পরপর গুলির শব্দে কেঁপে উঠল কাবুল বিমানবন্দর
বৃহস্পতিবার কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে ও ব্য়ারন হোটেলের সামনে একের পর এক বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ১০৩ জন। এরমধ্যে ১৩ জন মার্কিন সেনাও রয়েছে
কাবুল: বিগত দু’দিন আগেই ভয়াবহ বিস্ফোরণে শতাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে কাবুল বিমানবন্দরে (Kabul Airport)। এরপরই পাল্টা হামলায় ড্রোন হামলা চালিয়েছে আমেরিকা। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই ফের শোনা যাচ্ছে গোলাগুলির শব্দ। শনিবার বিকেলে কাবুল বিমানবন্দরে প্রবেশের গেটগুলির লাছেই গোলাগুলির শব্দ শোনা গিয়েছে। কোন পক্ষ গুলি চালাচ্ছে, যদিও তা স্পষ্ট নয়। তবে কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে মার্কিন সেনা প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বেশ কিছু ফুটেজও প্রকাশ্যে এসেছে, যেখানে শোনা যাচ্ছে গুলির শব্দ। শুধু গোলাগুলিই নয়, কাঁদানে গ্যাসও ছোড়া হচ্ছে। সদ্য বিস্ফোরণে রক্তাক্ত হয়েছে কাবুল বিমানবন্দর। সেই ঘা এখনও দগদগে, এখনও রক্তের চিহ্ন চোখে পড়বে বিমানবন্দরের আশেপাশে। আর এরই মধ্যে ফের গুলির শব্দে স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। লোকজন প্রাণ ভয়ে ছুটে চলেছেন। ইতিমধ্যেই, মার্কিন নাগরিকদের সতর্ক করা হয়েছে যাতে তাঁরা কাবুল বিমানবন্দরের দিকে না যান। এ দিকে মার্কিন নাগরিকদের ফেরানোর সময় শেষ হয়ে যাবে ৩১ অগস্টের মধ্যেই।
বিস্ফোরণের ঘটনায় অবশ্য চুপ করে থাকেনি আমেরিকা। বিস্ফোরণে একাধিক মার্কিন সেনার মৃত্যু হয়েছিল। আর এই ঘটনার একদিনের মধ্যেই বদলা নিয়েছে আমেরিকা। কাবুল বিমানবন্দরে হামলার সমালোচনা করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বৃহস্পতিবার রাতেই বলেছিলেন, ‘কোনও কিছু ভোলা হবে না, কাউকে মাফও করা হবে না। বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করে উচিৎ শাস্তি দেওয়া হবে।’ আর এরপরই পাল্টা হামলা হয়েছে। শুক্রবারই ইসলামিক স্টেট-খোরাসান-র ওপর হামলা চালায় মার্কিন ড্রোন। মার্কিন সেন্ট্রাল কম্যান্ডের ক্য়াপ্টেন বিল আরবান জানিয়েছেন, ‘আফগানিস্তানের নানগরহর প্রদেশে ড্রোনের মাধ্যমে এয়ার স্ট্রাইক চালানো হয়েছে। প্রাথমিক সূত্রে জানা গিয়েছে যাদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছিল, তাদের খতম করা গিয়েছে। তবে কোনও সাধারণ মানুষের প্রাণহানি হয়নি।’
বৃহস্পতিবার কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে ও কাবুলের ব্যারন হোটেলের সামনে একের পর এক বিস্ফোরণে প্রাণ হারান কমপক্ষে ১০৩ জন। এর মধ্যে ১৩ জন মার্কিন সেনাও ছিলেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলির দাবি অবশ্য মৃতের সংখ্যা ২০০ পার করেছে। আহত হয়েছে দেড়শো’র বেশি মানুষ। এই হামলার দায় স্বীকার করে নিয়েছে ইসলামিক স্টেট খোরাসান বা আইসিস। বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টা পরে হোয়াইট হাউস থেকে সাংবাদিক বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, যারা এই হামলা চালিয়েছে, তাদের খুঁজে বের করে শাস্তি দেওয়া হবেই। বিস্ফোরণের ঘটনায় ভয় না পেয়ে উদ্ধারকার্য জারি রাখা হবে বলেই জানিয়েছেন তিনি।
কাবুল বিমানবন্দর এখনও রয়েছে মার্কিন সেনার অধীনে। তবে সেই মেয়াদও শেষ হয়ে আসছে। আমেরিকা জানিয়েছে, এক হাজার মার্কিনবাসী আফগানিস্তানে আটকে রয়েছেন। ৩১ অগস্টের আগেই তাদের উদ্ধার করে আনার সম্পূর্ণ চেষ্টা করা হবে বে জানিয়েছে আমেরিকা। আগে সময় বাড়ানের কথা বলা হলেও বৃহস্পতিবার বাইডেনও ৩১ অগস্টের মধ্যে যে কোনও প্রকারে উদ্ধারকার্য শেষ করার নির্দেশ দেন। আরও পড়ুন: কলকাতা এয়ারপোর্টে রানওয়ে ধরে এগোচ্ছিল বিমান, হঠাৎ বিকট শব্দ! আত্মারাম খাঁচাছাড়া যাত্রীদের