কাবুল: রাষ্ট্রপুঞ্জের (United Nations) এক সিনিয়র আধিকারিক শুক্রবার জানিয়েছেন, খুব দ্রুতই আফগানিস্তানে মেয়েদের স্কুল খুলে যাবে। তালিবান তাঁকে এমনটাই জানিয়েছেন বলে দাবি ওই আধিকারিকের। ইউনিসেফের (UNICEF) ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ওমর অব্দি, রাষ্ট্রপুঞ্জের সদর দফতরের সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, গত সপ্তাহেই তিনি কাবুল গিয়েছিলেন। আফগানিস্তানের (Afghanistan) ৩৪ টি প্রদেশের মধ্যে বলক্, জসজান সহ পাঁচটি প্রদেশে ইতিমধ্যেই মেয়েদের মাধ্যমিক স্তরের স্কুলে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
সাংবাদিকদের অব্দি জানিয়েছে, তালিবান (Taliban) সরকারের শিক্ষা মন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। তিনি তাঁকে জানিয়েছেন, এক থেকে দুমাসের মধ্যে ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে মেয়েদের স্কুলে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে। ” বিগত ২৭ দিন ধরে লক্ষ লক্ষ মেয়েরা শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আমরা তালিবান শাসকদের আবেদন জানিয়েছি, মেয়েদের শিক্ষা লাভের বিষয়টি নিয়ে আর বিলম্ব না করতে। তারা যেন শিক্ষার অধিকার থেকে মেয়েদের বঞ্চিত না করে।” তিনি আরও জানান, তালিবানের সঙ্গে হওয়া প্রত্যেক বৈঠকেই তিনি মেয়েদের শিক্ষালাভ করার সুযোগের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন।
অব্দি বলেন, আমেরিকাতে (America) ৯/১১ র ঘটনা হওয়ার পর আল কায়দা নেতা ওসামা বিন লাদেনকে (Osama bin Laden) খুঁজতে আফগানিস্তানে ঘাঁটি গেড়ে বসে আমেরিকা। ২০০১ সালে, এই সময়ই আগের তালিবান শাসনের অবসান হয়। সেই সময় স্কুল গুলিতে ছাত্রের সংখ্যা ছিল মাত্র ১০ লক্ষ। কিন্তু শেষ ২০ বছরে সংখ্যাটা দশ গুণ বেড়ে ১ কোটিতে পৌঁছেছিল। এই ১ কোটি ছাত্রদের মধ্যেই ৪০ লক্ষই ছিল মহিলা। এমনকি শেষ ২০ বছরে আফগানিস্তানের স্কুলের সংখ্যাও প্রায় তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়ে ৬ হাজার থেকে ১৮ হাজার হয়েছে।
১৯৯৬ থেকে ২০০১ অবধি আগের তালিবানি শাসনের সময় মেয়েদের শিক্ষার অধিকার কেড়ে নিয়েছিল তালিবান। এমনকি মহিলাদের চাকরি করার ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল তালিবান। চলতি বছরের অগস্ট মাসের ১৫ তারিখে কাবুল সিংহাসন দখলের পরেই নাটকীয়ভাবে দীর্ঘ ২০ বছর পর আফগান মাটি থেকে মার্কিন সেনা ও ন্যাটো বাহিনী (NATO forces) প্রত্যাহার করা হয়।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের মতে, আফগানিস্তানের মসনদের তালিবান থাকলেও বর্তমান পরিস্থিতি একটু আলাদা। বিশ্বের বেশিরভাগ শক্তিধর রাষ্ট্রই নব গঠিত তালিবান সরকারকে এখনও স্বীকৃতি দেয়নি। আগের তালিবান শাসনে মহিলাদের অধিকার খর্ব করা যে ইতিহাস তৈরি হয়েছিল, বর্তমানের সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি রুখতে আন্তর্জাতিক মহল ক্রমশ তালিবানের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে। তাই সরকারের স্বীকৃতি আদায়ের সুবিধার্থে মেয়েদের নিয়ে নূন্যতম ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় নেই তালিবানের। এখন মেয়েদের শিক্ষা লাভ নিয়ে আগামী দিনে কোন সিদ্ধান্তে পথে হাঁটবে তালিবান সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।
আরও পড়ুন Alipurduar: ১৬ দিনে পড়ল আন্দোলন! চাকরির স্থায়ীকরণের দাবিতে অনড় করোনা যোদ্ধারা