতে এক মহিলাকে বলতে শোনা যাচ্ছে, পঞ্জশীরে কারও প্রবেশ করার অধিকার নেই। তালিবানেরও না, পাকিস্তানেরও নয়।’ উল্লেখ্য, সোমবারই তালিবান দাবি করেছে যে পঞ্জশীর এখন তাদের দখলে।
কয়েকদিন আগেই কাবুলে এসে হাজির হয়েছিলেন আইএসআই চিফ জেনারেল ফইজ হামিদ। সরকার গঠনের প্রাক্কালে তাঁকে নাকি আমন্ত্রণ জানিয়েছে তালিবান নেতৃত্ব। যদিও তিনি জানিয়েছিলেন, আদতে অর্থনীতি সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা হবে। সেই সঙ্গে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে সুরক্ষা সংক্রান্ত বিষয় নিয়েই তালিবানের সঙ্গে কথা হবে তাঁর। তবে এ সব যে নিছকই অজুহাত, তা বুঝতে বাকি ছিল না কারও। সরকার গঠন নিয়ে আলোচনা করতেই তিনি এসেছিলেন। সরকারের মাথায় থাকবে কে? তালিবান নাকি হাক্কানী নেটওয়ার্ক কারা বেশি গুরুত্ব পাবে? এই নিয়েই আলোচনা করেন তিনি।
আফগানিস্তানের এক রাজনীতিক মরিয়ম সোলাইমানখিল একটি টুইটে লিখেছিলেন, ‘আমি যতদূর জানি মোল্লা বরাদরকে যাতে সরকার প্রধান না করা হয় এবং হাক্কানি নেট্ওয়ার্কের নেতাকে যাতে মাথায় বসানো হয় সে জন্যই এসেছে পাকিস্তানের আইএসআই এর ডিজি।’ আর তিনি পাকিস্তানে ফিরে যাওয়ার পর জানা যাচ্ছে, প্রথম থেকে সম্ভাব্য তালিকায় শীর্ষে থাকা মোল্লা বরাদরকে মাথায় রাখা নাও হতে পারে। বেছে নেওয়া হতে পারে তালিবান নেতা মোল্লা হাসান আখুন্দকে। রাষ্ট্রপুঞ্জের সন্ত্রাসবাদীর তালিকায় নাম রয়েছে আখুন্দের। একসময় এই বরাদরকে বন্দি করেছিল পাকিস্তানের আইএসআই। তাই বরাদরকে আফগানিস্তানের মাথায় বসাতে চায় না পাকিস্তান। এ দিকে নতুন সরকার গঠনের অনুষ্ঠানেই আমন্ত্রিত নয় ভারত। তবে আমন্ত্রণ পত্র পেয়েছে চিন, পাকিস্তানের মতো প্রতিবেশী দেশ। আরও পড়ুন: পাকিস্তানের মাটি থেকে নাকি জঙ্গি ‘উধাও’! ব্যাপক সাফল্যের দাবি পাক সেনা প্রধানের