কাতার: আফগানিস্তান (Afghanistan) থেকে মার্কিন সেনার চলে যাওয়ার আর বেশিদিন বাকি নেই। প্রথমে মেয়াদ বাড়ানোর কথা হলেও পরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়ে দিয়েছেন ৩১ অগস্টের মধ্যেই সারতে হবে উদ্ধারকাজ। ইতিমধ্যেই কাবুল বিমানবন্দরের (Kabul Airport) অনেকাংশ তালিবানি দখলে চলে গিয়েছে বলেও সূত্রের খবর। আর মার্কিন সেনা দেশে ফিরে গেলে আফগানিস্তানের মাটিতে পড়ে থাকবে বিপুল পরিমান অস্ত্র। যে সব অত্যাধুনিক অস্ত্রে তারা এত দিন তালিবানকে পিছূু হটতে বাধ্য করেছিল, সেটাই এ বার চলে আসবে তালিবানের হাতে। তালিবান (Taliban) সেই অস্ত্র কী কাজে লাগাবে? সেই প্রশ্নের উত্তরে তালিবান মুখপাত্র সুহেল শাহিন TV9-বাংলাকে জানালেন, অস্ত্র থাকবে দেশ রক্ষার জন্য। কারও ওপর সেই অস্ত্র প্রয়োগ করবেন না তাঁরা।
আদতে তালিবান বললেই ভেসে ওঠে সশস্ত্র কিছু মানুষ আর তাদের রক্তচক্ষু। সন্ত্রস্ত আফগান নাগরিকেরা যে আতঙ্কে দ্রুত দেশ ছাড়ার পরিকল্পনা করছে। যদিও এ বার তালিবান ভাবমূর্তি পাল্টে বারবার দাবি করেছে যে তারা আর কোনও হিংসা-হানাহানির পথে হাঁটতে চায় না। তবু ২০ বছর আগের ইতিহাসের দিকে ফিরে তাকালে তালিবানকে বিশ্বাস করতে ভয় পাচ্ছেন সে দেশের মানুষ। এ দিন TV9-বাংলাকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে সুহেল শাহিন জানান, তাঁদের থেকে আমেরিকার কাছে অনেক বেশি অস্ত্র রয়েছে, তবে তাঁরা সেই অস্ত্র কোনও দেশের ওপর ব্যবহার করতে চান না।
অন্যদিকে, আফগানিস্তানের সন্ত্রাসের আবহের মধ্যেও তৈরি হয়েছে প্রতিরোধ। তালিবান রাজ ঠেকাতে ক্রমেই শক্তিশালী হচ্ছে সে দেশের নর্দার্ন অ্যালায়েন্স। এখনও তাই হিন্দুকুশের কোলে প্জশির প্রদেশ কব্জা করতে পারেনি তালিবান। তীব্র লড়াই চললেও এখনও অধরা পঞ্জশির। যদি এ ভাবে প্রতিরোধ ক্রমশ প্রকট হয়, তাহলে কী ভাবে তৈরি হবে ‘ইসলামিক এমিরেটস অফ আফগানিস্তান?’ সেই প্রশ্নের উত্তরে বেশ আত্মবিশ্বাসী তালিবান মুখপাত্র। তিনি বলেন, ‘ইনশাল্লাহ, খুব বেশি সময় লাগবে না।’ খুব দ্রুত যে গোটা আফগানিস্তান তাদের দখলে চলে আসবে তেমন ইঙ্গিতই দিয়েছেন তিনি। উল্লেখ্য, তালিবানের শাসন আফগানিস্তাবে পুরোপুরি প্রতিষ্ঠিত হলে সেখানে স্বরাষ্ট্র বা এরকমই কোনও গুরুত্বপূর্ণ দফতরের মন্ত্রী হতে পারেন এই সুহেল শাহিন।
কয়েকদিন আগেই একটি টুইটে এই মুখপাত্র জানিয়েছিলেন, ইসলামিক এমিরেটস অব আফগানিস্তানে কারও বিরুদ্ধে কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। শুধু তাই নয়, দরজায় দরজায় হানা দেওয়ার অভিযোগও সম্পূর্ণ উড়িয়ে দেন তিনি। তাঁর দাবি, সবাইকে ক্ষমা করে দিয়েছে তালিবান। শুধু আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ গড়াই তাদের কাছে মূল মন্ত্র। শুরু থেকেই এ বার ভাবমূর্তি গড়ার দিকে মন দিয়েছে তালিবান। এই বার্তাও তার ব্যতিক্রম নয়। সম্প্রতি আরও একটি ভিডিয়ো টুইট করে তিনি দেখিয়েছেন, কী ভাবে ছাত্রীরা স্কুলে ফিরছে। তাঁর দাবি, ‘নতুন’ অর্থাৎ তালিবান শাসিত আফগানিস্তানে এ ভাবেই স্কুলে যাচ্ছে মেয়েরা। আরও পড়ুন: পরপর গুলির শব্দে কেঁপে উঠল কাবুল বিমানবন্দর