তবে মেয়র জানান, কাবুল পুরসভায় যেসকল মহিলারা কাজ করতেন, তাদের ভবিষ্যত নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। আপাতত তাদেকর সকলকেই বেতন দেওয়া হবে।
কাবুল: ফের ফতেয়া জারি তালিবানের, শিক্ষার পর কর্মক্ষেত্রেও মহিলাদের অধিকার কেড়ে নিতে শুরু করল তালিবানরা (Taliban)। রবিবার কাবুলের অন্তর্বর্তী মেয়র হামাদুল্লাহ নামোনি (Hamdullah Namony) নির্দেশ দেন, সমস্ত কর্মরত মহিলারাই যেন বাড়িতে থাকেন। একমাত্র যে সমস্ত কাজ পুরুষদের পক্ষে করা সম্ভব নয়, সেই কাজেই যেতে পারবেন মহিলারা।
গত মাসে কাবুলের ক্ষমতা দখলের পরই তালিবান প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তারা আর আগের মতো নেই, অনেক বদলে গিয়েছেন। আফগানিস্তান দখল করার পরই তালিবানের বার্তা ছিল, তারা ইসলামের নিয়ম মেনেই মহিলাদের শিক্ষা ও কাজ করার সুযোগ দেবেন। তবে সেই প্রতিশ্রুতি যে কতটা মিথ্যে, তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন আফগান মহিলারা।
তালিবানের নয়া নীতি অনুযায়ী, পুরুষ ও মহিলাদের একসঙ্গে পঠন পাঠন করতে দেওয়া হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার জন্য নিকাব ও হিজাব পরা বাধ্যতামূলক। নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে মহিলাদের খেলাধুলোয়। টিভি, রেডিয়োও যাতে মহিলাদের দেখা বা কন্ঠস্বর না শোনা যায়, সেই নির্দেশও দিয়েছে নয়া তালিব সরকার। স্কুল খোলার অনুমতি দিলেও সেখানে মেয়েদের যাওয়ার বিষয়ে নীরবই থেকেছে তালিবান।
ক্ষমতা দখলের এক সপ্তাহের মধ্যেই তালিব সরকারের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, সমস্ত মহিলারা যেন বাড়িতেই থাকেন। কারণ মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায় তালিবান। সরকার গঠনের পর কাজের অনুমতি দিলেও তা শিক্ষা ও স্বাস্থ্যক্ষেত্রের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখা হবে বলে জানানো হয়েছিল।
কাবুল বিমানবন্দরে হামলার পরই একদিকে যেমন মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীদের কাজে ফিরতে বলা হয়েছিল, তেমনই অন্তর্বর্তী সরকার ঘোষণার পর পুরুষদের দেখাদেখি মহিলারাও কাজে ফিরতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু রবিবারই ফের তালিবান সরকারের তরফে নির্দেশ দেওয়া হল, মহিলারা যেন কাজে না যান, বাড়িতেই থাকেন। কাবুলের অন্তর্বর্তী মেয়র হামাদুল্লাহ নামোনি বলেন, “কাবুলের সমস্ত কর্মরত মহিলাদের বাড়িতেই থাকতে বলা হচ্ছে। যে কাজগুলি পুরুষদের পক্ষে করা সম্ভব নয়, একমাত্র সেই ক্ষেত্রগুলিতেই কর্মরত মহিলারা কাজে যেতে পারেন।” মহিলাদের কাজের উদাহরণ হিসাবে তিনি মহিলাদের শৌচালয়ের দায়িত্বকে উল্লেখ করেন কাবুলের মেয়র।
তবে মেয়র জানান, কাবুল পুরসভায় যেসকল মহিলারা কাজ করতেন, তাদের ভবিষ্যত নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। আপাতত তাদেকর সকলকেই বেতন দেওয়া হবে।
১৯৯৬ সালেও যখন আফগানিস্তান দখল করেছিল তালিবান, সেই সময়ও শরিয়া আইনের দোহাই দিয়ে মহিলাদের সমস্ত অধিকার কেড়ে নিয়েছিল তালিবানরা। ২০ বছর বাদেও সেই একই পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে বলেই মনে করছেন আফগান মহিলারা।
আরও পড়ুন: Afghanistan crisis: কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ১৮০ ডিগ্রি পাল্টি খেলেন ইমরান
আরও পড়ুন: Taliban: হরিণ দেখেই শিং ধরে টানাটানি! ‘জীবনের স্বাদ’ নিতে চিড়িয়াখানায় হাজির তালিবানিরা